পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস

  • বার্তা ২৪ স্পোর্টস
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টটি পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ১৪তম টেস্ট। এর আগের ১৩ টেস্টের ১২টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। স্রেফ ২০১৫ সালে খুলনার টেস্টটি হয়েছিল ড্র। অবশেষে দলটির বিপক্ষে ১৪তম টেস্টে এসে প্রথম জয়ের দেখা পেল সাকিব-মুশফিকরা। রাওয়ালপিন্ডিতে ইতিহাস গড়া এই জয়ের ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ১০ উইকেটে।

দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে গেলে জয়ের জন্য স্রেফ ৩০ রানের লক্ষ্য পায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। মামুলি সেই লক্ষ্য দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান তুলে নেন ৬ ওভার ৩ বলেই। সেখানে জাকির ১৫ রানে এবং জাকির অপরাজিত ছিলেন ৯ রানে। 

বিজ্ঞাপন

বিদেশের মাটিতে এটিই বাংলাদেশের উইকেটের হিসেবে সবচেয়ে বড় জয়। কার্যত টেস্টে ১০ উইকেটের ব্যবধানে এই প্রথম কোনো ম্যাচ জিতল শান্তরা। এর আগে ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছিল সর্বোচ্চ ৮ উইকেটে। তবে সেই ম্যাচ ছাড়িয়ে শীর্ষে এখন শান্ত-সাকিবদের রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট জয়। 

চতুর্থ দিনের শেষদিকে এসে ৫৬৫ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। পরে ১ উইকেটে ২৩ রান তুলে গতকালের খেলা শেষ করে পাকিস্তান। পরে আজকের (রোববার) পঞ্চম ও শেষদিনে সাকিব ও মিরাজের স্পিন ঘূর্ণিতে কুপোকাত স্বাগতিকরা। ১৪৬ রানের মধ্যে কেবল ফিফটি পেরোনো ইনিংস খেলেছেন রিজওয়ান (৫১)। এছাড়া ৩৭ রান আসে ওপেনার আবদুল্লাহ শফিকের ব্যাটে। সেখানে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তিনটি নেন সাকিব। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন তিন পেসার শরিফুল, হাসান ও নাহিদ।

পরে সাদমান-জাকির মিলে ৩৯ বলের পৌঁছে যান ঐতিহাসিক জয়ের বন্দরে। 

এদিকে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের শুরুটা হয়েছিল স্বাগতিকদের দাপট দিয়েই। প্রথম দিনে ভেজা আউটফিল্ডের কারণে খেলা শুরু হয় চার ঘণ্টা পর। পরে সেই দিন শেষে ৪ উইকেটে ১৫৮ রান তলে পাকিস্তান। আগেরদিন টপ-অর্ডাররা ব্যর্থ থাকলেও দ্বিতীয় দিনে এসে রিজওয়ান-শাকিলের ২৪০ রানের বিশাল জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে যায় শান মাসুদদের। পরে তৃতীয় সেশনে এসে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে দেয় পাকিস্তান। সেখানে ১৭১ রানে অপরাজিত ছিলেন রিজওয়ান এবং শাকিল করেন ১৪১ রান। 

দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় সেশন থেকে আজকের (রোববার) পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত ম্যাচের চালকের অবস্থানে ছিলেন শান্ত-সাকিবরাই। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়েছিল সফরকারীরাও। তবে মুশফিকের সেঞ্চুরি ও চার ফিফটিতে ৫৬৫ রানের পাহাড় সমান সংগ্রহ পায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ৯ রানের আক্ষেপ নিয়ে মুশফিক ফিরেছিলেন ১৯১ রানে, পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। অনুমিতভাবে ম্যাচসেরার পুরস্কারটিও যায় তার দখলেই। এছাড়া সাদমান ৯৩, মিরাজ ৭৭, লিটন ৫৬ এবং মুমিনুল করেন ৫০ রান। 

প্রথম ইনিংসটা ব্যাটারদের থাকলেও দ্বিতীয় ইনিংসটা নিজেদের দখলে নিলেন সাকিব-মিরাজ। এই স্পিনার মিলেই তুলেছেন ৭টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এতেই ‘আনলাকি থারটিন’ ছাড়িয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪তম টেস্টের ১০ উইকেটের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:

পাকিস্তান, ১ম ইনিংস: ৪৪৮/৬ ডি. (১১৩ ওভার) (রিজওয়ান ১৭১*, শাকিল ১৪১, সাইম ৫৬; হাসান ২/৭০, শরিফুল ২/৭৭)

বাংলাদেশ, ১ম ইনিংস: ৫৬৫/১০ (১৬৭.৩ ওভার) (মুশফিক ১৯১, সাদমান ৯৩, মিরাজ ৭৭, লিটন ৫৬, মুমিনুল ৫০; নাসিম ৩/৯৩)

পাকিস্তান, ২য় ইনিংস: ১৪৬/১০ (৫৫.৫ ওভার) (রিজওয়ান ৫১, শফিক ৩৭; মিরাজ ৪/২১, সাকিব ৩/৪৪)

বাংলাদেশ, ২য় ইনিংস: ৩০/০ (৬.৩ ওভার) (জাকির ১৫*, সাদমান ৯*; শাহিন ০/৮)

ফল: বাংলাদেশ ১০ উইকেটে জয়ী

ম্যাচসেরা: মুশফিকুর রহিম

সিরিজ: ১-০ তে এগিয়ে বাংলাদেশ