‘উপাচার্য অপসারণ মঞ্চ’ করে আন্দোলন জাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে ‘উপাচার্য অপসারণ মঞ্চ’ করে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মঞ্চ করে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এই অবরোধ চলবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়া পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘উপাচার্যের অপসারণ মঞ্চ’ করে অবস্থান নিয়েছে তারা। অবরোধের কারণে অফিসকক্ষে প্রবেশ করতে পারেননি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর।
অবরোধ চলাকালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারের মুখপাত্র দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ফারজানা ইসলাম উপাচার্য হিসেবে আর কোন কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। আমাদের নিয়মিত কর্মসূচি চলছে, উপাচার্য অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।’
আন্দোলনের সঙ্গে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘কার কি পরিচয় কিংবা কে শিবির করে সেটা বের হলেই প্রমাণ হয়ে যায় না যে ফারজানা ইসলাম দুর্নীতি করেন নাই। ফারজানা ইসলামের দুর্নীতি ঢাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে পথ বেছে নিয়েছে তা হলো শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত বিষয়। যে কোন আন্দোলন দমানো বা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কাউকে দমাতে চাইলে তাকে শিবির বলা বা স্বাধীনতা বিরোধী ট্যাগ দেওয়া হলো ক্ষমতাসীনদের পুরোনো অপকৌশল।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র মোটর বাইকে যাচ্ছিলো তাকে ধরে শিবির বানানো হলো। এখন প্রাক্তন কোন ছাত্রের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা জনের যোগাযোগ থাকতেই পারে কিন্তু এর দ্বারা প্রমাণ হয় না যে আন্দোলনের সঙ্গে সে যুক্ত আছে। এই আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, সাংস্কৃতিক জোটসহ বামপন্থী, আওয়ামী পন্থী ও বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের সমন্বয়ে। এই সর্বদলীয় সংগঠনের মতামতের ভিত্তিতে আন্দোলন চলছে। কোথাকার একজনকে প্রক্টরিয়াল টিম ধরলো আর তাকে আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বিভিন্ন জনের সঙ্গে করা কনভারসেশন একসাথে করে জুড়ে দিয়ে চলমান আন্দোলনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘সারাদিন অবরোধ চলবে, অবরোধ শেষে আমরা মিটিংয়ে বসবো এবং পরবর্তী কর্মসূচী ঠিক করে গণমাধ্যমকে জানাবো। তবে আন্দোলনের সঙ্গে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনা হচ্ছে কিন্তু যদি কেউ আসলেই শিবিরের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাকে আমরা এই আন্দোলনে রাখবো না। শিবিরের কোন এজেন্ডা এই আন্দোলনে থেকে বাস্তবায়ন করতে দিবো না। যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়ান তবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবো।’