বাজুমের বিচার করবে নাইজারের সামরিক বাহিনী

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নাইজারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজুম। ছবি : সংগৃহীত

নাইজারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজুম। ছবি : সংগৃহীত

রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে নাইজারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজুমের বিচার করবে দেশটির সামরিক বাহিনী।

নাইজারের জাতীয় টেলিভিশনে রবিবার (১৩ আগস্ট) পাঠ করা এক বিবৃতিতে নাইজারের সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বাজুমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং দেশের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ তুলেছেন।

বিজ্ঞাপন

আল-জাজিরা জানিয়েছে, ৬৩ বছর বয়সি বাজুম এবং তার পরিবারকে ২৬ জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে নিয়ামে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তাদের আটকে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।

এদিকে, ইকোনমিক কমিউনিটি অফ ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস) বাজুমের পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে। ব্লকটি নাইজারের উপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধার না হলে সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নাইজারের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল মেজর আমাদু আবদ্রমানে রবিবার তার বিবৃতিতে বাজুমের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত নেতাকে শনিবার তার চিকিৎসক দেখেছেন। ওই চেকআপের পরে চিকিৎসক পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট এবং তার পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে কোনও উদ্বেগ প্রকাশ করেননি।

আব্রামানে নাইজারের উপর ইকোওয়াস নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়ে বলেন, অবৈধ, অমানবিক এবং অপমানজনক পদক্ষেপগুলো মানুষের জন্য ওষুধ, খাদ্য এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ করা কঠিন করে তুলছে।

অন্যদিকে, নাইজেরিয়ার ইসলামিক নেতাদের একটি দল নিয়ামেতে নাইজারের অভ্যুত্থান নেতা আবদুরাহামানে তচিয়ানির সঙ্গে একটি বৈঠকের পরে ইকোওয়াসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে রাজি হয়েছেন আবদুরাহামানে।

নাইজেরিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বদানকারী শেখ আবদুল্লাহি বালা লাউ আল-জাজিরাকে বলেন, নিয়ামেতে তাদের মিশনটির লক্ষ্য ছিল একটি উপায় তৈরি করা, যেখানে নাইজারের জান্তা অভ্যুত্থানের নেতারা একে অপরকে বোঝার জন্য ইকোওয়াস নেতাদের সঙ্গে সরাসরি সংলাপ করবে।

ব্লকটি আর্থিক লেনদেন এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি ল্যান্ডলকড নাইজারের সঙ্গে সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে।

আল-জাজিরার আহমেদ ইদ্রিস নাইজারের সঙ্গে নাইজেরিয়ার সীমান্ত কাটসিনা থেকে জানিয়েছেন, বাজুমের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো নাইজারের সেনাবাহিনী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে।

তিনি বলেন, ওই বিবৃতিটি একটি ইঙ্গিত দেয় যে, সামরিক বাহিনী বাজুমকে ছাড়বে না। তারা যে অভিযোগগুলো ঘোষণা করেছে তা বাজুমের জন্য খুব গুরুতর প্রতিক্রিয়ার কারণ হতে পারে। এটি ভবিষ্যতের আলোচনায় তাদের হাত আরও শক্তিশালী করার জন্য সামরিক বাহিনীর একটি প্রচেষ্টা হতে পারে।

বাজুমকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য একটি সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা ইকোওয়াস সদস্যদের বিভক্ত করেছে। রাশিয়া এবং আলজেরিয়া এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে।

সামরিক সরকার দ্বারা শাসিত নাইজারের প্রতিবেশী মালি এবং বুরকিনা ফাসো বলেছে, নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য হবে।

তচিয়ানি শনিবার তার প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল মুসা সালাউ বারমোর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছেন গিনির রাজধানী কোনাক্রিতে। ওই প্রতিনিধি দল সেখানকার নেতাদের তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে।

নাইজারে অভ্যুত্থানকে পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসাবে দেখা হচ্ছে। কারণ, তারা আল-কায়েদা এবং আইএসআইএলের (আইএসআইএস) সঙ্গে যুক্ত গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা ক্রমবর্ধমান বিদ্রোহকে পরাস্ত করতে সাহেল অঞ্চলে নিয়ামিকে অংশীদার হিসাবে দেখেছিল।

এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের আড়াই হাজারেরও বেশি সামরিক কর্মী রয়েছে। এ ছাড়াও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলো নাইজারের বাহিনীর সামরিক সহায়তা এবং প্রশিক্ষণের জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।