বিনা চাষে সরিষা, ‘রিলে’ পদ্ধতিতে নতুন সম্ভাবনা
করতে হয়নি জমি চাষ। মাঠে আমন ধান থাকতেই বপন করা হয় বীজ। ধান কাটার পর চোখে পড়ে সরিষা গাছ। এভাবে বিনা চাষে সরিষা আবাদ করে সাফল্য পাচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোমস্তাপুরের কৃষকরা। এ পদ্ধতিতে চাষ করে তিন ফসলি ধানি জমি থেকে বাড়তি ফসল হিসেবে বিপুল পরিমাণ সরিষা উৎপাদন হচ্ছে এখানে। ফলে বাড়তি উপার্জন করতে পারছেন এখনকার কৃষকরা। এই পদ্ধতি ‘রিলে’ পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুরের কৃষকরা জানান, রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষে প্রতি বিঘায় মাত্র ১ হাজার টাকা খরচ হয়। সেখানে প্রতি বিঘায় সরিষা পাওয়া যায় ৪ মণ। যার বাজারমূল্য ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা।
স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, রিলে পদ্ধতিতে চাষাবাদ এ উপজেলায় কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হয়েছে। রিলে পদ্ধতিতে একজন কৃষক সরিষার চাষ করে খরচ বাদে প্রতি হেক্টর জমিতে ৭০-৮০ হাজার টাকা লাভবান হবেন । ৭০-৭৫ দিনের মধ্যে কৃষক তার ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। এছাড়া আমন এবং বোরো চাষের মাঝখানে যে সময়টুকু কৃষকের জমি খালি বা পতিত থাকে, সেই সময় টুকুতে অতিরিক্ত একটি ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষকও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন এবং দেশের ফসল উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।
গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানভীর আহমেদ সরকার জানান, রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষাবাদ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কৃষকরা বিনা চাষে সরিষা আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। আগামীতে বেশির ভাগ তিন ফসলি জমি বিনা চাষে সরিষা আবাদের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা আবাদের মধ্য দিয়ে একটা নতুন সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হয়েছে। আমন মৌসুমে ধান আবাদের পরে যখন জমি পতিত থাকে তখন এ সময়টা আমরা কৃষকদের রিলে পদ্ধতিতে সরিষার চাষে উদ্বুদ্ধ করেছি। রিলে চাষের মাধ্যমে কৃষকরা এখন থেকে বছরে দুইটা ফসলের পরিবর্তে তিনটা ফসল পাবে তিনি আরো বলেন, এ পদ্ধতিতে একটি ফসল জমিতে থাকাকালীন বিনা চাষে অন্য একটি ফসল রোপণ করা হয়। যার ফলে অর্থ ব্যয় ও পরিশ্রম অনেক কম হয়। আর এ পদ্ধতিতে যে ফসলগুলোর আবাদ হয় তারমধ্যে অন্যতম হলো ধানের সাথে সরিষা চাষ। সাধারণত ধান কর্তনের ১৫ দিন পূর্বেই ধানের জমিতে সরিষা বীজ ছিটিয়ে দিতে হয়।