সৈয়দপুর রেল কারখানায় ইতিহাসের সাক্ষী কয়লার ইঞ্জিন

  • তৌফিকুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সৈয়দপুর রেল কারখানা থেকে
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কয়লা চালিত ব্রড গেজ ইঞ্জিন, ছবি: বার্তা২৪.কম

কয়লা চালিত ব্রড গেজ ইঞ্জিন, ছবি: বার্তা২৪.কম

বাংলাদেশের অন্যতম বড় এবং প্রাচীনতম রেল কারখানা হলো সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। এ কারখানায় ঢোকার মুখেই চোখে পড়বে বাংলাদেশের প্রথম কয়লা চালিত লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিনের।

 

বিজ্ঞাপন

কারখানার দায়িত্বে থাকা তত্ত্বাবধায়কের অফিসের সামনে সবুজ ঘাসের ওপর রাখা আছে ব্রিটিশ আমলের কয়লা চালিত এসব ইঞ্জিন। রেলের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা এসব ইঞ্জিন দেখতে বিভিন্ন সময় ভিড় করেন সাধারণ মানুষ।

কয়লা চালিত ন্যারো গেজ ইঞ্জিন, ছবি: বার্তা২৪.কম

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সৈয়দপুর রেল কারখানা ঘুরে দেখা মেলে ইতিহাসের সাক্ষী কয়লা চালিত ইঞ্জিনের। রেল কারখানা চত্বরে তিনটি লোকোমোটিভ স্থান পেয়েছে। তার মধ্যে একটি কয়লা চালিত ব্রডগেজ, একটি ন্যারো গেজ ইঞ্জিন এবং অপরটি ডিজেল চালিত মিটারগেজ ইঞ্জিন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কয়লা চালিত ন্যারো গেজ স্টিম লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিন ১৯৩৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। একটি বিশেষ রুটে অর্থাৎ খুলনা-বাগেরহাট রুটে কয়লা চালিত ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চলাচল করত। সর্বশেষ ১৯৩৬ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত চলাচল করেছে কয়লা চালিত ন্যারো গেজ স্টিম লোকোমোটিভ। বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ন্যারো গেজ ইঞ্জিনের ব্যবহার নেই বললেই চলে।

কয়লা চালিত ব্রড গেজ ইঞ্জিন, ছবি: বার্তা২৪.কম

রেলের ইতিহাস বহন করা আরেকটি ইঞ্জিন হলো কয়লা চালিত ব্রডগেজ স্টিম লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিন। এটি ১৯২১ সালে তৈরি হয়েছিল। এ ইঞ্জিন দিয়ে পাকশী রুটে ট্রেন চলাচল করত। ১৯৩৭ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত চলাচলের উপযোগী ছিল এ ইঞ্জিন।

সময়ের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রেলের ইঞ্জিনেও আসতে থাকে পরিবর্তন। কয়লা চালিত ইঞ্জিনের পরিবর্তে আসতে থাকে ডিজেল চালিত মিটারগেজ ইঞ্জিন।

সৈয়দপুর রেল কারখানার চত্বরে ডিজেল চালিত একটি মিটারগেজ ইঞ্জিন রাখা আছে। এ ইঞ্জিনটি ১৯৮২ সালে তৈরি হয়েছিল। ইঞ্জিনটি দিয়ে পার্বতীপুর-সান্তাহার-লালমনিরহাট রুটে ট্রেন চলাচল করত বলে জানা গেছে। সর্বশেষ ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এ ইঞ্জিন চলাচল করেছে।

ডিজেল চালিত মিটার গেজ ইঞ্জিন, ছবি: বার্তা২৪.কম

সৈয়দপুর রেল কারখানার সহকারী ওয়ার্কস ম্যানেজার (ক্যারেজ) মো. আব্দুস সামাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, রেলের ইতিহাস বহন করে আছে কয়লা চালিত এসব ইঞ্জিন। আরো অনেক ইঞ্জিন ছিল, যেগুলো রেলের গুরুত্বপূর্ণ অফিসগুলোর সামনে রাখা হয়েছে। সে হিসেবে সৈয়দপুরে দু’টি কয়লা চালিত ইঞ্জিন এবং একটি ডিজেল চালিত ইঞ্জিন রাখা আছে। রেলের কারণে সৈয়দপুরের একটি ঐতিহ্য আছে। বিভিন্ন সময় দূর-দূরান্ত থেকে এ রেল কারখানা দেখতে আসেন মানুষ। বিশেষ করে কয়লা চালিত ইঞ্জিনগুলো দেখে ইতিহাসের সাক্ষী হতে চান সাধারণ মানুষ।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা, ছবি: বার্তা২৪.কম

তিনি আরো বলেন, বিশ্বের আর কোথাও কয়লা চালিত ইঞ্জিন ব্যবহার হয় না। এ ইঞ্জিনের ব্যবহার অনেক আগেই উঠে গেছে। তাই সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ আমলের এসব ইঞ্জিন পরিবর্তন হয়ে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে আধুনিক সব ইঞ্জিন। তবে রেলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য মনে করিয়ে দিতেই কয়লা চালিত ইঞ্জিন প্রদর্শন করা হয় সৈয়দপুর রেল কারখানায়।