নিষেধাজ্ঞার পরও পলিথিনের ব্যবহার যেন বাড়ছেই!

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে মুদি, কাপড়-চোপড়, দৈনন্দিন জীবনের তৈজসপত্র কিনলেই মিলবে পৃথক পলিথিন। পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও কাঁচা বাজারগুলোতে ঢুকলে দেখা যায় পৃথক পলিথিনের ব্যবহার। পেপে, আলু, ঢেড়স, যেকোনো সবজি ক্রয় করলে ব্যবহৃত হচ্ছে আলাদা আলাদা পলিথিনের। এদিকে পলিথিন মানবস্বাস্থের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও দিন দিন পলিথিনের ব্যবহার যেন বাড়ছে। কিন্তু এটির ব্যবহার বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ দেখা যায় না। পলিথিন ব্যবহার বন্ধের ঘোষণা দিলেও ব্যবহার যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে।  

রোববার (২০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড় বাজার, পুরাতন সাতক্ষীরা হাটখোলা কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। কাঁচা বাজারের পণ্য কিনলেই পৃথক পৃথক পলিথিনের ব্যবহার। এটা নতুন কিছু নয়। জিনিস কিনলে সাথে পলিথিন ফ্রী। যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

বিজ্ঞাপন

খালি হাতে বাজার করতে এসেছেন আব্দুল হামিদ। কাঁচা বাজারে ঢুকে দরদাম করে কিনলেন প্রয়োজনীয় পণ্য। কিনলেন আলু, পেঁপে, ঢেড়স, পেঁয়াজ, পটলসহ আরো অনেক কিছু। এক এক পণ্যের জন্য এক এক পলিথিন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বার্তা২৪.কমকে বলেন, খালি হাতে বাজারে আসছিলাম। বাজার করলাম ৫ রকম সবজি। তবে এক এক সবজিতে পৃথক পলিথিন দিয়েছে দোকানদার। বাসায় রাখতে যেমন সুবিধা হয় তেমনি পলিথিনে থাকলে সবজিগুলো ভালো থাকে।

এদিকে চটের বস্তা এনেও পলিথিনে কাঁচা মাল ক্রয় করে বস্তাবন্দি করছেন মিলন। প্রতিটি পণ্যের জন্য আলাদা পলিথিন নেয়ার বিষয়ে মিলন বলেন, আমরা মেসে থাকি। আমাদের দুইদিন পরপর বাজার করতে হয়। আমাদের ২০ জনের বাজার আমরা একবারে করে নিয়ে যায়। বাজারগুলো আলাদা আলাদা পলিথিনে দিলে ভালো থাকে।

আরেক ক্রেতা সবুজের হাতে এক হালি ডিম সেটাও পলিথিনের প্যাকেটে। নিষিদ্ধ পলিথিনের এমনই ব্যবহার সবখানে লক্ষ্য করা যায়।

কাঁচামাল বিক্রেতা হাকিম মিয়া। পৃথক পৃথক পলিথিন দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বার্তা২৪.কমকে বলেন, সবাই তো পলিথিন দিচ্ছে। তারা পলিথিনে ছাড়া কাঁচামাল, মাছ এসব নিতে চায় না। সবাই খালি হাতে আসে আর বাজার করে পলিথিনে নিয়ে যায়। তাই আমরা সব সময় পলিথিন রাখি। যেদিন পলিথিন থাকে না তারা মাল নিতে চায় না। তারা নিলে আমরা কি করবো। তারা প্যাকেট আনলে আমরাও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করে দিবো সহজ হিসাব। কারণ আমাদেরও পলিথিন কিনতে টাকা খরচ হচ্ছে।

এদিকে সবর্ত্র ব্যাপক ব্যবহারে প্রতিদিন টনে টনে অপচনশীল নিষিদ্ধ পলিথিন পরিবেশে মিশছে। পরিবেশ বিষাক্ত ও নোংরা করার পাশাপাশি শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দিচ্ছে পলিথিন। যার একমাত্র উদাহরণ সাতক্ষীরা শহরের প্রাণ সায়ের খাল। ব্যাপক হারে পলিথিন, ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে প্রাণ সায়েরর খাল প্রাণ হারিয়েছে। দেখা দিয়েছে শহরে জলাবদ্ধতা। কিন্তু এদিকে পলিথিনের যাচ্ছেতাই ব্যবহার নিষিদ্ধ করে পাটজাত বা পচনশীল ব্যাগ ও প্যাকেট ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও তা বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্টদের।

তবে সচেতন নাগরিকরা বলছেন, পলিথিন ব্যবহার বন্ধে সচেতনতা করছে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। মানুষ যদি পলিথিন বর্জন না করে তাহলে এটা কখনো বন্ধ হবে না। আগে আমাদের সচেতন হতে হবে তাহলে আমরা এটা বন্ধ করতো পারবো। তবে বন্ধ করার সবচেয়ে বেশি জরুরি এর উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বন্ধ করা। আইনের কঠোর প্রয়োগ করা।