আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে কোচ ফিল সিমন্স বলে গিয়েছিলেন, আর সব কিছু বাদ, বাংলাদেশের মনোযোগটা হবে টেস্টেই, মাঠের খেলাতে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ শুরু হওয়ার আগের দিনও সে বলয়ে বাংলাদেশ ঢুকতে পারছে কই? অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত সংবাদ সম্মেলনে এলেন। ঘুরেফিরে সাকিব আল হাসান প্রসঙ্গ ফিরে ফিরে এল বাংলাদেশ দলনেতার কথায়।
তা আসারই কথা। এযাবতকালে দেশের সবচেয়ে বড় তারকা তিনি। তার ওপর দলে তার উপযোগিতাও কম নয়। ব্যাটে-বলে সমান পারফর্ম করতে পারেন, তাকে যখন অনাহূত পরিস্থিতির কারণে খুইয়ে বসতে হয়, তখন তাকে নিয়ে কথা হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয় আদৌ।
সাকিবের না থাকায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কম্বিনেশন মেলানোয়। শান্ত বললেন, ‘এখনো সমস্যা হচ্ছে কম্বিনেশন মেলাতে। অস্বীকার করার কিছু নেই। এই জায়গা ঠিক করতে কিছুদিন সময় লাগবে। যে খেলোয়াড়গুলো আছে সবার এই সামর্থ্য আছে যার যে জায়গা থেকে ভূমিকা পালন করবে।’
সাকিবকে হারানোর পর মানসিকভাবেও খানিকটা কঠিন পরিস্থিত বিরাজ করছে দলে, সেটা শান্ত স্বীকার করলেন অকপটে, ‘কঠিন (মানসিক অবস্থা)। সত্যি করে বললে। তবে এটা আমাদের নিয়ন্ত্রনে নেই, এ নিয়ে চিন্তা করাটা সময় নষ্ট। যত বেশি সম্ভব খেলাতে ফোকাস করতে চাই। কারণ খুব গুরুত্বপূর্ণ দুইটা টেস্ট।’
সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক ঘোষণাই দিয়ে রেখেছিলেন, মিরপুর টেস্টই হচ্ছে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে সাদা পোশাকে তার শেষ ম্যাচ। তাই এই টেস্ট নিয়ে বাড়তি পরিকল্পনাও ছিল দলের।
শান্তর কথা, ‘অবশ্যই পরিকল্পনা ছিলো আমাদের। বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় (সাকিব)। শুধু বাংলাদেশ বলব না। খুবই দুর্ভাগ্যজনক যেকোনো কারণেই হয়নি।’
‘কীভাবে দেখছি আসলে...যেটা বললাম দুর্ভাগ্যজনক (সাকিবকে মিরপুরে বিদায় দিতে না পারা)। যেটা হওয়া উচিত ছিলো। আমরা সবাই জানি কেন হয়নি। এটা নিয়ে টেস্ট ম্যাচের আগের দিন কথা এগুতে চাই না।’
সাকিবের জনরোষে পড়ার মূলে আছে জুলাই বিপ্লবের সময়ে তার নিশ্চুপ থাকা, এরপর কানাডাকে সমর্থককে ‘দেশের জন্য কী করেছেন?’ জিজ্ঞেস করা, এরপর তার স্ত্রীর ‘টরন্টোতে খুব ভালো একটা সময় কাটল’ পোস্ট করা।
তখন কেন সাকিব জনগণের পক্ষে কোনো কথা বলেননি, তার পেছনে ভয়ের কিছু ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ধেয়ে গিয়েছিল শান্তর কাছে। তার জবাবে শান্ত বলেন, ‘এরকম কোন কিছু না (ভয়ের কারণে ফেসবুকে পোস্ট দেননি কিনা)। আমরা সবাই জানি কেন উনি আসতে পারছে না। এখন বর্তমান সময়ে যেরকম অবস্থা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেই সব সমাধান হয়ে যায়। আমিও ভাবছি প্রতিদিন একটা করে স্ট্যাটাস দেব।’
তবে সব ছাপিয়ে শান্ত কালকের ম্যাচেই মনোযোগ দিতে চাইছেন এখন, ‘আগামী কাল একটা টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে। আমরা সবাই জানি এখানে উনি শেষ টেস্ট খেলতে পারলে খুব ভালো হতো। ফোকাসটা ওই জায়গায় আনা হয়েছে যেন আমরা টেস্ট ম্যাচটা জিততে পারি। যত কথা বলব এখন কোন কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা কম।’
সাকিবকে নিয়ে পরিকল্পনাটা ভেস্তে গেল, তা মনে করছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার অভিমত, বিষয়টা এখনও ‘পেন্ডিং’ আছে। তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, প্রত্যেকটা খেলোয়াড় মনে করে এটা পেন্ডিং থেকেই গেলো।’