ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটের বিশাল পরাজয় হজম করতে হয়েছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে। আজ (সোমবার) সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ৫৮ রানের দাপুটে জয় তুলে নিয়ে ২-০ তে সিরিজ নিজেদের নামে করে নিল সফরকারীরা।
এদিন টসে জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অজি অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি। তৃতীয় ওভারে ওপেনার লিচফিল্ড সাজঘরে ফেরত গেলেও আরেক ওপেনার গ্রেস হ্যারিস খেলেছেন ৪৭ রানের দারুণ এক ইনিংস। দলের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩০ বলে ৫৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন জর্জিয়া ওয়েরহ্যাম। নির্ধারিত ২০ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান।
বাংলাদেশের হয়ে এদিন নিজের সেরা বোলিংটাই করে দেখিয়েছেন ফারিহা তৃষ্ণা। হ্যাটট্রিকসহ ৪টি উইকেট শিকার করেছেন এই অলরাউন্ডার, খরচ করেছেন মাত্র ১৯ রান। এছাড়া ফাহিমা ও নাহিদা দুটি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন।
১৬২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা সাবলীলভাবেই করেছিল বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার দিলারা আক্তার ও মুর্শিদা খাতুন। পঞ্চম ওভারে ক্যাচ তুলে দিয়ে মাঠ ছাড়েন মুর্শিদা। তবে আরেক ওপেনার দিলারার ব্যাট থেকে আসা ২৭ রানই ছিল দলের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। বাকি আর কেউই ব্যাট হাতে শক্তভাবে দাঁড়াতে পারেননি। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি করেছেন ১০ বলে মাত্র ১ রান।
পুরো ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেট হারিয়ে দলীয় ১০৩ রানেই আটকে যায় জ্যোতিরা। এই জয়ের মাধ্যমে তিন ম্যাচ সিরিজে টানা দুই ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল অস্ট্রেলিয়া। ৪ এপ্রিল সিরিজের শেষ ম্যাচে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়াতে মিরপুরের মাঠে নামবে বাংলাদেশের মেয়েরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
অস্ট্রেলিয়াঃ ১৬১/৮ (২০ ওভার); জর্জিয়া ৫৭, হ্যারিস ৪৭; তৃষ্ণা ৪-১৯, নাহিদা ২-২১।
বাংলাদেশঃ ১০৩/৯ (২০ ওভার); দিলারা ২৭, স্বর্ণা ২১; সোফি ৩-১০, গার্ডনার ৩-১৭।
ফলাফলঃ অস্ট্রেলিয়া ৫৮ রানে জয়ী।
সিরিজঃ ২-০ তে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে অলআউট করে দিতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে শুরুর এক ঘণ্টায় একটা উইকেটও তুলতে পারেনি স্বাগতিকরা। তাতে সফরকারীদের লিড ১০০ পেরিয়ে যায়। ঠিক এরপরই হাসান মাহমুদ আঘাত হানেন, জোড়া উইকেট তুলে নেন এক ওভারেই। তবে এরপরও অবশ্য সেশনটা নিজেদের করে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেশন শেষ করেছে ৮ উইকেট খুইয়ে ২৪৩ রান তুলে।
সকাল থেকে বাংলাদেশ কিছু সুযোগ তৈরি করছিল। ভিয়ান মুলডার আর কাইল ভেরেইনার ব্যাটের কোণা ছুঁয়ে বল বেরিয়ে গেলেও তা পড়ছিল ফিল্ডারদের একটু সামনে।
যে একটা বল হাতে গেছে, সেটাও রাখা যায়নি। নাঈম হাসানের বলে মুলডার ক্যাচ দিয়ে বসেছিলেন মুমিনুল হককে, তা হাত গলে বেরিয়ে যায় তার। দক্ষিণ আফ্রিকার লিডটা তাই কেবল বেড়েই চলেছিল।
তিন অঙ্ক বহু আগেই পেরিয়ে গিয়েছিল লিডটা। এর কিছু পরে হাসান আঘাত হানলেন। ১১৯ রানের জুটিটা ভাঙেন মুলডারকে সাদমান ইসলামের ক্যাচ বানিয়ে। ৫৪ রান করে ফেরেন প্রোটিয়া অলরাউন্ডার।
পরের বলে আবারও হাসানের সাফল্য। দারুণ এক বলে উপড়ে ফেলেন কেশভ মহারাজের স্টাম্প। তাতে তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের কাছেও। তবে শেষমেশ তা হয়নি, ড্যান পিয়েট বলটা ঠেকিয়ে দেন ভালোভাবেই।
প্রথম সেশনে উইকেটের সুযোগ আরও এসেছিল। ৬৯তম ওভারের শেষ বলে ওপাশে কাইল ভেরেইনার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয় পিয়েটের, পিয়েট মাঝ পথে চলে এসেছিলেন পিচের, তবে বোলার হাসান মাহমুদ থ্রোটা ঠিকঠাক করতে পারেননি। ফলে আর উইকেটের দেখাও মেলেনি। বাংলাদেশ সেশনটা শেষ করেছে হাসানের ওই দুই সাফল্য নিয়েই।
আগের দিন ফাইফার পাওয়া তাইজুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে এসে জানিয়েছিলেন, যত দ্রুত সম্ভব দক্ষিণ আফ্রিকাকে অলআউট করতে চান। আর দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসো রাবাদা জানিয়েছিলেন লিডটা নিদেনপক্ষে ১০০ রানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যের কথা।
রাবাদার চাওয়াই পূরণ হতে চলেছে আজ। দ্বিতীয় দিন সকালেই তিন অঙ্কের লিডের খুব কাছে চলে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
শুরুর এক ঘণ্টায় বাংলাদেশ তেমন কার্যকর সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। যার ফলে সফরকারীরা রান তুলেছে অনায়াসে।
দ্বিতীয় দিনের শুরুর এক ঘণ্টায় ১৪ ওভার হয়েছে। এ সময় দক্ষিণ আফ্রিকা রান তুলেছে ৫২, বাংলাদেশ একটা উইকেটের দেখাও পায়নি। সফরকারীদের রান গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৯২ রানে, তিন অঙ্কের লিডের জন্য আর চাই ১৪ রান।
ক্রিকেট
মিরপুর টেস্ট–২য় দিন
বাংলাদেশ–দক্ষিণ আফ্রিকা
সকাল ১০টা টি স্পোর্টস, গাজী টিভি
ইমার্জিং এশিয়া কাপ
আফগানিস্তান ‘এ’–হংকং
বিকেল ৩টা স্টার স্পোর্টস ১, পিটিভি স্পোর্টস
বাংলাদেশ ‘এ’–শ্রীলঙ্কা ‘এ’
সন্ধ্যা ৭–৩০ মিনিট স্টার স্পোর্টস ১, পিটিভি স্পোর্টস
ফুটবল
এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ
এস্তেগলাল–আল নাসর
রাত ১০টা স্পোর্টস ১৮-১ ও টি স্পোর্টস
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ
এসি মিলান–ক্লাব ব্রুগা
রাত ১০–৪৫ মিনিট সনি স্পোর্টস টেন ২
রিয়াল মাদ্রিদ–বরুসিয়া ডর্টমুন্ড
রাত ১টা সনি স্পোর্টস টেন ২
আর্সেনাল–শাখতার দোনেৎস্ক
রাত ১টা সনি স্পোর্টস টেন ১
পিএসজি–পিএসভি
রাত ১টা সনি স্পোর্টস টেন ৫
জুভেন্টাস–স্টুটগার্ট
রাত ১টা সনি স্পোর্টস টেন ৩
দলে বড় তারকা থাকলে আর সবাই ম্লান হয়ে যায়, তাদের সুযোগও কমে যায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটে যেমন আছে, এমন নজির আছে বিশ্বের অনেক দলেও। শেন ওয়ার্নের সময়ে স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল, কিংবা মুত্তিয়া মুরালিধরনের সময়ে রঙ্গনা হেরাথ… এমন নজিরের অভাব নেই।
তবে সাকিব আল হাসানের সময়ে তাইজুল ইসলামও সুযোগ পেয়েছেন একটু কম। এই সবশেষ দুই সিরিজই ধরুন না! পাকিস্তান আর ভারত সফর মিলিয়ে চার টেস্টে একটাতে খেলেছেন তিনি। বাকিগুলোতে তিনি ছিলেন না ‘কম্বিনেশনের’ কারণে।
তবে কম্বিনেশনের বিষয়টা মেনে নিয়েছেন তিনি, তা সত্ত্বেও ক্যারিয়ারটা খুব খারাপ নেই, অভিমত তাইজুলের। তিনি বলেন, ‘ক্যারিয়ার যে খুব খারাপ আছে তাও বলব না। আলহামদুলিল্লাহ ক্যারিয়ার ভালো আছে। সব কন্ডিশনে সবসময় ৩ স্পিনার খেলাতে পারবেন না। অনেক জায়গায় ১ স্পিনার থাকে। এরকম হয়নি যেখানে ৩ স্পিনারের জায়গায় ১-২ জন খেলিয়েছে। কখনও দলে থাকা কখনও বাদ পড়া… আমার যতদিনের ক্যারিয়ার তাতে ম্যাচ আরও বেশি হওয়া উচিৎ ছিল। সে জায়গা থেকে হয়নি আরকি।’
সাকিব থাকার সময়ে এমনটা তার সঙ্গে হয়েছে বেশ অনেক বারই। তবে তাইজুল এবার তার সুযোগ দেখছেন। এক্ষেত্রে তিনি রঙ্গনা হেরাথকে মানছেন উদাহরণ হিসেবে।
এই হেরাথের সঙ্গে তাইজুলের আবার গুরু-শিষ্যের সম্পর্কও আছে। হেরাথ এই ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত দলের স্পিন কোচ ছিলেন। সেই তার মতোই এবার হতে চাইলেন তাইজুল। বললেন, ‘বঞ্চিত বলতে চাই না। বিশ্বে অনেকে আছে, বড় খেলোয়াড় ছিল, তারা খেলার সময় অন্যরা সুযোগ কম পেত। মুরালিধরনের সময় হেরাথ খেলতে পারেনি। হেরাথ অনেক উইকেট পেয়েছে, দীর্ঘদিন খেলেছে। আমিও ইনশাআল্লাহ… সামনে দেখি ভালো কিছু হয় নাকি।’
তাইজুল আজ একটা রেকর্ডও গড়েছেন। তবে তিনি পা রাখলেন মাটিতেই। বললেন, ‘অনুভূতি অবশ্যই ভালো লাগার বিষয়। বিশ্বে অনেক বোলারই আছে, ২০০-৩০০-৪০০ উইকেট। বাংলাদেশে আমরা এতদিন টেস্ট খেলি না। তাও যে ২-১ জন আছি তার মধ্যে আমিও একজন। গর্বের বিষয় না, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ দিয়েছে তাই হয়েছে।’
এই গেল বছরই তাইজুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন নিদেনপক্ষে ৩৫০ উইকেট নেওয়ার স্বপ্নের কথা। ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়ে এখন তার স্বপ্নটা কি ওখানেই আছে?
বয়সটা যে ৩৩ ছুঁয়ে ফেলছে! আর হয়তো ৫ বছর মতো খেলবেন। এই সময়ে সে লক্ষ্য ছোঁয়া যাবে তো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি দিলেন সোজাসাপটা উত্তর। বললেন, ‘আগে দেখতে হবে ৫ বছরে কয়টা টেস্ট আছে, তারপর একটা হিসাব করে উত্তর দিতে পারব। এখন উত্তর দেওয়া কঠিন। টেস্ট যদি থাকে ১০টা তাহলে তো কঠিন!’