সাংগঠনিক কাঠামো ও অপারেশনাল কার্যক্রম শক্তিশালী করতে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পুলিশের পদোন্নতি না হওয়া আর পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামালের সাথে বৈঠকে এসব ব্যাপারে ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
সভায় ১০ এসপিসহ ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের ১৯ পুলিশ কর্মকর্তা নানা বিষয়ে কথা বলেন এবং সমস্যা নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ দাবি করেছেন।
সভায় র্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ বলেন, পুলিশ হচ্ছে ‘বেস্ট ল এজেন্সি ইন কান্ট্রি’, যা বলবেন তাই করবে। কিন্তু পুলিশের ফোর্স গাড়ি কম। অ্যাডিশনাল এসপি হচ্ছে অপারেশনাল ফোর্স। অথচ তার কোনো গাড়ি নেই। তাহলে তিনি ডিউটি কিভাবে করবেন? তিনি কি তবে বাবার জমি বিক্রি করে ডিউটি করবেন? একই পদমর্যাদার ও কম পদমর্যাদার অন্যরা যদি গাড়ি পান তবে পুলিশে কেন নয়।
আমাদের বাজেট হচ্ছে ৪ লাখ কোটি টাকা। র্যাব ২০০৪ সালে যে গাড়ি ব্যবহার করছে সেই গাড়ি এখনো চলছে। অথচ এখন ২০২০। যতো দেবেন ততো কাজের এফিসিয়েনসি বাড়বে। দেশের স্বার্থে যখন যা বলবেন পুলিশ তা করবে। আশা করছি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়গুলো দেখবে।
আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারি তার বক্তব্যে বলেন, এখন যে গাড়ি দেয়া হচ্ছে তা অপারেশনাল গাড়ি নয়। এখানে একজনের বেশি বসার অবস্থা থাকে না। আগের মতো অপারেশনাল গাড়ি সরবরাহের অনুরোধ করছি।
পদোন্নতির বিষয়ে আইজিপি বলেন, পদোন্নতি ক্ষেত্রে যতো দিন যাচ্ছে ততো পিছিয়ে যাচ্ছে। আগে ২৪ বছরে অ্যাডিশনাল আইজিপি হতে পারতেন, কিন্তু এখন ৩০ বছরেও হতে পারেন না। আমি কিন্তু ২১ বছর বয়সে অ্যাডিশনাল আইজিপি হয়েছি। আমাদের সামনে এখন কি অবস্থাটা দাঁড়াচ্ছে! ৬শ জন এসপি হয়ে গিয়েছে। এরমধ্যে অ্যাডিশনাল ডিআইজি হবে মাত্র ১০৭ জন। বাকিরা কেউ হতে পারবেন না। তারপরে ডিআইজি ৬৭ জন। অর্ধেকও ডিআইজি হতে পারবেন না। অ্যাডিশনাল আইজি হচ্ছে ১৭ জন। এ থেকে উত্তরণ ঘটানো না যায়, তাহলে যে ব্যাচগুলো আসছে তারা তো এসপি’ই হতে পারবে না। একটা কমিটি গঠন করে সমস্যাগুলো উত্তরণের ব্যবস্থা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
এসব ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দিন শেষে সবার নজর থাকে পুলিশ কী করেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কী করলো। আমরাও অনেক রকমভাবে তৈরি হচ্ছি। জবাবদিহিতার জন্য পুলিশ প্রস্তুত। বঙ্গবন্ধু পুলিশকে জনগণের পুলিশ হতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। আমরা ধীরে ধীরে সেই দিকেই যাচ্ছি। সেবার মান যাতে বৃদ্ধি করতে পারি সেজন্য সব ধরনের পুলিশ গড়ে তোলা হয়েছে। আপনাদের দাবি দাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি।
আর গাড়ির সমস্যা নিরসনে নতুন অপারেশনাল কাজে উপযোগী ও গাড়ির মডেল রিকুইজিশন পাঠানোর জন্য পুলিশকে আহ্বান জানান তিনি।