বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের উপর হামলায় জড়িত থাকার দায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকায় সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় সর্বমোট ৭৩ জন শিক্ষার্থীকে আমরা বহিষ্কার করেছি।
তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে যাদের বিষয়ে প্রমাণ পেয়েছি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি। পরবর্তীতে প্রমাণ সাপেক্ষে আরও শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের উপর হামলায় জড়িত থাকার দায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৭৩ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন একথা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বরে আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে আয়োজিত স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকায় সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় সর্বমোট ৭৩ জন শিক্ষার্থীকে আমরা বহিষ্কার করেছি। আমরা প্রাথমিকভাবে যাদের বিষয়ে প্রমাণ পেয়েছি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি। পরবর্তীতে প্রমাণ সাপেক্ষে আরো শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হবে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, হলসমূহের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভিন্ন পর্ষদের পরিচালক ও প্রশাসকবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী পরীক্ষা না দিয়েও তাকে পাস করানোর অভিযোগ উঠেছে গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের দাবি, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী অভিযুক্ত সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী। ছাত্রলীগের বেরোবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক তিনি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রথম সারিতে থাকতেন ঐশী। গত ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাইদ হত্যার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন ছাত্রলীগের এই নেত্রী।
সহপাঠীরা বলছেন, ছাত্রলীগ নেত্রী ঐশীকে ছাড়াই গত ডিসেম্বর মাসে গণিত বিভাগের মাস্টার্স ১ম সেমিস্টারের ৫১০২ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে পরীক্ষায় না বসেও ফলাফল আসে ঐশীর। সেখানে ২৫ নম্বরের মধ্যে তিনি পান ১৬ নম্বর। এ ঘটনায় আলোচনায় আসেন তিনি।
গণমাধ্যমে এ তথ্য প্রচার হলে বেরোবি ক্যাম্পাস জুড়ে শুরু হয় আলোচনা- সমালোচনা ঝড়। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তানজিউল ইসলামকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।
যেখানে কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সদস্য সচিব ও গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হান্নান মিয়া এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াছ প্রামানিক। এই তদন্ত কমিটিকে অবিলম্বে নিরপেক্ষ প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি কোর্স টিচার অধ্যাপক ড.রুহুল আমীন। তদন্ত কমিটিকেই জবাব দিবেন বলে জানান তিনি।
সংশ্লিষ্টরা এই প্রসঙ্গে কথা না বললেও গণিত বিভাগের ওই ব্যাচের সিআরের দেওয়া পরীক্ষার নোটিশ থেকে জানা যায়, গণিত বিভাগের মাস্টার্স ১ম সেমিস্টারের ৫১০২ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২ ডিসেম্বর। তবে সেখানে তিনি উপস্থিত ছিলেন না।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলছেন, বিভিন্ন সংবাদের মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হয়েছেন তিনি। এর ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বিষয়টি জানতে ছাত্রলীগ নেত্রী ও শিক্ষার্থী ঐশীকে একাধিকবার ফোন দিয়েও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
মধ্যরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় এসবি সুপার ডিলাক্সের বাস আটকায় শিক্ষার্থীরা। এসময় বাস ভাঙচুর করতে গেলে সমন্বয়করা বাধা দিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) ম্যধরাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজন ছাত্রের পা কেটে যায়। আহত ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মোস্তাফিজুর রহমান। পরে রাত দেড়টার দিকে গাড়ি ছেড়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, বায়োটেকনোলজি বিভাগের ১৪-১৫ জনের মতো শিক্ষার্থী বাসে ওঠে। এ সময় গাড়ির সুপারভাইজার সব শিক্ষার্থীকে গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলে। এতে বায়োটেকনোলজির শিক্ষার্থীরা তাদের নামিয়ে দেয়ার কারণ জানতে চায়। এ সময় সুপারভাইজার ‘আপনারা বাসের পরিবেশ নষ্ট করেছেন, আপনাদের নেবো না’ বলে বাস ছেড়ে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, আপনি কোথা দিয়ে যাবেন? এতে সুপারভাইজার ‘ক্যাম্পাসের সামনে দিয়েই যাবো, আপনারা যা পারেন কইরেন’ বলে চলে যায়। অথচ ক্যাম্পাসেরই আরও ১২-১৩ জন শিক্ষার্থী তখন বাসে ছিল এবং তাদেরকে নিয়ে যায়। তবে আমাদের নিতে আপত্তি জানায় সুপারভাইজার।
পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তার সহপাঠীদের খবর দিলে তারা গিয়ে বাস আটকায়। এ সময় কিছু শিক্ষার্থী বাস ভাঙচুর করে। ভাঙচুরের সময় এক শিক্ষার্থীর পা কেটে যায়। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা গাড়ি ভাঙচুরে বাধা দিলে ভাঙচুরকারী শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় সমন্বয়ক ও ভাঙচুরকারীদের মাঝে হাতাহাতি হয়।
ভাঙচুরের ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রবিউল ইসলাম বলেন, তেমন কোনো সিরিয়াস ইনজুরি হয়নি তবে ,অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। এমন আঘাত ধারালো কিছুতে হতে পারে। আমরা প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দিয়েছি। তারপর ব্লিডিং বন্ধ হয়। তবে ক্ষতস্থানের মধ্যে গ্লাসের টুকরা থাকতে পারে। তাই আমরা ভালোভাবে মূল্যায়নের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, ঘটনা জানার পর পরই আমরা ঘটনাস্থলে আসি। কে বা কারা বাস ভাঙচুর করেছে এ বিষয়ে আগামীকাল তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।