ইরানের ৭ বড় বিমানবন্দর

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ইরান বিশ্বের সবচেয়ে পর্বতময় দেশগুলোর একটি। এখানে হিমালয়ের পরেই এশিয়ার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ দামভান্দ অবস্থিত। দেশটির জনগণ জাতিগত ও ভাষাগতভাবে বিচিত্র হলেও এরা প্রায় সবাই মুসলিম। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এ অঞ্চলটি শিয়া মুসলমানদের কেন্দ্র। ইরানে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার আছে। পারস্য উপসাগরের অন্যান্য তেলসমৃদ্ধ দেশের মতো ইরানেও তেল রফতানি ২০ শতকের শুরু থেকে দেশটির অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ইরান জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন বিমানবন্দর।

ইরানের ব্যস্ততম ৭টি বিমানবন্দর নিয়ে আলোচনা করা হলো।

বিজ্ঞাপন

ইমাম খোমেইনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

ইরানে বিদেশী বিমানের প্রধান কেন্দ্র এবং গন্তব্যস্থল ইমাম খোমেনি (রহ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দরটি তেহরান-কোম মহাসড়ক থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং এর দুটি রানওয়ে রয়েছে যথাক্রমে ৪,১৯৮ এবং ৪,২৪৯ মিটার লম্বা এবং ৪৫ মিটার প্রশস্ত। ২০০৪ সালে ইমাম খোমেনি বিমানবন্দর প্রকল্পের প্রথম পর্যায় কার্যকর করা হয়। এই বিমানবন্দরের বেশিরভাগ ফ্লাইটই বিদেশি।

বিজ্ঞাপন

তেহরান মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

ইরানের অন্যতম সেরা বিমানবন্দর মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি ১৯৩৮ সালে নির্মিত বিমানবন্দরটি প্রথমে তেহরানের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে চালু হলেও ইমাম খোমেনি (রহ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে মেহরাবাদ বিমানবন্দরটি অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে, কিছু বিদেশী জিয়ারত প্রার্থীর ফ্লাইট এখনও এই বিমানবন্দর থেকে পরিচালিত হয়। মেহরাবাদ বিমানবন্দরে ৬টি টার্মিনাল এবং ৩টি রানওয়ে রয়েছে যার দৈর্ঘ্য ৪৭৪, ৩,৯৯২ এবং ৪,০২৮ মিটার।


শহীদ হাশেমিনেজাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মাশহাদ

ইরানের আরও একটি অন্যতম সেরা বিমানবন্দর শহীদ হাশেমিনেজাদ বিমানবন্দর। এটি মাশহাদের পানজদেহ খোরদাদ স্কয়ারে অবস্থিত। এই বিমানবন্দরের রানওয়ে ১৯৬৭ সালে চালু হয় এবং প্রতিদিন বিভিন্ন ফ্লাইট পরিচালনা করে। মেহরাবাদের পরে শহীদ হাশেমিনেজাদ ইরানের ব্যস্ততম বিমানবন্দর এবং এর দুটি রানওয়ে রয়েছে, ৩,৯২৫ এবং ৩,৮১১ মিটার লম্বা। এছাড়াও, এই বিমানবন্দরে ২টি টার্মিনাল রয়েছে, একটি অভ্যন্তরীণ বিমানের জন্য এবং অন্যটি আন্তর্জাতিক বিমানের জন্য।


শহীদ দস্তগীব বিমানবন্দর, শিরাজ

ইরানের আরেকটি সেরা বিমানবন্দর হল শিরাজের শহীদ দস্তগীব বিমানবন্দর। শিরাজ বিমানবন্দরটি ১৯২৯ সালে প্রথম নির্মিত হয়েছিল। এই বিমানবন্দরে ৪,২৭২ এবং ৪,৩৩৪ মিটার লম্বা দুটি রানওয়ে রয়েছে এবং ইমাম খোমেনি বিমানবন্দরের পরে এখানে সবচেয়ে উন্নত নেভিগেশন সরঞ্জাম রয়েছে। শহীদ দস্তগীব বিমানবন্দরে ২টি টার্মিনাল রয়েছে,একটি অভ্যন্তরীণ বিমানের জন্য এবং অন্যটি আন্তর্জাতিক বিমানের জন্য।


কিশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

দক্ষিণ ইরানে কিশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের ধারণাটি ১৯৬০ সাল থেকে শুরু হয়। পরবর্তী বছরগুলোতে দ্বীপের উন্নয়নের সাথে সাথে ১৯৭৭ সালে এটি চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত এই বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনাটি আলোচ্যসূচিতে ছিল। কিশ বিমানবন্দরটি দ্বীপের কেন্দ্রীয় অংশে অবস্থিত এবং এর ৩টি টার্মিনাল রয়েছে। অভ্যন্তরীণ, আন্তর্জাতিক এবং সিআইপি। কিশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইরানের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরণের ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। এছাড়াও, এই বিমানবন্দর থেকে পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোতেও ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়।


ইসফাহান শহীদ বেহেশতি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

ইসফাহান বিমানবন্দর ইরানের প্রাচীনতম বিমানবন্দরগুলির মধ্যে একটি যেটি ১৯৮২ সালে জে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি হাইওয়েতে স্থানান্তরিত হয়। এই বিমানবন্দরটি ইসফাহান শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং ১,৩১৫ হেক্টর এলাকা জুড়ে অবস্থিত। শহীদ বেহেস্তি বিমানবন্দরে ৪৩৯৭ মিটার দৈর্ঘ্যের ২টি রানওয়ে রয়েছে। ইসফাহানের শহীদ বেহেস্তি বিমানবন্দর ইরানের অন্যতম সেরা বিমানবন্দর যেখানে অত্যন্ত উন্নত নেভিগেশন সরঞ্জাম রয়েছে। এই বিমানবন্দরে অসংখ্য অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল করে।


তাবরিজ শহীদ মাদানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

১৯৪৭ সালে উত্তর-পশ্চিম ইরানের তাবরিজের আর্তেশ স্ট্রিটের শেষে এয়ার রেডিও নামে একটি অফিস প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ৩ বছর পরে এতে একটি মাটির রানওয়ে যুক্ত করা হয়। ১৯৫৬ সালে এটিকে একটি বিমানবন্দর হিসেবে রূপান্তর করার জন্য নেভিগেশন সরঞ্জাম সেখানে স্থানান্তর করা হয়। অবশেষে, ভবন নির্মাণ এবং আরও সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ১৯৫৫ সালে তাবরিজের শহীদ মাদানি বিমানবন্দরটি চালু করা হয়। সময়ের সাথে সাথে তাবরিজের শহীদ মাদানী বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক রূপ ধারণ করে এবং আজ যাত্রীবাহী বিমানের পাশাপাশি এটি সামরিক বিমানও পরিচালনা করে।


সূত্র: পার্সটুডে।