ভারতের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে গুজরাটের ফর্মুলা প্রয়োগ করা গেল না রাজস্থানে। বিজেপির প্রার্থী তালিকা দেখে বিশ্লেষকদের সেটাই মনে হয়েছে।
সেখানে দুটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ২০০টির মধ্যে ১৭৪জন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, গুজরাটে বিজেপি একই জনকে দ্বিতীয়বার প্রার্থী করতে চায়নি। কিন্তু, রাজস্থানে ওই ফর্মুলা প্রয়োগ করা গেল না।
বিজ্ঞাপন
কারণ, রাজস্থানে বসুন্ধরা রাজের নেতৃত্বে এটা নিয়ে বিদ্রোহ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণে আর কোনও ঝুঁকি নেয়নি বিজেপি। দেখা যাচ্ছে, ১৭৪জন প্রার্থীর মধ্যে বেশিরভাগই পুরনো মুখ।
মিন্টের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গেছে, এবার বসুন্ধরা রাজেকে রীতিমতো তোষামোদ করে চলছে গেরুয়া শিবির। ওই শিবিরের কেউ যাতে চটে না যান সেজন্য সবরকম উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। সেকারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে বসুন্ধরা রাজের শিবির থেকে লোকজনকে প্রার্থী হিসাবে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, অনেকেই হয়তো ভাবছিলেন রাজস্থানের ক্ষেত্রেও গুজরাটের রাস্তাতেই হাঁটবে বিজেপিও। কিন্তু সেটা হয়নি। রাজনৈতিক মহলের মতে, আসলে এটা হলে দলের ভেতরে বিদ্রোহ তৈরি হতো।
সেই কারণেই এবার অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলেছে গেরুয়া শিবির। কারণ শুধু নতুন মুখ দিয়ে প্রার্থী তালিকা তৈরি হলে পুরানো পোড় খাওয়া নেতারা বিদ্রোহ করতে পারতেন। সেটা ভোটের আগে বিজেপির কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াত।
আসলে রাজস্থানে এবারও বসুন্ধরা রাজের উপর ভরসা করছে বিজেপি। কারণ, বিজেপির নির্বাচনী তরীকে পার করতে বসুন্ধরাই বিজেপির কাছে বড় ভরসা। সেই কারণে তাকে ক্ষেপিয়ে পরিস্থিতি বিগড়াতে চান না কেউই।
সূত্রের খবর, এই তালিকা তৈরির আগে বিএল সন্তোষ, অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডা নিজেদের মধ্যে বৈঠকও করেছিলেন। দলের র্তণমূলের প্রতিক্রিয়াও আমলে নিয়েছিলেন তারা। তারপরই ওই তালিকা তৈরি করা হয়।
উত্তর ইসরায়েলে একটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো ড্রোন হামলায় ৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত ও ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। লেবাননের ইরান–সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এ ড্রোন হামলা চালায়।
রোববার (১৩ অক্টোবর) রাতে ব্রিটিস সংবাদ মাধ্যম বিবিসি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, হাইফার দক্ষিণে বেনইয়ামিনা এলাকায় ইসরায়েলি সেনা ঘাঁটিতে এ হামলা চালানো হয়। আহতদের মধ্যে ৭ সেনার অবস্থা গুরুতর। এদিকে এ হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে হিজবুল্লাহ।
বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, তেল আবিব ও হাইফার মাঝামাঝি এলাকায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) গোলানি ব্রিগেডের একটি প্রশিক্ষণ শিবির লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ লেবানন ও বৈরুতে ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হয়েছে।
দেশটির অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বলছে, হামলায় ৬১ জন আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা বেশি গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যমের প্রচার করা ফুটেজে দেখা গেছে, আহতদের হেলিকপ্টারসহ জরুরি যানবাহনে সাহায্য করা হচ্ছে।
আহতদের মধ্যে অনেককে নিকটবর্তী হাদেরার হিল্লেল ইয়াফে মেডিকেল সেন্টারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে - অন্যদের তেল হাশোমার, হাইফা, আফুলা এবং নেতানিয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের হামলায় রোববার দখলদার ইসরায়েলের ২৫ সেনা আহত হয়েছেন। এসব সেনা উত্তর লেবাননে স্থল হামলা চালাতে গিয়েছিল। আহত ২৫ জনের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কান নিউজ।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর লেবাননে স্থল হামলা শুরুর ঘোষণা দেয় আইডিএফ। এর আগে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অসংখ্য ট্যাংক ও সেনা নিয়ে আসে তারা। তবে লেবাননে স্থল হামলায় খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনের গাজার মতো সহজে ঢুকে পড়বে এমনটা ভাবলেও লেবাননে পারেনি তারা।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার করতে জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
রোববার (১৩ অক্টোবর) এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন তিনি। খবর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের উদ্দেশে হিব্রু ভাষায় দেওয়া ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, হিজবুল্লাহর শক্তিশালী ঘাঁটি ও সংঘাতময় এলাকা থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহারের সময় হয়েছে।
নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বারবার এটি বলে আসছে। কিন্তু একাধিকবার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসীরা যাতে করে শান্তিরক্ষীদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে সেজন্য এমনটি করা হচ্ছে।
ওই বক্তব্যে ইংরেজিতে নেতানিয়াহু বলেন, মহাসচিব, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের ক্ষতিকর অবস্থা থেকে সরিয়ে নেন। এটি এখনই করতে হবে, অবিলম্বে।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা জানিয়েছে, সম্প্রতি ইসরায়েলের সেনাবাহিনী তাদের একাধিক ঘাঁটি, এমনকি নাকুরাতে সদর দফতরে হামলা করেছে। এতে কয়েকজন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে বন্দুক হামলায় আরও একজন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।
নেতানিয়াহু আরও বলেছেন, শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার না করার আপনার (মহাসচিব) সিদ্ধান্তের ফলে তারা হিজবুল্লাহর হাতে জিম্মি হয়ে পড়ছে। এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে তাদের ও আমাদের সেনাদের জীবন রক্ষা করুন।
শান্তিরক্ষীদের আহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে নেতানিয়াহু বলেন, এমন কিছু যাতে না ঘটে সেজন্য ইসরায়েল চেষ্টা করছে। কিন্তু সহজ ও একমাত্র উপায় হলো তাদেরকে বিপজ্জনক এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া।
গাজার অধিকৃত পশ্চিম তীরের হাম্মামের পাশেই তুলকারেম শরণার্থী শিবির। এলাকাটি ইসরায়েলি বাহিনীর বারবারের হামলায় পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে। সেখানেই জীর্নশীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে অঞ্চলটির সাবেক পুলিশ অফিসার আকরাম নাসারের (৩৬) বাড়ি। হামলার শিকার হয় এই বাড়িটিও। এতে বাড়িটির সামনের অংশ পুরোপুরি ধসে যায়। সামনে কিছু না থাকায় রাস্তা থেকেই বাড়ির অবশিষ্ট অংশে আকরাম ও তার দুই সন্তান পাঁচ বছরের রহিম এবং চার বছরের বারাহকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
তাদের বাড়ির দিকে যাওয়ার রাস্তাটিও ধ্বংসস্তূপ। ভাঙা পাইপ এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষে আবর্জনাযুক্ত এই রাস্তার পাশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা।
দূর থেকেই বাড়িটিতে শুধু অক্ষত অবস্থায় দুটি লাল প্লাস্টিকের চেয়ার, ধূসর রঙয়ের একটি আর্মচেয়ার, কেসিং ছাড়া একটি পুরানো মনিটর এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভিতরের দরজায় একটি কালো ফ্রেমের আয়না দেখা যায়। হামলায় মেঝের টাইলস ভেঙে গেছে, যত্রতত্র ধুলো-ময়লার স্তর দেখা যায়।
তবে অবশিষ্ট দেয়ালের দুটি টাইলস দেখে বাড়িটির পূর্বের অবস্থা কেমন ছিল তা সহজেই অনুমান করা যায়।
তুলকারেমের কোন ঘর কিংবা দোকানের দেয়াল, দরজা অথবা জানালা নেই। সবার মতোই নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন আকরাম। এ যেন প্রকৃতির সঙ্গে মিশে গিয়ে এক অদ্ভুত পরিবেশে বসবাস।
সেখানকার অনেক ভবনই এখন বসবাসের অযোগ্য। আকরামের মতো কিছু পরিবার তাদের বাড়ির ধ্বংসাবশেষেই বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তারা জানেন না পরবর্তী অভিযান তাদের জন্য কী নিয়ে আসবে?
কিছুক্ষণ পর আকরাম ও তার সন্তানদের পানি আনতে দুটি প্লাস্টিকের বালতি নিয়ে বাসা থেকে বের হতে দেখা যায়। ফেরার পর আকরাম কফি বানাতে ছোট্ট রান্নাঘরে যায় তখন পোড়ার গন্ধ বাতাসে ভেসে যায় এবং দেয়ালে জ্বলন্ত দাগ দেখা যায়।
দূর থেকে এসব দেখার পর ইচ্ছে হলো বাসায় প্রবেশের। ঢুকেই কাছ থেকে চোখে পড়ে বাড়িটির ক্ষত-বিক্ষত চেহারা আর তাদের বিমর্ষ চাহনী।
কথা হয় আকরামের সঙ্গে। তিনি জানান, "কফি একটি বিলাসি খাবার হলেও আমরা এখনও বাড়িতে এটি উপভোগ করতে পারি। কফি তৈরি করা সহজ, আমি এখনও এটি আমার ধ্বংসপ্রাপ্ত রান্নাঘরে প্রস্তুত করতে পারি। কিন্তু এর বেশি এখানে রান্না করা সম্ভব না হওয়ায় ভারী খাবার আমার মায়ের বাড়িতে খাই। ওই বাড়ি আমাদের বাড়ির বিপরীত গলিতে।"
তিন বছর আগে আকরাম ও তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে সন্তানদের দেখাশোনা তিনিই করছেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত এই বাড়িটি এখন আর তিনি ঠিক করতে চেষ্টা করেন না। কারণ তিনি জানেন খুব শিগগিরই আবার একটি অভিযানে তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, "দখলদার বাহিনী একটি জিনিসও ভালো রাখেনি। এমনকি রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় আইটেমগুলোও ধ্বংস করেছে। আমি এখন আর ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার কিংবা ভাঙা দেয়াল ঠিক করার চেষ্টা করি না। কারণ আমি জানি খুব শিগগিরই আরেকটি অভিযানে বাড়িটি আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।"
আকরাম যখন কথা বলছিল তখন তার ছেলে বড়াহ খেলার জন্য জামাকাপড় ও ধ্বংসপ্রাপ্ত অন্যান্য জিনিসপত্রের স্তূপের মধ্যে কিছু খুঁজছে।
কিছুক্ষণ পর, সে একটি আনন্দিত চিৎকার দেয় এবং বলে আমি খেলার জন্য একটি খেলনা খুঁজে পেয়েছি।
আকরাম বলেন, “রহিম এবং বড়াহ তাদের বেশিরভাগ সময় খেলায় কাটাতেন। কিন্তু তাদের খেলা এখন বদলে গেছে। তারা তাদের বেশিরভাগ খেলনা এবং জিনিসপত্র হারিয়েছে। তাদের কাছে এখন আর রঙিন পেন্সিল বা আঁকার কোনো খাতা নেই।”
পাশেই দেয়ালে ঝুলানো খাঁচায় দুটি পাখি কিচিরমিচির শব্দ করছে। সেই দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন "তাদের কাছে এই পাখি দুটিই শুধু আছে। এছাড়া সবকিছুই হারিয়েছে তারা। এই পাখি দুটোই সবকিছু ধ্বংসের সাক্ষী।"
'আমাদের বাবাকে যেতে দাও!'
আকরামের বাড়িই শুধু ধ্বংস করেনি তারা। তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং তার ওপর চালানো হয়েছে বর্বর নির্যাতন। সেই লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে আকরাম বলেন-
"মার্চ মাসে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের পর থেকে বারবার হামলার কারণে এই ধ্বংসলীলা হয়েছে। সেদিন ইসরায়েলি সেনারা ক্যাম্পের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছিল, সেই শব্দ কানে লাগছিল। কয়েকদিন আগে নুর শামস ক্যাম্পের মতো সবাইকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ভয়ে সন্তানদের নিয়ে মায়ের বাড়িতে লুকিয়ে পড়ি। কিন্তু সেখানেও শেষ রক্ষা হয়নি। হঠাৎ মায়ের বাড়ির দরজা উড়িয়ে দেওয়া হয় এবং সৈন্যরা ঢুকে পড়ে। তারা সবকিছু ভাঙতে শুরু করে। আমাকে বন্দুক দিয়ে আঘাত করে, তারপর আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।"
তার এই ঘটনা জীবনের সবচেয়ে কঠিন অংশ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ওই অবস্থায় আমাকে দেখার পর বাচ্চারা আমাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করছিল আর বলছিল 'আমাদের বাবাকে যেতে দাও!'। কিন্তু সৈন্যরা তাদের চিৎকার উপেক্ষা করে আমাকে নিয়ে যায়। এ দৃশ্য দেখে তারা আমার কাছে ছুটে আসতে চাইছিল কিন্তু তাদের দাদী তাদেরকে ধরে রাখেন।”
'পরের দিন পর্যন্ত আমি নিকটবর্তী মাঠে স্থাপিত একটি মেক-শিফ্ট ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক ছিলাম। কিন্তু মুক্তির পর আমি আর আমার বাসায় ফিরে যায়নি। কারণ তখন সৈন্যরা তুলকারেম ক্যাম্প ঘেরাও করে রেখেছিল এবং কাউকে ঢুকতে দিচ্ছিল না।'
আকরাম বলেন, "এই অভিযানগুলো তার বাড়ির ধ্বংসের চেয়েও সন্তানদের জীবনে বেশি প্রভাব ফেলেছিল। পাঁচ মিনিট দূরে সুয়ালমা পাড়ায় পরিবারের কাছে থাকেন তার স্ত্রী। কিন্তু শিশুদের জন্য তাদের মায়ের সাথে দেখা করাও কঠিন। কারণ ওই বাড়িতেও সৈন্যরা হামলা চালিয়েছে। তাই সেখানে থাকাও তাদের পক্ষে নিরাপদ নয়।"
এই বাড়িতেই অবশিষ্ট জায়গার মধ্যেই তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করার চেষ্টা করছেন। যখন তারা বাড়ির একপাশ থেকে অন্যপাশে যায় তখন দেয়ালগুলোর ফাঁক দিয়ে প্রতিবেশীদের দেখা যায় এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়।
বাকিটা জীবন এই বাড়িতে থেকেই পার করবেন বলে জানান আকরাম।
"আমাদের জীবন এখন আর স্বাভাবিক নেই। আজকাল বাড়িতে ঘুমানো, রাস্তায় ঘুমানোর থেকে খুব একটা আলাদা নয়। কারণ বাড়ির মূল অংশ ভেঙে পড়েছে এবং জানালাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। যদি সেনাবাহিনী ফিরে আসে এবং আবার ধ্বংস করে বা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দেয় তাও আমরা আমাদের বাড়িতেই থাকব। যদিও আমাদের এখন অর্ধেক জীবনের মতো অর্ধেক ঘরে থাকতে হয়। পুরো বাড়ি ভেঙে গেলেও আমরা এখানেই থাকব।"- কথাগুলো বলছিলেন হামলার প্রত্যক্ষদর্শী আকরাম নাসার।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের হামলায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত ৯৫ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল ইরানে যে ব্যাপক হামলা ও গুপ্ত হামলার পরিকল্পনা করেছিল, সে অবস্থান থেকে হয়ত সরে এসেছে। তারা সম্ভবত ইরানের সামরিক ও তেলস্থাপনার ওপর হামলা করবে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল ইরানে ব্যাপক আকারে ও গুপ্ত হামলার পরিকল্পনা করেছিল, সে অবস্থান থেকে তারা সরে এসেছে। এখন তারা ইরানের তেল উৎপাদন স্থাপনা ও সামরিক ঘাঁটির ওপর হামলা করতে পারে।
এদিকে, জানা গেছে, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের বছর পূর্তিতে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর হামলা-পাল্টা হামলা আরো তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা এটাও জানিয়েছেন যে, কবে, কখন এবং কীভাবে ইরানে হামলা করবে, সে বিষয়ে এখনো তাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেনি ইসরায়েল।
এনবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন এবং ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, আসন্ন ইয়ম কিপ্পুর ছুটির সময় ইরানে চালাতে পারে ইসরায়েল।
রোববার হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে জানায়, দক্ষিণ লেবাননের রামিয়া গ্রামে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননে ‘সন্ত্রাসীদের স্থাপনা’ লক্ষ করে তারা তাদের সামরিক হামলা অব্যাহত রেখেছে।
সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর ইসরায়েল অভিমুখে রকেট হামলা আরো জোরদার করেছে হিজবুল্লাহ।