ওয়ানডের ক্ষত ভুলে টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
ওয়ানডের ক্ষত ভুলে টোয়েন্টিতে জয়ের জন্য মাঠে নামছে বাংলাদেশ। শুক্রবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানদের বিপক্ষে মাঠে নামবে টাইগাররা।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে ছয় ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে তিন ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের নজিরও আছে টাইগারদের। এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি দুর্বল বলে বিবেচিত বাংলাদেশের এমন পারফরমেন্স প্রমাণ করে সংক্ষিপ্ত ভার্সনে উন্নতি করছে টাইগাররা।
এবার এমন একটি দলের বিপক্ষে খেলতে নামছে বাংলাদেশ, যাদের বিপক্ষে খুব বেশি সাফল্য নেই তাদের। এই ফরম্যাটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৯টির মধ্যে ৩টিতে জয় ও ৬টিতে হেরেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৮ ও ৭ উইকেটে জয় পেয়েছিলো আফগানিস্তান। এমন ফল আফগানদের আধিপত্যকে ফুটিয়ে তুলে। কিন্তু শেষ পাঁচ লড়াইয়ের মধ্যে দু’টি জয় পায় বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে মোট তিনটি জয়ের মধ্যে দু’টিই সাম্প্রতিক সময়ে পেয়েছে টাইগাররা। এই সিরিজেই পরিসংখ্যান পাল্টে দেওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
তিনি জানান, ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য একটি শক্তিশালী দল তৈরি করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ধারাবাহিকতা অ্যাবহত রাখা।
সাকিব বলেন, এই ফরম্যাটে আমরা উন্নতি করছি, যা আমাদের সাম্প্রতিক পারফরমেন্সে ফুটে উঠেছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আমরা কিছু ম্যাচ জিতেছি। আমরা সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তান কঠিন প্রতিপক্ষ এবং ভিন্ন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিবে। আমাদের মনে রাখতে হবে টি-টোয়েন্টিতে বড় বা ছোট দল বলে কিছু নেই। আমরা ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছি। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের কাছে একটি ম্যাচ হেরেছি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজের দু’টি ম্যাচই জিততে চাই এবং এই ফরম্যাটে আমাদের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজের একমাত্র টেস্টে রেকর্ড ৫৪৬ রানের ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। কিন্তু তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। যা ২০১৫ সালের পর ঘরের মাঠে তৃতীয় সিরিজ হার বাংলাদেশের। ইংল্যান্ডের পর আফগানিস্তানই একমাত্র দল যারা বাংলাদেশকে ঘরের মাঠে সিরিজ হারের লজ্জা দিয়েছে।
ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানের পেসার ফজলহক ফারুকি এবং দুই স্পিনার রশিদ খান ও মুজিব উর রহমানের খেলতে হিমশিম খেয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। মূলত এই তিন বোলারই ম্যাচের গতিপথ ঠিক করে দিয়েছে । বিশেষ করে রশিদকে খেলতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হয়েছে বাংলাদেশি ব্যাটাররা।
ঘরের মাঠে নিজেদের পছন্দের কন্ডিশনে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ব্যর্থ ছিলো বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে জ্বলে উঠে ৭ উইকেটের সান্তনার জয়ে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের হাত থেকে রক্ষা করে তারা। শেষ ওয়ানডেতে বিশ্রামে ছিলেন রশিদ। এই অবস্থায় নিজের প্রিয় ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে ফিরছেন বর্তমানে টি-টোয়েন্টির এক নম্বর বোলার রশিদ।
রশিদের ফিরে আসায় চিন্তিত নন সাকিব। তিনি জানান, কোন নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কে নিয়ে খুব বেশি ভাবছেন না। সেরা পারফরমেন্স দিয়ে নিজেদের মেলে ধরতে চান।
তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ, কোন নির্দিষ্ট খেলোয়াড় বা কন্ডিশন নিয়ে বেশি ভাবলে আমরা ভালো খেলতে পারবো না। কিভাবে ভালো পারফরমেন্স করা যায় সেটি নিয়েই ভাবছে খেলোয়াড়রা ভাবছে বলেই আমার বিশ্বাস। কোন খেলোয়াড় বা প্রতিপক্ষ নিয়ে বেশি ভাবছে না তারা।
সিলেটে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় টি-টোয়েন্টি সিরিজের দু’টি ম্যাচই বৃষ্টির কবলে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
বাংলাদেশ দল
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামিম হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন চৌধুরী, শরিফুল ইসলাম, রিসাদ হোসেন ও আফিফ হোসেন ধ্রুব।
আফগানিস্তান দল
রশিদ খান (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ, মোহাম্মদ শাহজাদ, হজরতুল্লাহ জাজাই, ইব্রাহিম জাদরান, সেদিকুল্লাহ আটাল, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি, করিম জানাত, আজমাতুল্লাহ ওমরজাই, মুজিব উর রহমান, ফজল হক ফারুকি, ফরিদ আহমেদ, নবীন-উল হক, নূর আহমদ ও ওয়াফাদার মোমান্দ।