শিগগিরই পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকায়, আশা বাণিজ্যমন্ত্রীর

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি

শিগগিরই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫০ টাকায় নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

তিনি বলেছেন, ইতিমধ্যে ভারতের নাসিকে পেঁয়াজের দাম ৩৬ থেকে ৩৭ ভারতীয় রুপিতে নেমে এসেছে। তাদের প্রয়োজনেই তারা পেঁয়াজ রফতানি শুরু করবে। এছাড়া আগামী মাসের প্রথম দিকে দেশি পেঁয়াজও পুরো উঠা শুরু করবে। তাই খুব শিগগির পেঁয়াজের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকায় নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য সম্পর্কিত বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জাবাবে এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে সফররত কানাডার সাচকাচোয়ান প্রদেশের কৃষিমন্ত্রী এইচ ই ডাভিড মারিটের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মন্ত্রী।

বেশকিছু দিন থেকে বাজারে দেশি পেঁয়াজ এসেছে তারপরও দাম কমছে না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ ফুল স্পিডে এখনো আসেনি। আমি গত ২৪ তারিখে পেঁয়াজের অঞ্চলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম আগামী মাসের প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহে ফুল স্পিডে পেঁয়াজ উঠা শুরু করবে। সে সময়টায় পেঁয়াজের দাম কমবে।

তিনি বলেন, ভারতের নাসিকের যে মার্কেট থেকে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করি সেখানেও পেঁয়াজের দাম কমেছে। কিন্তু ওরা এখনো সরকারিভাবে পেঁয়াজ রফতানির সিদ্ধান্তটা নেইনি। গতকাল নাসিকের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিলো ৩৬ থেকে ৩৭ ভারতীয় রুপি। কলকাতার বাজারে দাম ছিলো ৪৫ রুপি, আমাদের টাকায় সেটা ৫৫ বা ৬০ টাকা।

টিপু মুনশি বলেন, কৃষকদেরও চাপ রয়েছে তাই সেখানে দামটা ২৫ থেকে ৩০ টাকায় নেমে আসলেই ভারত হয়তো রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে। ভারতের মোট পেঁয়াজের ৩৮ শতাংশ হয় নাসিকে। নাসিকের পেঁয়াজই আমরা আমদানি করি।

তিনি বলেন, ভারতে উত্তরে যে পেঁয়াজ সেগুলো রফতানি শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের জনগণ সে পেঁয়াজ খায় না। আমরা নাসিকের পেঁয়াজই পছন্দ করি। আমরা অপেক্ষায় রয়েছি তারা নাসিকের পেঁয়াজে কখন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। দামটা আরও একটু কম তাদের নিজস্ব চাপেই তারা প্রত্যাহার করবে। গতকালকেই আমাদের দূতাবাস থেকে চিঠি পেয়েছি। তারা এসব কথাই লিখেছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের পেঁয়াজের দাম এবার অনেক বেড়ে গেছে। হয়তো পুরোপুরি পেঁয়াজ উঠলেই সেটা কমে যাবে। কিন্তু দামটা এতটা কমা ঠিক হবে না এতে করে কৃষক দাম না পায়। ভোক্তার বিষয়টা যেমন নজরে রাখতে হবে তেমনি কৃষকদের বিষয়টাও দেখতে হবে। ফাইনালি আমরা যদি পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ না হতে পারি তাহলে আমাদের সমস্যা থেকেই যাবে।

তিনি বলেন, আমাদের পেঁয়াজের ঘাটতি ৮ থেকে ৯ লাখ টন। বছরের পর বছর যদি পরের উপর নির্ভর করতে হয় তাহলে যখনই ভারত রফতানি বন্ধ করে দিবে তখনই সমস্যা দেখা দেবে। তাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে কৃষকদের দাম পেতে হবে। দাম না পেলে তারা পেঁয়াজ উৎপাদন করবে না।

তিনি বলেন, আজকে ঢাকায় পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাই এবার কৃষক দামও পেয়েছে। পাশাপাশি একই এলাকার বাজারে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পার্থক্য থাকে এটা হওয়া উচিত নয়।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ভারত ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমাদনি হচ্ছে। নিজেদের পেঁয়াজও পুরো উঠা শুরু হলেই ৫০ থেকে ৬০ টাকায় দাম নেমে আসবে।

অসাধু ব্যবসায়ীদের বিষয়ে তিনি বলেন, দাম বেশি রাখায় ৩ হাজার ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা খুব শক্ত অবস্থানে যেতে চাই। কিন্তু কখনো কখনো ব্যবসায়ীরা এমন অবস্থার সৃষ্টি করে যে, টোটাল মার্কেট থেকেই আউট করে দেয়। এ জন্য আমাদেরকে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আর সেটা হচ্ছে আমদানি বাড়ানো। তাহলেই ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিতে পারবে না।

হঠাৎ করে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় বিকল্প বাজার থেকে আমাদানি করতেই প্রায় ৫০ দিন লেগে গিয়েছিলো। এ সুযোগেই পেঁয়াজের দাম ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছিলো। এখন কিন্তু প্রতিদিন পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে।