নিজ দেশের বাস্তুচ্যুতদের সহায়তা করছে না মিয়ানমার

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রাখাইনের পোননাগুনের একটি ক্যাম্পে বাস্তচ্যুত এক শিশু

রাখাইনের পোননাগুনের একটি ক্যাম্পে বাস্তচ্যুত এক শিশু

মিয়ানমারে জাতিগত সংঘর্ষে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া মানুষজনকে সহায়তা করছে না দেশটির সরকার। উত্তর রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে বাস্তুচ্যুত হওয়া কয়েক হাজার গ্রামবাসীকে মিয়ানমার সরকার পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির উচ্চকক্ষের সংসদ সদস্য ড. হাতু মাই।

মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এমন খবর প্রকাশ করেছে।

বিজ্ঞাপন

রাখাইন রাজ্যের নির্বাচনী এলাকা ১১ আসনের সংসদ সদস্য ড. হাতু মাই বলেন, সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় ত্রাণ বণ্টনের বিষয়ে সংসদকে যা বলেছে এবং আর বাস্তবত যা হচ্ছে তার মধ্যে বিরাট ফারাক আছে।

মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসনের মন্ত্রী ইউ উইন মিয়াত সংসদকে জানান, ডিসেম্বরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সরকার যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে বাস্তুচ্যুত গ্রামবাসীদের জন্য ৯০ লাখ ডলার মূল্যের চাল, ভোজ্যতেল, নুন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করেছে।

বাস্তুচ্যুত লোকদের পরিত্যক্ত বাড়িগুলি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং যুদ্ধ শেষ হলে সরকার তাদের ঘরে ফিরে যেতে এবং জীবিকা নির্বাহ করতে সহায়তা করবে বলে সংসদে জানান মন্ত্রী ইউ উইন মিয়াত।

রাখাইন সরকার জানিয়েছে যে, রাজ্যের ১১৪টি নির্বাচনী কেন্দ্রে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

তবে সংসদ সদস্য ড. হাতু মাই বলেন, সরকারের এ অনুমান খুব কম বলে মনে হচ্ছে। এনজিও’র হিসাব মতে রাখাইনে জাতিগত সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৭০ হাজার গ্রামবাসী বাস্তুচ্যুত হয়েছে। স্থানীয় ও বিদেশি এনজিওগুলিকে বাস্তুচ্যুত মানুষদের মাঝে মানবিক সহায়তা দেওয়ার অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

অন্যদিকে এনজিওকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার প্রসঙ্গে দেশটি ত্রাণ ও পুনর্বাসনের মন্ত্রী ইউ উইন মিয়াত বলেন, এ ক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকার কোনো বাধা বা নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। তবে ত্রাণ সহায়তা দিতে চাইলে এনজিওগুলোকে রাখাইন রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে। রাজ্য সরকার ছাড় দিলে আমরা বাধা দেব না।

তিনি বলেন, জাতিগত সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত ছয়টি জনপদে ১.৬ বিলিয়ন স্থানীয় মুদ্রায় ৭টি নতুন শিবির নির্মিত হচ্ছে।

পোননাগুন জনপদে আ হায়েত মায়াত শিবিরের প্রধান ইউ থুনন হালাইং বলেন, ৭০০ জনেরও বেশি বাস্তুচ্যুত গ্রামবাসীর জন্য প্রতি মাসে ২০০ ব্যাগ চাল দরকার হয়। কিন্তু আমাদের মাত্র ১০ ব্যাগ চাল দেওয়া হয়েছে। এই শিবির স্থাপনের পর থেকে সরকার দুই বার খাবার সরবরাহ করেছে, আর কোনও সাহায্যের খবর নেই।