জাবি উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ করে রাখেন। উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এই অবরোধ চলবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। অবরোধের কারণে অফিসকক্ষে প্রবেশ করতে পারেননি কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এছাড়া উপ উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার ভবনে প্রবেশ করতে চাইলে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে ফিরে যান। কার্যালয়ে আসেননি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারের মুখপাত্র দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তার পদে আর দেখতে চাই না। উপাচার্যের কুশপুতুল দাহ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন একটি পক্ষ। অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম যখন নারী হিসেবে দুর্নীতি করেন তখন কী সমগ্র নারী জাতির হয়ে দুর্নীতি করেন? এই উপাচার্য তার দুর্নীতির ছাপাই গাওয়ার জন্য সব মহলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যবহার করছে। এর মধ্যে দুইজন শিবির কর্মী ধরার নাটক মঞ্চস্থ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাদের নানামুখী বক্তব্যর কারণে আমরা এটাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জজ মিয়া নাটক মঞ্চস্থ করার মাধ্যমে আরেকটি আবরার ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই দুর্নীতিবাজ প্রশাসন কোনোভাবেই এই আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবেন না। আমরা যৌথ আন্দোলনের মাধ্যমে এই উপাচার্যকে অপসারণ করে ছাড়ব।’
ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক বলেন, ‘উপাচার্য তার স্বামী, সন্তান ও বিশ্ববিদ্যায়ের সকল শাখায় ভারপ্রাপ্তদের রেখে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, যৌন নিপীড়কের পৃষ্ঠপোষক ফারজানা ইসলামের দিন ফুরিয়ে এসেছে। আমরা ভিসির অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের মাঠে থাকব।'
ছাত্রফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ন্যক্ক্যারজনক ব্লেমিং গেইম শুরু করেছে। দুইজন সাবেক শিক্ষার্থীকে ধরে তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন আন্দোলনের সঙ্গে শিবির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি আটককৃত দুইজন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন বর্তমান প্রক্টরের ডিপার্টমেন্টের অন্যজন সদ্য সাবেক প্রক্টরের ডিপার্টমেন্টের। সেই জায়গা থেকে আমরা এই আন্দোলন বানচালের ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ তারপরও যদি এখানে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চলে তবে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতা। আদ এই ব্যর্থতা ঢাকতে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করা হচ্ছে।'
এদিকে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির 'সংশ্লিষ্টতার' অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা। দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।