আবরার হত্যার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধন শেষে শহীদ মিনার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে পরিবহন চত্বরে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।
মানববন্ধনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদারের সঞ্চালনায় নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করে সাম্রাজ্যবাদী ভারতের সঙ্গে নতজানু চুক্তি দেশের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির পরিচয় দিয়েছে। আবার এর বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে মেধাবীদের নির্মমভাবে গুম, খুন করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত এই হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে দেশে গণতন্ত্রের লেবাসে স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়েছে রাষ্ট্রের সব পর্যায়ের অপরাধীরা নির্বিঘ্নে পার পেয়ে যাচ্ছেন। এই রাষ্ট্রীয় অনাচরের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে জেগে উঠতে হবে।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সুস্মিতা মরিয়ম বলেন, 'আবরারকে কোনো লোকাল সন্ত্রাসী হত্যা করে নাই। তাকে হত্যা করেছে তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সন্ত্রাসী। আজকে বাংলাদেশের সরকার যখন ভারতকে সব কিছু দিয়ে দিচ্ছে, সে যখন এই সত্য নিয়ে সমালোচনা করেছেন তখনই তারা তাকে হত্যা করেছে।'
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘লক্ষ শহীদের রক্তে কেনা এমন এক স্বাধীনতা আমরা পেলাম যেখানে মুক্ত চিন্তার কোনো দাম নেই। আজ শিবির সন্দেহ হওয়ায় আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমার প্রশ্ন এই অধিকার তাদের কে দিয়েছে? আমরা দ্ব্যর্থতহীন কণ্ঠে বলতে চাই- যে সংগঠন এখনো রাষ্ট্র কর্তৃক নিষিদ্ধ নয় সে সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে কেউ কাউকে হত্যা করতে পারেন না। প্রয়োজনে রাষ্ট্র নিষিদ্ধ করবে, বিচার বিভাগ বিচার করবে কিন্তু ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন কাউকে হত্যা করতে পারে না।’
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি মাহথির মোহাম্মাদ বলেন, ‘বর্তমানে দেশের অবস্থা হলো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলা গেলেও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না। ক্ষমতায় থাকার জন্য এই সরকার সাম্রাজ্যবাদী ভারতের সাথে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অবলম্বন করেছে। ফলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে আজ আবরারকে জীবন দিতে হলো। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই।'
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।