মেলবোর্নের প্রথম হিজাবি মডেল
হানান ইবরাহিম। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের বসবাসকারী এক মুসলিম নারী। পেশায় ডাক্তার। সম্প্রতি তিনি ডাক্তারি ছেড়ে ফ্যাশন মডেলিংকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
আগে তিনি রেডিয়েশন থেরাপিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মডেলিং পেশায় সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি তিনি ফ্যাশন ডিজাইনার লিসা গ্রোমানের ডিজাইনে অংশ নিয়েছেন। তার অংশগ্রহণ অস্ট্রেলিয়ার ফ্যাশন জগতকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। কারণ তিনিই প্রথম নারী, যে মেলবোর্নের ফ্যাশন উৎসবে হিজাব পরে মডেলিং করেছেন। খবর এসবিএস নিউজ।
২৫ বছর বয়সী এই মডেলের প্রত্যাশা, মডেলিংয়ে তার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম নারীদের জন্য বিশাল এক সুযোগ সৃষ্টি হলো।
তার মতে, ‘অস্ট্রেলিয়া বিভিন্ন সংস্কৃতির দেশ হিসেবে পরিচিত। মেলবোর্নে বসবাস করে আপনি তা অনুভব করতে পারবেন। কিন্তু ফ্যাশন শিল্পে আপনি তা দেখতে পারবেন না। সুতরাং আমি আশা করি, এর মাধ্যমে প্রথাগত ধ্যান-ধারণা ভেঙে যাবে এবং মুসলিম নারীদের সম্মুখের বাঁধাসমূহ দূর হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কোথাও যাওয়ার সময় আমার সঙ্গে সাধারণত একটি ব্যাগ নিয়ে যাই, যেখানে থাকে বিভিন্ন রং বেরঙের হিজাব এবং আমি আমার পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে তা পরিধান করি। যদিও মডেলিংয়ে অংশ নেওয়ার সময় বেশিরভাগ ডিজাইনার আমার জন্য প্রথাগত হিজাব নিয়ে আসে।’
অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করলেই হানান ইবরাহিমের জন্ম কেনিয়া। আর তার পূর্ব পুরুষরা সোমালিয়ার বংশোদ্ভূত।
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে তার মায়ের বুটিক ব্যবসা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ফ্যাশন জগতে তার আগ্রহ জন্মায়।
তিনি বলেন, ‘সবসময় হিজাব পরিধান করা সহজ নয়। মাঝে-মধ্যে ইসলাম ভীতি চরম আকার ধারণ করে সুতরাং অনেক সময় এমনও আসে যখন হিজাব পরিধান করা খুবই কষ্টকর। তার পরও আমি নিয়মিত হিজাব পরিধান করি। কারণ, হিজাব আমার বিশ্বাসের অংশ।’
হানান ইবরাহিম তার মডেলিং পেশা নিয়ে খুবই আশাবাদী। তিনি আশা করেন, তার সফলতা অস্ট্রেলিয়ার অন্য মুসলিম নারীদের অনুপ্রাণিত করবে।
তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিকার অর্থেই অন্যসব মুসলিম নারীদের উৎসাহ দিতে চাই, যারা হিজাব পরিধান করেন। যারা ফ্যাশন ভালোবাসেন, এখানে তাদের জন্য একটি অবস্থান রয়েছে তা তাদের জানাতে চাই। আসলে আপনি ধর্ম মানেন বলেই নিরামিষ জীবন কাটাতে হবে, তা নয়। আপনি ইসলাম মেনেও ফ্যাশনেবল হতে পারেন।’