স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার বলেছেন, শুধু চিকিৎসা দিয়ে হবে না, আগে আমাদের সচেতন হতে হবে। কীভাবে রোগ না হয় কীভাবে রোগ থেকে বাঁচা যায় সেই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তাই স্কুলগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে।
মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সম্মেলন কক্ষে অংশীজনের সাথে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পরিবার থেকে এমন স্কুল কার্যক্রম এনে দিতে হবে যেটা স্বাস্থ্য শিক্ষার সঙ্গে জড়িত। উন্নত দেশগুলোতে এমন আছে।ডা. সায়েবা আক্তার বলেন, আমরা প্রত্যেকটা জিনিস এ বিদেশিদের উপর নির্ভরশীল। কেন জানি তাদের থেকে আমরা দূরে থাকতে পারছি না। তবে ওষুধের ব্যাপারে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। বিভিন্ন ধরনের কোম্পানিগুলো আছে যারা ওষুধ সাপ্লাই দিয়ে থাকেন। এখানে তাদের ওষুধের মান নিয়ে অনেক কথা হয়ে থাকে।
সভায় রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. জাওয়াদুল হকের সভাপতিত্বে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. মোজাহেরুল হক, অধ্যাপক লিয়াকত আলী, ডা. আজহারুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, ড. আহমদ এহসানূর রহমান এবং উমাইর আফিফসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ডাক্তার, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দলোনের সমন্বায়ক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সংস্কার কমিশনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত অংশীজনের নিকট হতে স্বাস্থ্যখাতে সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় মতামত আহ্বান জানানো হয়।
এসময় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর রিপোর্টের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া, ডাক্তারদের সরকারি-ব্যক্তিগতভাবে রোগী দেখার হার নির্ধারণ করা, হাসপাতালের বেড অনুযায়ী চিকিৎসক ও ডায়াগনস্টিক সেবা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যখাতে অবকাঠামোগত পরিবর্তন ও জনবল বৃদ্ধি, জিডিপির ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ, সিভিল সার্জনদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান, ডাক্তারদের জন্য ওষুধ কোম্পানির অবৈধ সুবিধা পরিহার, স্বাস্থ্যখাতে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি, দেশে বিদেশি মানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের উপযুক্ত হাসপাতাল নির্মাণ করার কথা বলা হয়।
এছাড়া, স্বাস্থ্য বীমা চালু করা, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে নির্দিষ্ট পলিসির আওতায় নিয়ে আসা, স্বাস্থ্য পুলিশিং ব্যবস্থা, অ্যাম্বুল্যান্স সুবিধা বাড়ানো, স্বাস্থ্যখাতকে স্বায়ত্তশাসনের আওতায় আনা, মেডিকেলে অর্জিত রাজস্বের ৩০ শতাংশ যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা,স্বাস্থ্যনীতি বাস্তবায়নে অবহেলা দূরীকরণ, ময়না তদন্তের মানোন্নয়ন এবং ফরেনসিক খাতে প্রণোদনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নন-মেডিকেল ডিগ্রিধারীদের স্বাস্থ্যখাতে অন্তর্ভুক্তিকরণ, গণমাধ্যমের সাথে স্বাস্থ্য বিভাগের সম্পর্ক উন্নয়নসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন অংশীজনরা।