সুপার সাইক্লোন আম্পান দুই দিন আগে তাণ্ডব চালালেও তার প্রভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ এখনও সচল হয়নি যশোর ও রংপুরসহ দেশের অনেক এলাকায়।
ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যশোর জেলা। সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিলম্বিত হওয়ার কারণ খুজে পাওয়া গেলেও রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকেই।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে চেষ্টা করেও সংশ্লিস্ট সমিতির নম্বরে ঢুকতে পারছেন না। এ কারণে ঠিক কবে নাগাদ বিদ্যুৎ পাবেন সে নিয়েও এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যে। বিদ্যুৎ না থাকায় বাসা-বাড়ির ফ্রিজে ঈদের জন্য মজুত করা খাবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মানুষজন।
ঘূর্ণিঝড়ের খুব একটা তাণ্ডব ভোগ করতে হয়নি উত্তরের জেলা রংপুরকে। জেলার বাসিন্দা আল ইমরান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের এলাকায় (চতরা ও বড়ভগবানপুর) ঝড় শুরুর অনেক আগেই বুধবার সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ চলে গেছে। এরপর থেকে আর বিদ্যুতের দেখা মেলেনি। বিদ্যুৎ বিলের কাগজে যে নম্বর রয়েছে সেই নম্ববে শতবার চেষ্টা করেও অভিযোগ কেন্দ্রের কাউকে পাইনি। অথচ আমাদের এলাকায় সেই অর্থে কোন ঝড়ই হয়নি।
পরিহাস করে ইমরান বলেন, আমাদের এলাকায় একটি কথা প্রচলিত রয়েছে যে, আকাশে মেঘ দেখলে বিদ্যুৎ চলে যায়!
বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে জানতে অনেকবার ফোন দিলেও রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার ফোন রিসিভ করেননি।
সবচেয়ে করুণ অবস্থা যশোর অঞ্চলের। এই জেলার অধিকাংশ গ্রাহকই এখনও অন্ধকারে রয়েছেন। কেশবপুর উপজেলা এখনও পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছে। আরও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিক হবে কিনা সেই গ্যারান্টি দিতে পারছেন না কেউ।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী অরুণ কুমার কুন্ডু বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের সমিতি এলাকায় ২৬০টি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। এমন কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে বুক পরিমাণ পানিতে তলিয়ে আছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রায় এক হাজার কর্মী নিয়োগ করেছি দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করার জন্য।
তিনি বলেন, লোহাগড়া, নড়াইল এলাকায় ৫০ শতাংশ এলাকায়, মনিরামপুরে ২০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়েছে। কেশবপুর উপজেলায় এখনও (রাত ৮টা) পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করা সম্ভব হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি রাতে একবার ট্রায়াল দেওয়ার। চেষ্টা করছি শনিবারের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য।
বৃহস্পতিবার আরইবি সূত্র জানিয়েছিল, তারা দিনের মধ্যে ৯০ শতাংশ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাদের সেদিন অগ্রগতি হয়েছে ৭০ শতাংশ। শুক্রবার দিনের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছে। রাত ১০টা নাগাদ ৯৯ শতাংশ সচল করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে, তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ঈদের আগে বিদ্যুৎ পৌঁছানোটাই এখন চ্যালেঞ্জ মনে করছেন অনেকে।
ওজোপাডিকোর প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের মহেশখালী ও সাধুহাটি এলাকা বিদ্যুতের বাইরে রয়েছে। কাজ চলমান রয়েছে রাতের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি। কুষ্টিয়ার বিকল্প সোর্স দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। মেইন সোর্সের কাজ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। মেইন সোর্সের কাজ শেষ হলে মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হবে। কোম্পানিটি খুলনা, বরিশাল ও ফরিদপুর বিভাগের ২১ জেলা ও ২০ উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ বিতরণ করে আসছে।
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আলী হাসান মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (১৯ অক্টোবর)সকালে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মুন্নাফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার মো. আরশাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ঢাকার খিলক্ষেত থানায় আলী হাসান মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় লক্ষ্মীপুরের পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম আলী হাসান মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার বাদী মো. আরশাদ হোসেন কুষ্টিয়া জেলা সদরের জুগিয়া গ্রামের মৃত আকবর হোসেনের ছেলে বলে জানা গেছে।
মো. আবদুল মুনাফ বলেন, বৃহস্পতিবার সারাদেশে পল্লী বিদ্যুৎ ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি দিয়ে দেশে অস্থীতিশীল করার পাঁয়তারা করা হয়। এঘটনায় আরিফুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলায় সেনাবাহিনী তাকে গ্রেফতার করে থানায় সোর্পদ করা হয়। রাতেই তাকে ঢাকার খিলক্ষেত থানায় পাঠানো হয়েছে।
আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার অভিযোগ রয়েছে মো.ফয়সাল নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য ১২টি মামলাও রয়েছে।
অভিযুক্ত মো.ফয়সাল ভূঁইয়া (৪৩) জেলার সদর উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং একই ইউনিয়নের চরকাউনিয়া গ্রামের মোকারম ভূঁইয়ার ছেলে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর তিনি গা ঢাকা দেন।
গত ৭ অক্টোবর ফয়সালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন, মতিউর রহমান সাজ্জাদ নামে এক ভুক্তভোগী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, উপজেলার ১৯ নং পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নে আওয়ামী রাজনীতির ছত্রছায়ায় গত ১৫-১৬ বছর ফয়সাল এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে প্রতিনিয়ত এলাকার জনগণকে জিম্মি করে রেখেছিল। অস্ত্রের মহড়া দিলেও স্থানীয় লোকজন তার বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায়নি।
লিখিত অভিযোগে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০১৭ ও ২০২০ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে দুটি পৃথক মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এলাকায় মাদক বেচাকেনার সিন্ডিকেড নিয়ন্ত্রণও ছিল তার হাতে। সে মাদক সেবন ও বিক্রি করে এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংস করে ফেলেছে। ২০২৩ সালে মাদক বিক্রি ও সেবনের সময় সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নাতে ধরা পড়ে। পরে তাকে একটি মাদক মামলায় গ্র্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। তার বিরুদ্ধে সুধারামা থানায় ১২টি মামল রয়েছে।
মতিউর রহমান সাজ্জাদ বলেন, ২০২১ সালে ফয়সেল আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুম করে একদিন আটক করে রাখে। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। তার কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
ভয়ে নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে রাজি নন জানিয়ে একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনসহ বেশ কয়েকটি স্থানীয় নির্বাচনে ফয়সাল ও তার অস্ত্রধারী ক্যাডারদের ভয়ে মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। অনেকেই ভোট দিতে যাননি প্রাণনাশের ঝুঁকি থাকায়। বেপরোয়া ছিল ফয়সাল ও তার অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.ফয়সাল ভূঁইয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুল ইসলাম এবিষয়ে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী ইকরামুল হত্যা মামলায় ঢাকা-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কামাল আহমেদ মজুমদারকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
এর আগে রাজধানীর গুলশান থেকে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টার দিকে নিজ বাসা থেকে কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেফতার করে কাফরুল থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, শুক্রবার রাতে গুলশান এলাকা থেকে কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেকটায় স্বস্তি নেমে এসেছিলো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে। তবে সে স্বস্তি অস্বস্তি হতে সময় লাগেনি বেশি। দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। বেয়াড়া হয়ে ওঠা সে বাজারকে নানা কসরতেও বাগে আনতে পারছে না সরকার।
দ্রব্যমূল্যের ব্যাপক বৃদ্ধির পিছনে নানা রকম হাতবদল কে দুষছেন বিশেষজ্ঞরা। বাস্তবেও পাওয়া যায় তার সত্যতা। উৎপাদনকারী থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পণ্য হাতে পৌঁছাতে পার করতে হয় বেশ কয়েকটি ধাপ। এর মধ্যে প্রথমেই উৎপাদনকারী থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ী, ব্যাপারী, ফড়িয়া, পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজার হয়ে পণ্য পৌঁছায় ভোক্তার হাতে। এতে করে প্রতিটি ধাপে লাভ ও খরচ মিলিয়ে উৎপাদনকারী হতে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রায় কয়েকগুণ বেড়ে যায় পণ্যের দাম।
সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে গবেষণা পরিচালনা করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। তাদের গবেষণায় দক্ষ বাজার ব্যবস্থা পণ্যমূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি।
এছাড়াও পণ্য উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, বাজার আধিপত্য প্রভৃতি কারণে স্থানীয় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। কৃত্রিম সংকট, ঋণপত্র খোলায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা, টাকার মূল্যমান হ্রাস, সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থায় অদক্ষতা প্রভৃতি বিষয় পণ্যমূল্য ওঠানামায় ভূমিকা রাখছে বলে জানায় সংস্থাটি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের এমন বেয়াড়া হয়ে ওঠার পরও অভিযোগ আছে কৃষক ন্যায্যমূল্য না পাবার। কৃষক ও ভোক্তার মাঝে দামের এমন পার্থক্যের কারণ অনুসন্ধানে গিয়ে পাওয়া গেছে চোখ কপালে ওঠার মত তথ্য। কারওয়ান বাজার পাইকারি মোকাম থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসতে আসতে বেড়ে যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত দাম। আরেকটু দূরে মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে এসে তা হয়ে যাচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি।
সরেজমিনে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার ও শেওড়াপাড়া বাজার ঘুরে পাওয়া গেছে এমনই চিত্র। এসময় একটি লাউয়ের দাম কারওয়ান বাজারে পাইকারি মূল্যে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেলেও এর থেকে পঞ্চাশ গজ দূরে রাস্তায় সে একই লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। আবার এটি টাউন হল ও শেওড়াপাড়া বাজারে এসে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
শুধু লাউ নয়, প্রায় প্রতিটি পণ্যেই দেখা গেছে মূল্যবৃদ্ধির একই রকম চিত্র। এদিন কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি ঢেড়স ৪৫-৫০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০-৯০ টাকা বিক্রি হলেও কারওয়ান বাজার খুচরা মূল্যে যথাক্রমে ঢেড়স ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়। একই পণ্য টাউন হল বাজারে যথাক্রমে ১২০, ১২০ ও ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়।
এছাড়াও বড় পার্থক্য দেখা যায় আদার দামে। কারওয়ান বাজারে পাইকারি দোকানে প্রতি কেজি আদা ২০০-২৫০ টাকা, খুচরায় ২২০-২৭০ টাকা ও মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে ৩০০-৩৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। আলু, পেয়াজ ও রসুনের দামেও ছিলো বড় পার্থক্য। প্রতিটি পণ্যের মূল্যেই ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত ব্যবধানে বিক্রি হতে দেখা যায়।
গত ১৭ অক্টোবর কারওয়ান বাজারে ন্যায্যমূল্যে অত্যাবশকীয় কৃষিজাত দ্রব্যাদি বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধনে গিয়ে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, এসব সিন্ডিকেট প্রতিদিন ‘নতুন নতুন পদ্ধতি’ আবিষ্কার করে। সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য এই সরকারের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই। শুধু তথ্য উপাত্ত আর আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তবে এমন হুশিয়ারিতেও বাগে আসছে না দ্রব্য মূল্য। বরং পকেট ভর্তি টাকা নিয়েও বাজারের ব্যাগ অর্ধেক খালি রেখেই ফিরতে হচ্ছে বাসায়। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই সবজি রান্নায় অনেকটা কৃচ্ছতা সাধণ করছেন গৃহিণীরা। সেই সঙ্গে কমেছে জনপ্রতি ক্যালোরি গ্রহণের মাত্রাও।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি নিয়ে কনজিউমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বার্তা২৪.কম কে বলেন, এটা কমাতে হলে আমাদের আইনের প্রয়োগ গঠাতে হবে। আমরা যদি আইনের প্রয়োগ যথাযথভাবে ঘটাতে পারি তাহলেই দ্রব্যমূল্যের দাম কমে আসবে। আরেকটা জিনিস করতে হবে, সেটা হচ্ছে হাত বদল বন্ধ করতে হবে। হাত বদল যত কম হবে পণ্যের দামও ততো কম হবে।
দ্রব্যমূল্য সিন্ডিকেটমুক্ত করতে সরকারের বিকল্প ব্যবস্থা করা উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারে উচিত বিকল্প ব্যবস্থাটা আরও শক্তিশালী করা। এখন ট্রাকে করে সবজি যেটা বিক্রি করছে সেটার পরিমাণও বৃদ্ধি করা উচিত। এছাড়াও কৃষক যেনো সরাসরি বাজারে এনে ভোক্তার কাছে তার পণ্যটা দিতে পারে সে ব্যবস্থাও সরকারকে করতে হবে।
সরকারের প্রায়োরিটি লিস্টে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নেই উল্লেখ করে এস এম নাজের হোসাইন বলেন, সরকার অনেক কিছু নিয়ে ব্যস্ত। সেগুলোও করতে হবে তবে সবার আগে সরকারের উচিত ছিলো এই দিকে নজর দেয়া। যদি সরকার এই দিকে নজর দিতো তাহলে সেটা আরও দ্রুত সরকার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারতো। আমরাও সেটা দেখতে পারতাম।