পথে ঘুরে দুই স্কুলশিক্ষার্থীর মাস্ক বিতরণ

  • সাদিয়া কানিজ লিজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রিকশাচালকদের মাস্ক দিচ্ছে দুই স্কুলশিক্ষার্থী /ছবি: বার্তা২৪.কম

রিকশাচালকদের মাস্ক দিচ্ছে দুই স্কুলশিক্ষার্থী /ছবি: বার্তা২৪.কম

করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে এরই মধ্যে সরকার দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সরকারি- বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানও। রাজধানীতে বেশিরভাগ মানুষ এখন অনেকটাই স্বেচ্ছায় সঙ্গরোধে আছেন। গত কয়েকদিন ধরে রাস্তাগুলোতে একেবারেই ভিড় নেই।

ফাঁকা রাস্তায় রেসিডেনসিয়াল স্কুলের দুই শিক্ষার্থী ঘুরে ঘুরে রিকশাচালকদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করছে। তারা ‘ভরসাস্থল’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের সদস্য। যারা জানে না মাস্ক পরার সুবিধা, তাদের এ সম্পর্কে জানাচ্ছে এই দুই স্কুল শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞাপন

মাস্ক পাওয়ার পর আবুল হোসেন নামে এক রিকশাচালক বলেন, কত বড়লোক মানুষ আছে তারা তো কিছুই করে না। গরিব মানুষের কষ্ট দেইখা মুখ ফিরাইয়া নেয়। কিন্তু তারা তো অনেক ছোট। করোনাভাইরাসের কারণে ফ্রি মাস্ক দিয়ে আমগো মতো গরিব মানুষরে সাহায্য করতাছে। এখন যে পরিস্থিতি চলতাছে, এমন একটা জিনিস আমাগো দরকার ছিল। খুব ভালো লাগলো। তাগো মতো এমন কাজ সবার করা উচিত।

আল ফাতির এবং তাহমিদ হাসান/ছবি: বার্তা২৪.কম 

জানতে চাইলে আল ফাতির এবং তাহমিদ হাসান নামের এই দুই শিক্ষার্থী জানায়, এক বছর ধরে গরিবদের সাহায্যে তারা বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এর আগে শীতের সময় কম্বল বিতরণ করেছে তারা। এখন যেহেতু করোনাভাইরাস সমস্যায় সবাই ভুগছে তাই রিকশাচালকদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করছে। বিভিন্ন স্কুল থেকে টাকা তুলে ‘ভরসাস্থল’র সদস্যরা এই কার্যক্রম চালাচ্ছে। সংগঠনে রয়েছে কার্যনির্বাহী সদস্য ১০ জন এবং ২০-২৫ জন স্বেচ্ছাসেবক। এদের সবাই ক্লাস নাইন-টেন পড়ুয়া শিক্ষার্থী।

তারা জানায়, আমরা আগে গিয়ে জানতে চাচ্ছি তাদের কাছে মাস্ক আছে কিনা। যদি না থাকে তবে তাদেরকে আমরা মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছি। সেই সঙ্গে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা করছি। কী কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয় তাও বলছি।

রিকশাচালকদের পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে মাস্ক/ছবি: বার্তা২৪.কম 

তারা আরো জানায়, আমরা এই কাজটি করতে পেরে খুবই আনন্দিত। দরিদ্র মানুষদের কে সাহায্য করতে আমাদের বেশ ভালো লাগে। এমন করে সবাই এগিয়ে আসলে সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। সবাই যদি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকে তাহলে তো চলবে না। কিছু মানুষকে তো মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যেহেতু মাস্ক ব্যবহার করে হাতে গ্লাভস পরে এই কাজে নেমেছি তাই ভয়ের কিছু নেই। বরং ভালো লাগছে। এর মাধ্যমে যদি কিছু মানুষ উপকৃত হয় এই আর কি।

তবে প্রয়োজন ছাড়া যেন কেউ ঘরের বাইরে বের না হয় সেই আহ্বানও জানায় স্কুল পড়ুয়া এই দুই শিক্ষার্থী।