যতদিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকবে ততদিন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ লাইফ সাপোর্টে থাকবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ওনাকে (এরশাদ) দেখে এসেছি। তার বেডের পাশে দাঁড়িয়ে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছি। ডাক্তাররা গতকালের চেয়ে কিছু বিষয়ে উন্নতি, কিছু বিষয়ে অবনতি দেখছেন।
তিনি বলেন, ওনার ডাইজেস্টিভ সিস্টেমে সমস্যা ছিল, ব্লাড আসছিল, এখন সেই সমস্যা কমে গেছে। কিডনি ডায়ালাইসিস করার পর বিরতি দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৬০ মিলিলিটার ইউরিন সংগ্রহ হয়েছে। এটা কমপক্ষে ১ লিটার হওয়ার কথা ছিলো। সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালাইসিস করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো বলেন, তার অর্গানগুলো কাজ করছে। তবে সেটি হচ্ছে ওষুধ ও যন্ত্রের সাহায্যে। তার পালস ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রয়েছে। ডাক্তাররা মনে করছে এমন রোগীর ক্ষেত্রে কিছুদিন পর অর্গানগুলো কাজ করতে শুরু করে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ক্ষেত্রেও তেমন কিছু আশা করছেন।
জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, আমরা নিয়মিত তার স্বাস্থ্যের অবস্থা আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে অবগত করছি। তারপরও কেউ কেউ ফেসবুকে এটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। কেন তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে না ইত্যাদি।
তিনি বলেন, আমি সংসদে একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে সেখানে বলেছিলাম, এরশাদকে দুর্নীতিবাজ বলা হয়। যদি দুর্নীতি করতেন তাহলে চিকিৎসার জন্য টাকা রাখতেন। টাকার জন্য তার কোন সমস্যা হবে না। তিনি মন্ত্রী পদমর্যাদা ভোগ করেন, সরকারও তার চিকিৎসার ভার বহন করবে। আমাদের শরীরের শেষ বিন্দু থাকা পর্যন্ত তার চিকিৎসার কোন সমস্যা হবে না।
অনেক দিন ধরেই অসুস্থতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন এরশাদ। ঠিকমতো হাঁটাচলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। গত বছরের ২০ নভেম্বরের পর আর কোন দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়নি তাকে। হাসপাতাল-বাসার মধ্যেই আবদ্ধ ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি। গত ২৬ জুন অসুস্থতা বেড়ে গেলে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হন। প্রথমে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আরও অবনতি হলে তাকে লাইফ সার্পোট দেওয়া হয়। এখনও লাইফ সাপোর্ট বহাল রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, এস এম ফয়সল চিশতী, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, আলমগীর শিকদার লোটন, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনের আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রোগমুক্তির জন্য দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়।