জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া দীর্ঘ ৮ মাস ধরে কোনো প্রকার বেতন ভাতা দিতেন না। এমনকি তিনি সঙ্গীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করতেন। এসবের ক্ষোভ থেকে আকাশ মন্ডল ইরফান জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনা দেখে ফেলায় পরে সবাইকে হত্যা করেন তিনি।
গ্রেফতারের পর ইরফান র্যাব-১১ এর প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দেন বলে জানান, র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য দিয়ে র্যাব দাবি করে, জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া দীর্ঘ ৮ মাস ধরে কোনো প্রকার বেতন ভাতা দিতেন না এমনকি তিনি দুর্ব্যবহারও করতো। এসবের ক্ষোভ থেকে আকাশ মন্ডল ইরফান সবাইকে হত্যা করেন।
র্যাব আরও জানায়, জাহাজের বাজার করতে ইরফান পাবনার একটি বাজারে নেমেছিল। সেখান থেকে তিনি ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ কেনেন। আর যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সেটি আগেই জাহাজেই ছিল। কুড়ালটি জাহাজের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছিল।
র্যাব দাবি করে বলে, ইরফান প্রথমে খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সবাইকে অচেতন করে। পরে হাতে গ্লাভস পড়ে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর সবাইকে কোপানোর পর মৃত্যু নিশ্চিত করে নিজে জাহাজ চালিয়ে হাইমচর এলাকায় এসে অন্য একটি ট্রলারে করে পালিয়ে যান।
র্যাবের ভাষ্য, মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার সময় অন্যরা দেখে ফেলায় ইরফান তাদেরও হত্যা করেন।
এর আগে আকাশ মণ্ডল ইরফানকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
এদিকে ইরফান ঘটনার দিন ওই জাহাজেই ছিলো বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলো সে।
মামলার বাদী মাহবুব মুর্শেদ এজহারের বিবরণে উল্লেখ করেন, আহত জুয়েল গলায় কাটা রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত হয়ে কথা বলতে না পারায় ডাকাত দলের বিস্তারিত বিবরণ দিতে পারেনি। সে সুস্থ হলে ডাকাতদল দেখলে চিনবে বলে ইশারায় জানায়। তবে জুয়েলের সাথে ৯ জন ছিলো লিখে জানায়। ৯ নম্বর ব্যক্তির নাম ইরফান। তবে তার ঠিকানা দিতে পারেনি।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ৭ জন হত্যার ঘটনায় জেলার হাইমচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন জাহাজ মালিক মাহবুব মোর্শেদ।
বাদী মামলার এজহারে জাহাজে থাকা ৭ জনের খুন হওয়ার বিবরণে আহত ও খুন হওয়া ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করেন। খুনের শিকার ব্যক্তিরা হলেন- জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার আজিজুল ও মাজেদুল, রানা কাজী এবং লস্কর সবুজ শেখ। তাদের বাড়ি নড়াইল ও ফরিদপুর জেলায়। এছাড়া আহত ব্যক্তি হলেন-সুকানী মো. জুয়েল (২৮)। তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের সেকান্দর প্রকাশ সেকেন্ড খালাসীর ছেলে।
প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের পশ্চিমে মেঘনা নদীর পাড়ে মাঝিরচর এলাকায় থেমে থাকা একটি জাহাজ থেকে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে পাঁচজনের মরদেহ এবং তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে দুই জন মারা যান।
বিশ্বের বায়ু দূষণের তালিকার শীর্ষ দশ থেকে বের হতে পারছে না রাজধানী ঢাকা। শীত আসলে এর তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবারও ২৩২ স্কোর নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল ঢাকা। এদিকে আজও ঢাকার বায়ুমানের কোনো উন্নতি হয়নি। আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার'র তথ্য অনুযায়ী, আজ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ঢাকার বাতাসের মান নাগরিকদের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আইকিউএয়ার থেকে জানা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। বায়ু দূষণের তৃতীয় স্থানে থাকা ঢাকার স্কোর ১৮৯। অর্থাৎ এখানকার বাতাসের মান নাগরিকদের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’।
এতে আরও বলা হয়, প্রথম স্থানে ইরাকের বাগদাদ শহরের দূষণ স্কোর ২৭২ অর্থাৎ সেখানকার বাতাসও খুবই অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের শহর দিল্লি। এই শহরটির দূষণ স্কোর ২৬৫ অর্থাৎ সেখানকার বাতাসও খুবই অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
চলতি মাসে দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা নেই। তবে উত্তরের জেলাগুলোতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আর আগামী জানুয়ারি মাস থেকে দেশেজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, চলতি মাসে দেশেজুড়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে জানুয়ারি থেকে সারাদেশেই শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। এতে তাপমাত্রা কমে আসবে। কোথাও কোথাও দিনের শেষ দিকে সূর্যের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে কুয়াশায় আবৃত থাকবে।
এদিকে আজ উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে তাপমাত্রা আবারও ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে নেমে এসেছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় হালকা বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মধ্যরাত থেকে দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ও এর কাছাকাছি এলাকা পর্যন্ত উপ মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বাড়তি অংশ বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর বাড়তি অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
চাঁদপুরে মেঘনায় জাহাজে ৭ জনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আকাশ মণ্ডল ইরফান নামের একজনকে বাগেরহাটে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মেজর সাকিব হোসেন জানান, তাকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র্যাব-১১ কুমিল্লার সিপিসি-২ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে জাহাজ মালিকের পক্ষে ঢাকার দোহার এলাকার মো. মাহবুব মোরশেদ বাদী হয়ে হাইমচর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় খুন ও ডাকাতির অভিযোগ এনে ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের পশ্চিমে মেঘনা নদীর পাড়ে মাঝিরচর এলাকায় থেমে থাকা একটি জাহাজ থেকে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে পাঁচজনের মরদেহ এবং তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে দুই জন মারা যান।
নিহত সাতজন হলেন- জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার আজিজুল ও মাজেদুল, রানা কাজী এবং লস্কর সবুজ শেখ। তাদের বাড়ি নড়াইল ও ফরিদপুর জেলায়। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।