ইসরায়েলের ‘সিন্দুক’ গিলবোয়া থেকে যেভাবে পালান ৬ বন্দি

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: আলজাজিরা

ছবি: আলজাজিরা

ইসরায়েলের সবচেয়ে সুরক্ষিত কারাগারগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘গিলবোয়া কারাগার’। এটি দেশটির জেনিন শহরে অবস্থিত। গিলবোয়া কারাগারটি এতটায় সুরক্ষিত যে, সেটিকে ইসরায়েলের ‘সিন্দুক’ বলা হয়ে থাকে। স্থানীয় সময় রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে সেখান থেকে পালিয়েছেন ছয় ফিলিস্তিনি বন্দি। যা নিয়ে রীতিমতো হতভম্ব ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।

কারাগার থেকে বন্দি পালানোর ঘটনা তদন্তে নেমেছে নিরাপত্তা বাহিনী। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, বন্দিরা যখন পালিয়ে যায়, সেসময় নিরাপত্তাকর্মীরা ঘুমাচ্ছিলেন। এদিকে, পলাতক বন্দিদের গ্রেফতারে সাড়াশি অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। খবর আল-জাজিরার।

বিজ্ঞাপন

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, কারাগারের ভেতরের টয়লেটের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে টানেল খুঁড়েন বন্দিরা। কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় খোঁড়া টানেলটি কারাগারের দেয়ালের বাইরে পর্যন্ত প্রসারিত করেছিলেন।

barta24

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ফিলিস্তিনের ওই ছয় বন্দি যে টানেল দিয়ে বেরিয়ে যান, তার বাইরের দিকের মুখের ঠিক ওপরেই রয়েছে ‘ওয়াচ টাওয়ার’। যেখানে একজন নিরাপত্তাকর্মী সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকেন।

রোববার মধ্যরাতেও রুটিন অনুযায়ী একজন নিরাপত্তাকর্মী টাওয়ারে দায়িত্বে ছিলেন। তবে বন্দি পলায়নের সময় তিনি ঘুমাচ্ছিলেন। ফলে নির্বিঘ্নে ছয় বন্দি টানেল থেকে বেরিয়ে দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যান।

দেশটির কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কারাগার থেকে পালানো ওই ছয় বন্দিকে একটি সেলে রাখা হয়েছিল। তারা রাত দেড়টার দিক থেকে পর্যায়ক্রমে কারাগারের সঙ্গে সংযুক্ত টয়লেটে ঢুকে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর টানেলের বর্হিগমন মুখ দিয়ে বের হয়। পরে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়।

barta24

বন্দি পালানোর পুরো ঘটনাটি কারাগারের সিসিটিভি ফুটেজে দেখাও যায়। তবে কারাগারের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নিরাপত্তাকর্মীরাও সেসময় তা খেয়াল করেননি। ওয়াচ টাওয়ার এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরতদের একসঙ্গে ঘুমানোর বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ করছে শীর্ষ কর্মকর্তারা।

নিরাপত্তারক্ষীরা জানিয়েছেন, ভোরে কারাগারের পাশে কৃষিক্ষেতে কাজ করতে আসা কৃষকরা কয়েকজনকে দ্রুতগতিতে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখে। পরে তারা কারা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেন। তবে কারা কর্তৃপক্ষ তখনও আঁচ করতে পারেনি, ঠিক কী ঘটেছে।

barta24

পরে কৃষকদের তথ্যানুযায়ী, নিরাপত্তারক্ষীরা বন্দিদের সংখ্যা গুনতে শুরু করে। সেসময় ছয়জন বন্দি কম পাওয়া যায়। এরপর কারাগারের একটি সেলে ঢুকে নিরাপত্তারক্ষীরা পুরো ঘটনা বুঝতে পারেন। পরে সিসিটিভি ফুটজ দেখে পুরো ঘটনা দেখে হতভম্ব হয়ে যান নিরাপত্তারক্ষীরা।

অন্যদিকে, নিরাপত্তার স্বার্থে ‘সুরক্ষিত’ এ কারাগারে থাকা ৩২০ জন বন্দির মধ্যে ৯০ জন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিকে সরিয়ে নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে গিলবোয়া থেকে বন্দি পালানোর ঘটনাকে চরম ব্যর্থতা বলছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা।

এদিকে, ইসরায়েলি বাহিনীর ধারনা পলাতক বন্দিরা সীমান্ত পেরিয়ে জর্ডানে পাড়ি জমাতে পারেন। কারণ গিলবোয়া কারাগার থেকে জর্ডানের সীমান্ত মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে। এজন্য ইসরালের সঙ্গে জর্ডান সীমান্তের পুরো অংশে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বন্দিদের ধরতে অন্তত ২০০টি অস্থায়ী চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।