ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় প্রায় ১১ লাখ মানুষের আশ্রয়ের জন্য ৬ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ মঙ্গলবার (১৯ মে) রাতে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে আঘাত হানাতে পারে। এমন খবরে সম্ভাব্য ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে বরিশাল বিভাগে এসব আশ্রয়কেন্দ্রের প্রস্তুতি করাসহ জনসাধারণকে সতর্ক করার জন্য চলছে মাইকিং।
আরো জানা গেছে, গেল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময় বিভাগে ২ হাজার ৪০০ আশ্রয়কেন্দ্রে ১১ লাখ মানুষকে জায়গা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চলমান করোনা পরিস্থিতি করোনার কারণে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে ।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. ইয়ামিন চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বিভাগীয় প্রশাসন।
ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগে ৬ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ১১ লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, উপকূলীয় এলাকায় বেশকিছু ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রয়েছে। সেসব এলাকার মানুষকে এরই মধ্যে সতর্ক করা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা যেন আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে যায়, সে বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তারা নিজ নিজ কর্মস্থল জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে কাজ করছে।
আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থাকার উপযোগী এবং পর্যাপ্ত খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান এই বিভাগীয় কমিশনার।
মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুরে বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে । তবে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রবল গতি ও হাওয়ার ধারণা অনুযায়ী বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় ৪১৮ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানান বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাক্তার বাসুদেব কুমার দাস।
বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াই শুধু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নয়, এটি আমাদের সবার দায়িত্ব। যার বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজের সহযোগিতা অপরিহার্য বলে মনে করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে সিএসও অ্যালায়েন্সের আয়োজনে ‘নাগরিক সমাজ : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক জাতীয় মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সংস্কারে নিজেদেরও পরিবর্তন করতে হবে। সরকারের কোনও উদ্যোগে ঘাটতি থাকলে তা উল্লেখ করতে হবে। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সরকার ও বিভিন্ন কমিশন আলাপ-আলোচনা করছে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন আন্দোলনকারীদের মুখপাত্রদের সাথে কথা বলা হচ্ছে। সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে হবে। প্রথাগত সরকার থেকে বর্তমানে সবকিছু ভিন্নভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি সংস্থার অবদান রাষ্ট্রের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কমিউনিটির বন্ধন আরও দৃঢ় করতে হবে।
জিএনসিসির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পরবর্তী কেবিনেটে এ বিষয়ে কথা হবে। এনজিওগুলোর আত্মনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে। এনজিও ব্যুরোকে স্বচ্ছ হতে হবে। আমাদের নিজেদের পরিচয় ধরে রাখতে হবে। সমষ্টিগতভাবে ভাবতে হবে। নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি সংস্থাকে অগ্রাধিকার ঠিক করে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, ক্যাম্পের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহসহ অন্যান্য অতিথি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
এই অনুষ্ঠানে নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) গুরুত্বপূর্ণ অংশীদাররা অংশগ্রহণ করেন।
রংপুরে পিঠার পসরায় জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। আশ্বিনের শেষ না হতেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে মৌ মৌ করছে পিঠার ঘ্রাণ। মাটির চুলায় গরম ভাপে চালের গুড়া,গুড়,নারিকেল দিয়ে তৈরি করে রাখা হচ্ছে ভাপা পিঠা। আগাম ভাপা পিঠা খেতে রসনা প্রেমীরা ভিড় জমাচ্ছেন দোকানে। দূর থেকে ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠার ঘ্রাণ দুয়ারে কড়া নেড়ে জানান দিচ্ছে শীতের বার্তা।
রংপুর নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিকেল থেকে এক চাকার ছোট্ট ভ্যানে ভাপা পিঠার পসরা সাজিয়ে প্রতিপিস বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা৷ অল্প পুঁজি নিয়ে ৪-৬ কেজি চাল,৫-৬ টি গুড়ের ডিমা কিছু নারিকেল দিয়ে পিঠা তৈরি করে বেশ সাড়া পাচ্ছেন বিক্রেতা। দৈনিক বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা, এতে উপকরন খরচ বাদ দিয়ে লাভও হচ্ছে বেশ।
নতুন মৌসুমের পিঠা দেখে সখ করে কিনে খাচ্ছেন,পরিবারের জন্যও নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা।
লোভনীয় স্বাদে তৃপ্তি নিয়ে পিঠা খেতে আসা ক্রেতা রাকিব বলেন, বাঙ্গালির চিরায়ত পিঠার তালিকায় অন্যতম ভাপা। নতুন চালের গুড়াো গুড়,আর নারিকেলের ঘ্রাণে জিভে জল আসে। পিঠা না খেয়ে যেন উপায় নেই। গতবারের দরে ১৫ টাকা করেই আছে। কেবলই চুলা থেকে নামিয়ে গরম পিঠা দিলেন খুব স্বাদ লাগছে।
ধোঁয়া ওঠা পিঠার দৃশ্য দেখে চলতি রিকশা থামিয়ে পিঠা কিনছেন ক্রেতা সুলতানা। তিনি বলেন, শীত পুরোপুরি না নামতেই ভাপা পিঠা দেখেই আনন্দ লাগছে। পিঠা খাবোনা তাই কি আর হয়? শহরে থাকা হয় কাজের ব্যস্ততায় মাঝে এত কষ্ট করে পিঠা বানানো হয়ে উঠে না। পরিবারের চাহিদা মেটাতে বেশি করে নিয়ে যাচ্ছি। এই মৌসুমে আজকেই প্রথম পিঠা খাওয়া হবে পরিবারের সবাই মিলে খুব আনন্দ নিয়ে খাবো। সবকিছুর দাম বাড়লেও পিঠার দাম গতবছরের মতই আছে ১৫ টাকা দরে।
রংপুর নগরীর প্রেসক্লাব সংলগ্ন মৌসুমে পিঠা বিক্রেতা আল-আমিন বলেন, আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি শীত মৌসুমে পিঠার দোকান দেই। অল্প কিছু পুঁজি নিয়ে দোকান দিয়েছি। বাসা থেকে পিঠা বানানোর সব উপকরণ এনে বিকেল থেকে দোকান দেই। নতুন নতুন ভাপা পিঠা দেখে ক্রেতারা চাহিদা করে খাচ্ছে। আবার বাসায় নিয়ে যাচ্ছে। দৈনিক ৪-৫ কেজি কখনো ৬ কেজি চালের আটা শেষ হয়। আস্তে আস্তে আরও বাড়াবো। দিনে ১৫০০-১৬০০ টাকা বিক্রি হয়৷ মৌসুমে যে টাকা ব্যবসা করি এই লাভ দিয়ে বাবার ব্যবসায় যোগান দেয়া যায়, আমারও লেখাপড়ার খরচ,বাড়ির একটা ঘাটতি পূরণ হয়। ৩-৪ দিন হয় দোকান দিছি বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিসিএস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজশাহীতে বিজিপি সদর দফতর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী সরকারের নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে হবে, তবে এটি পৃথকভাবে সমাধান করা যাবে না। যারা মেধার ভিত্তিতে চাকরিতে যোগদান করেছেন এবং যারা অন্য উপায়ে প্রবেশ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের যোগদানে বিলম্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ পুরোদমে কাজে ফিরতে পারেনি, যা সত্যি। ৫ আগস্টের পর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, কিন্তু তাদের মধ্যে এখনও মানসিক চাপ কাজ করছে। উন্নতি ধীরগতিতে হলেও এগিয়ে যাচ্ছে।
কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ এবং সারের দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারের ক্ষেত্রে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে, এর তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এবং ইতোমধ্যেই দুই-একজনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বিজিপির সিইও, সিনিয়র সচিব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটস পার্টি (এলডিপি)।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টায় এলডিপির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল অলি আহমদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যমুনায় প্রবেশ করেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার।
সংস্কারপ্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে শনিবার (১৯ অক্টোবর) চতুর্থ দফায় আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এই সংলাপে গণফোরামের ও এলডিপি’র পাশাপাশি জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দল, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে।