আবারও লাখ লাখ মানুষের বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে ইসরায়েলের রাজপথ। রাজধানী তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বড় বড় শহরগুলোতে লাখ লাখ মানুষ জিম্মি মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।
‘হোস্টেজ ফ্যামেলিজ ফোরাম’-এর ডাকে শনিবার রাতে পুরো দেশ জুড়ে ইসরায়েলের স্মরণকালের ইতিহাসে বৃহত্তম বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ দাবি করেছে, তারা মোট ৫ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে।
রাজধানী তেল আবিবে ৫ লাখ এবং দেশের অন্যান্য শহরে আরও ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের জনসংখ্যা মোট ৯২ লাখ।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েল এ খবর জানায়।
টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, ইসরায়েলের এই বিক্ষোভই ছিল ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচাইতে বৃহত্তম বিক্ষোভ। শুধু রাজধানী তেল আবিবেই ৫ লাখ মানুষ বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া জেরুজালেম, হাইফা, রিশন লেজিয়ন, বিরশেবা, নেতানিয়ানসহ আরো বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হোস্টেজ ফ্যামেলি ফোরাম’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানী তেল আবিবে ৫ লাখ এবং দেশের অন্যান্য এলাকায় ২ লাখ ৫০ হাজারসহ মোট ৭ লাখ ৪০ হাজার মানুষ তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
খবরে বলা হয়, ৬ জিম্মিকে হত্যা এবং হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে না পারার ব্যর্থতার জন্য এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমনকী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনেও বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
জানা যায়, পুলিশ বিভিন্ন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েও বিক্ষোভকারীদের আটকানো যায়নি।
হোস্টেজ ফ্যামেলিজ ফোরামের পক্ষে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকার শেহ ডিকম্যানের কাজিন গ্যাট বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে চিৎকার করে বলতে থাকেন- ‘যুদ্ধবিরতির একেবারে কাছাকাছি’, ‘জিম্মিরা মুক্তির কাছাকাছি’ জুলাই মাস থেকে শুধু একথাই শুনে আসছি। অথচ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘না’!
এর আগে ১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জিম্মিদের পরিবারের ডাকে রাজধানী তেল আবিবসহ পুরো ইসরায়েল জুড়ে ৫ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেন।
গাজা উপত্যকার রাফাহ-এর একটি টানেল (সুড়ঙ্গ) থেকে ৫ জন ইসরায়েলি এবং ১ জন ইসরায়েলি-মার্কিন জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের পর জিম্মিদের পরিবার এ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। তাদের ডাকে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের ৩ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এছাড়াও দেশব্যাপী আরো ২ লাখ সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন।
গাজার অধিকৃত পশ্চিম তীরের হাম্মামের পাশেই তুলকারেম শরণার্থী শিবির। এলাকাটি ইসরায়েলি বাহিনীর বারবারের হামলায় পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে। সেখানেই জীর্নশীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে অঞ্চলটির সাবেক পুলিশ অফিসার আকরাম নাসারের (৩৬) বাড়ি। হামলার শিকার হয় এই বাড়িটিও। এতে বাড়িটির সামনের অংশ পুরোপুরি ধসে যায়। সামনে কিছু না থাকায় রাস্তা থেকেই বাড়ির অবশিষ্ট অংশে আকরাম ও তার দুই সন্তান পাঁচ বছরের রহিম এবং চার বছরের বারাহকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
তাদের বাড়ির দিকে যাওয়ার রাস্তাটিও ধ্বংসস্তূপ। ভাঙা পাইপ এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষে আবর্জনাযুক্ত এই রাস্তার পাশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা।
দূর থেকেই বাড়িটিতে শুধু অক্ষত অবস্থায় দুটি লাল প্লাস্টিকের চেয়ার, ধূসর রঙয়ের একটি আর্মচেয়ার, কেসিং ছাড়া একটি পুরানো মনিটর এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভিতরের দরজায় একটি কালো ফ্রেমের আয়না দেখা যায়। হামলায় মেঝের টাইলস ভেঙে গেছে, যত্রতত্র ধুলো-ময়লার স্তর দেখা যায়।
তবে অবশিষ্ট দেয়ালের দুটি টাইলস দেখে বাড়িটির পূর্বের অবস্থা কেমন ছিল তা সহজেই অনুমান করা যায়।
তুলকারেমের কোন ঘর কিংবা দোকানের দেয়াল, দরজা অথবা জানালা নেই। সবার মতোই নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন আকরাম। এ যেন প্রকৃতির সঙ্গে মিশে গিয়ে এক অদ্ভুত পরিবেশে বসবাস।
সেখানকার অনেক ভবনই এখন বসবাসের অযোগ্য। আকরামের মতো কিছু পরিবার তাদের বাড়ির ধ্বংসাবশেষেই বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তারা জানেন না পরবর্তী অভিযান তাদের জন্য কী নিয়ে আসবে?
কিছুক্ষণ পর আকরাম ও তার সন্তানদের পানি আনতে দুটি প্লাস্টিকের বালতি নিয়ে বাসা থেকে বের হতে দেখা যায়। ফেরার পর আকরাম কফি বানাতে ছোট্ট রান্নাঘরে যায় তখন পোড়ার গন্ধ বাতাসে ভেসে যায় এবং দেয়ালে জ্বলন্ত দাগ দেখা যায়।
দূর থেকে এসব দেখার পর ইচ্ছে হলো বাসায় প্রবেশের। ঢুকেই কাছ থেকে চোখে পড়ে বাড়িটির ক্ষত-বিক্ষত চেহারা আর তাদের বিমর্ষ চাহনী।
কথা হয় আকরামের সঙ্গে। তিনি জানান, "কফি একটি বিলাসি খাবার হলেও আমরা এখনও বাড়িতে এটি উপভোগ করতে পারি। কফি তৈরি করা সহজ, আমি এখনও এটি আমার ধ্বংসপ্রাপ্ত রান্নাঘরে প্রস্তুত করতে পারি। কিন্তু এর বেশি এখানে রান্না করা সম্ভব না হওয়ায় ভারী খাবার আমার মায়ের বাড়িতে খাই। ওই বাড়ি আমাদের বাড়ির বিপরীত গলিতে।"
তিন বছর আগে আকরাম ও তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে সন্তানদের দেখাশোনা তিনিই করছেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত এই বাড়িটি এখন আর তিনি ঠিক করতে চেষ্টা করেন না। কারণ তিনি জানেন খুব শিগগিরই আবার একটি অভিযানে তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, "দখলদার বাহিনী একটি জিনিসও ভালো রাখেনি। এমনকি রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় আইটেমগুলোও ধ্বংস করেছে। আমি এখন আর ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার কিংবা ভাঙা দেয়াল ঠিক করার চেষ্টা করি না। কারণ আমি জানি খুব শিগগিরই আরেকটি অভিযানে বাড়িটি আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।"
আকরাম যখন কথা বলছিল তখন তার ছেলে বড়াহ খেলার জন্য জামাকাপড় ও ধ্বংসপ্রাপ্ত অন্যান্য জিনিসপত্রের স্তূপের মধ্যে কিছু খুঁজছে।
কিছুক্ষণ পর, সে একটি আনন্দিত চিৎকার দেয় এবং বলে আমি খেলার জন্য একটি খেলনা খুঁজে পেয়েছি।
আকরাম বলেন, “রহিম এবং বড়াহ তাদের বেশিরভাগ সময় খেলায় কাটাতেন। কিন্তু তাদের খেলা এখন বদলে গেছে। তারা তাদের বেশিরভাগ খেলনা এবং জিনিসপত্র হারিয়েছে। তাদের কাছে এখন আর রঙিন পেন্সিল বা আঁকার কোনো খাতা নেই।”
পাশেই দেয়ালে ঝুলানো খাঁচায় দুটি পাখি কিচিরমিচির শব্দ করছে। সেই দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন "তাদের কাছে এই পাখি দুটিই শুধু আছে। এছাড়া সবকিছুই হারিয়েছে তারা। এই পাখি দুটোই সবকিছু ধ্বংসের সাক্ষী।"
'আমাদের বাবাকে যেতে দাও!'
আকরামের বাড়িই শুধু ধ্বংস করেনি তারা। তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং তার ওপর চালানো হয়েছে বর্বর নির্যাতন। সেই লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে আকরাম বলেন-
"মার্চ মাসে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের পর থেকে বারবার হামলার কারণে এই ধ্বংসলীলা হয়েছে। সেদিন ইসরায়েলি সেনারা ক্যাম্পের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছিল, সেই শব্দ কানে লাগছিল। কয়েকদিন আগে নুর শামস ক্যাম্পের মতো সবাইকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ভয়ে সন্তানদের নিয়ে মায়ের বাড়িতে লুকিয়ে পড়ি। কিন্তু সেখানেও শেষ রক্ষা হয়নি। হঠাৎ মায়ের বাড়ির দরজা উড়িয়ে দেওয়া হয় এবং সৈন্যরা ঢুকে পড়ে। তারা সবকিছু ভাঙতে শুরু করে। আমাকে বন্দুক দিয়ে আঘাত করে, তারপর আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।"
তার এই ঘটনা জীবনের সবচেয়ে কঠিন অংশ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ওই অবস্থায় আমাকে দেখার পর বাচ্চারা আমাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করছিল আর বলছিল 'আমাদের বাবাকে যেতে দাও!'। কিন্তু সৈন্যরা তাদের চিৎকার উপেক্ষা করে আমাকে নিয়ে যায়। এ দৃশ্য দেখে তারা আমার কাছে ছুটে আসতে চাইছিল কিন্তু তাদের দাদী তাদেরকে ধরে রাখেন।”
'পরের দিন পর্যন্ত আমি নিকটবর্তী মাঠে স্থাপিত একটি মেক-শিফ্ট ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক ছিলাম। কিন্তু মুক্তির পর আমি আর আমার বাসায় ফিরে যায়নি। কারণ তখন সৈন্যরা তুলকারেম ক্যাম্প ঘেরাও করে রেখেছিল এবং কাউকে ঢুকতে দিচ্ছিল না।'
আকরাম বলেন, "এই অভিযানগুলো তার বাড়ির ধ্বংসের চেয়েও সন্তানদের জীবনে বেশি প্রভাব ফেলেছিল। পাঁচ মিনিট দূরে সুয়ালমা পাড়ায় পরিবারের কাছে থাকেন তার স্ত্রী। কিন্তু শিশুদের জন্য তাদের মায়ের সাথে দেখা করাও কঠিন। কারণ ওই বাড়িতেও সৈন্যরা হামলা চালিয়েছে। তাই সেখানে থাকাও তাদের পক্ষে নিরাপদ নয়।"
এই বাড়িতেই অবশিষ্ট জায়গার মধ্যেই তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করার চেষ্টা করছেন। যখন তারা বাড়ির একপাশ থেকে অন্যপাশে যায় তখন দেয়ালগুলোর ফাঁক দিয়ে প্রতিবেশীদের দেখা যায় এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়।
বাকিটা জীবন এই বাড়িতে থেকেই পার করবেন বলে জানান আকরাম।
"আমাদের জীবন এখন আর স্বাভাবিক নেই। আজকাল বাড়িতে ঘুমানো, রাস্তায় ঘুমানোর থেকে খুব একটা আলাদা নয়। কারণ বাড়ির মূল অংশ ভেঙে পড়েছে এবং জানালাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। যদি সেনাবাহিনী ফিরে আসে এবং আবার ধ্বংস করে বা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দেয় তাও আমরা আমাদের বাড়িতেই থাকব। যদিও আমাদের এখন অর্ধেক জীবনের মতো অর্ধেক ঘরে থাকতে হয়। পুরো বাড়ি ভেঙে গেলেও আমরা এখানেই থাকব।"- কথাগুলো বলছিলেন হামলার প্রত্যক্ষদর্শী আকরাম নাসার।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের হামলায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত ৯৫ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল ইরানে যে ব্যাপক হামলা ও গুপ্ত হামলার পরিকল্পনা করেছিল, সে অবস্থান থেকে হয়ত সরে এসেছে। তারা সম্ভবত ইরানের সামরিক ও তেলস্থাপনার ওপর হামলা করবে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল ইরানে ব্যাপক আকারে ও গুপ্ত হামলার পরিকল্পনা করেছিল, সে অবস্থান থেকে তারা সরে এসেছে। এখন তারা ইরানের তেল উৎপাদন স্থাপনা ও সামরিক ঘাঁটির ওপর হামলা করতে পারে।
এদিকে, জানা গেছে, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের বছর পূর্তিতে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর হামলা-পাল্টা হামলা আরো তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা এটাও জানিয়েছেন যে, কবে, কখন এবং কীভাবে ইরানে হামলা করবে, সে বিষয়ে এখনো তাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেনি ইসরায়েল।
এনবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন এবং ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, আসন্ন ইয়ম কিপ্পুর ছুটির সময় ইরানে চালাতে পারে ইসরায়েল।
রোববার হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে জানায়, দক্ষিণ লেবাননের রামিয়া গ্রামে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননে ‘সন্ত্রাসীদের স্থাপনা’ লক্ষ করে তারা তাদের সামরিক হামলা অব্যাহত রেখেছে।
সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর ইসরায়েল অভিমুখে রকেট হামলা আরো জোরদার করেছে হিজবুল্লাহ।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিনাস গেরাইসে একটি অগ্নিনির্বাপক উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। খবর সিনহুয়া।
শনিবার (১৩ অক্টোবর) ফায়ার বিভাগের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট হেনরিক বার্সেলোস জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেল থেকে নিখোঁজ উড়োজাহাজটি শনিবার সকালে ওরো প্রেটো শহরের কাছে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চারজন দমকলকর্মী, একজন নার্স এবং একজন চিকিৎসক ছিলেন। তাদের সবাইকে মৃত উদ্ধার করা হয়।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা রাখার সময় বার বার বাধার মুখোমুখি পড়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
প্রথমবার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফদের কাছ থেকে প্রতিবাদের মুখে পড়েন পেজেশকিয়ান। প্রতিবাদের মুখে পড়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রতিবাদ হতে থাকলে তিনি আর বক্তব্য রাখবেন না।
ইরানে নারী অধিকার বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হলে তাদের বহিষ্কারাদেশ বাতিল করবেন বলে নির্বাচনি ক্যাম্পগুলোতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন পেজেশকিয়ান।
শনিবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় এ বিষয়টি এড়িয়ে গেলে বার বার বাধার মুখে পড়েন তিনি।
রোববার (১৩ অক্টোবর) ইরানভিত্তিক নিউজপোর্টাল ইরান ইন্টারন্যাশনাল এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, শনিবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
কিছুক্ষণ বক্তব্য রাখার পর এক ছাত্র পেজেশকিয়ানের বক্তব্য প্রদানে বাধা প্রদান করেন এবং বলতে থাকেন, কেন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃতদের বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন! এ সময় প্রেসিডেন্ট তাকে থামতে বলেন এবং বলেন, এ ভাবে চলতে থাকলে তিনি আর বক্তব্য রাখবেন না।
এর পর বক্তব্য রাখা শুরু করার পর আরেক শিক্ষার্থী তাকে বাধা দিলে পেজেশকিয়ান মঞ্চ থেকে নেমে এসে শিক্ষার্থীকে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে বলেন।
এসময় কট্টর ডানপন্থী শিক্ষার্থীটি আগামী ৭ ডিসেম্বর তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপ্লবী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার পেজেশকিয়ানকে আমন্ত্রণ জানান।
এরপর পেজেশকিয়ান মঞ্চে উঠে তার বক্তব্য রাখতে শুরু করলে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফরা তাকে বাধা দেন। এতে করে সরকারি লোকজন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় পেজেশকিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফদের সমালোচনা করে বলেন, আপনারা নিয়ম ভঙ্গ করতে পারেন না। আমরা এখনো নিয়ম মেনে চলার বিষয়টি বুঝে উঠতে সক্ষম হইনি।
এরপর তিনি বলেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফদের বলার কিছু থাকে, তাহলে তারা একটি সভা করুক। তারপর আমরা একসঙ্গে কাজ করবো।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে নারীদের জীবনযাপন, কথা বলার অধিকাররের দাবিতে ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চরম অসন্তোষ শুরু হয়। এমনকী ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বিরুদ্ধেও প্রতিবাদে সরব হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি, এসব প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের সরকার বহিষ্কার করা শুরু করলে পেজেশকিয়ান এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছিলেন।
কিন্তু শনিবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখার সময় এ বিষয়ে তিনি নীরব থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা বেশ গুরুত্বের দাবি রাখে।