পুরান ঢাকার রাসায়নিক কারখানা সরাতে চুক্তি স্বাক্ষর

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান | ছবি: শাহরিয়ার তামিম

রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান | ছবি: শাহরিয়ার তামিম

অবশেষে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পণ্যের কারখানা এবং রাসায়নিক পণ্যের গুদাম সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। সেই লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে গাজীপুরের টঙ্গীতে ‘রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের (বিএসইসি) সম্মেলন কক্ষে ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান বিএসইসি এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্ক্স লিমিটেড (ডিইডব্লিউ) ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মধ্যে প্রকল্প সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

চুক্তিটিতে ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রকল্প পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান খান এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ডিইডব্লিউ’র উপ-মহাব্যবস্থাপক কমান্ডার নাজমুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—বিএসইসি’র চেয়ারম্যান মো. রইছ উদ্দীন, পরিচালক (অর্থ) আনিস উল-হক-ভুইয়া, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রকৌশলী মো. আশিকুর রহমান, সচিব প্রকৌশলী মো. আবুল খায়ের সরদার, প্রধান ব্যক্তি প্রশাসন কর্মকর্তা শাহীরা পারভীন, উপ প্রধান নিরীক্ষণ কর্মকর্তা আ ত ম জাহাঙ্গীর মোস্তাক, হিসাব নিয়ন্ত্রক এ এম রিজওয়ান হোসেন, প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. সালমান মাহমুদ খান, ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্ক্স লিমিটেডের উপ-প্রধান প্রকৌশলী (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন) এস এম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ।

রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান | ছবি: শাহরিয়ার তামিম

স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্পের এলাকা আগামী ১০ দিনের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১৩৫ দিনের মধ্যে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজটি সম্পন্ন করবে। নির্ধারিত সময়ে কাজটি সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। ঠিকাধারি প্রতিষ্ঠান গুণগতমান বজায় রেখে সঠিক সময়ে প্রকল্প শেষ করার অঙ্গীকার করেছে।

উল্লেখ্য, রাসায়নিক পদার্থের কারখানা এবং গুদাম থাকা অত্যন্ত বিপজ্জনক, যা পুরান ঢাকার মানুষ ২০১০ সালে নিমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রত্যক্ষ করেন। এরপর এর ভয়াবহতা আরও বেশি অনুভব করেন ২০ ফেব্রয়ারি রাতে চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের সময়।

এরপর থেকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলো নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের লক্ষ্যে সরকার বিসিক-এর মাধ্যমে বৈধ কেমিক্যাল কারখানা ও কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের স্থায়ীভাবে কারখানা ও গুদাম নির্মাণের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে।

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ বিধায় অতিদ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদ্যমান কেবলমাত্র বৈধ লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীদের আমদানিকৃত কেমিক্যাল সংরক্ষণের নিমিত্ত বিএসইসি’র আওতাধীন টঙ্গীর কাঁঠালদিয়ায় অস্থায়ীভাবে গুদাম নির্মাণের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এর আলোকে অস্থায়ীভাবে গুদাম নির্মাণের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সেবামূলক, অলাভজনক ও জনগুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় অগ্রাধিকার ভিত্তিক এই প্রকল্পটি দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করার জন্য দুটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে।

এরপর বিসিকের মাধ্যমে বৈধ কেমিক্যাল কারখানা ও কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ীভাবে কেমিক্যাল পল্লী নির্মাণ কাজ সম্পাদিত হলে তাদের উল্লিখিত জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হবে এবং জায়গাটি ঢাকা স্টিল ওয়ার্ক্স লিমিটেড কর্তৃক ব্যবহৃত হবে।