মিজানুর রহমান আজহারীর আগমনে পটুয়াখালীতে ব্যাপক প্রস্তুতি
জাতীয়
পটুয়াখালীতে জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারীর আগমন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৫ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মাঠে তার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে। এই ঐতিহাসিক মাহফিলের আয়োজন করেছে পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন।
রোববার (৫ জানুয়ারি) পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শহীদ মিনার মাঠ পরিদর্শন করেন। আয়োজকরা জানান, মাহফিলে প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হতে পারে। শ্রোতাদের জন্য শহরের ৮টি মাঠ প্রস্তুত করা হচ্ছে, যার মধ্যে ২টি মাঠ শুধু নারীদের জন্য নির্ধারিত থাকবে।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠান সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ৩০টি এলইডি প্রজেক্টর স্থাপন করা হচ্ছে। আয়োজকরা জানান, এই বিশাল আয়োজন সফল করতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান বলেন, আমরা কৃতজ্ঞ ড. মিজানুর রহমান আজহারীর প্রতি, কারণ তিনি তার ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও পটুয়াখালীর জন্য একটি প্রোগ্রাম রেখেছেন। লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণের প্রত্যাশা করছি এবং এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সফল করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। ইনশাআল্লাহ, সবার সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় প্রশাসন, আয়োজক কমিটি এবং স্বেচ্ছাসেবক দল এই মাহফিলের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলস কাজ করছে।
১০ বিঘা কৃষি জমির মালিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। গ্রামে রয়েছে টিনশেড বাড়ি। একসময় তিনি নিজেই গ্রামের বিভিন্ন ঘটনার বিচার করতেন। স্ত্রী এবং চার ছেলে নিয়ে তার সংসার। আড়াই বছর আগে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। ছেলেরা বগুড়া এবং ঢাকায় চিকিৎসা করান। কিন্তু স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি তিনি। কর্মব্যস্ততার কারণে তিন ছেলে বাড়িতে থাকেন না। এক ছেলে বাড়িতে থাকলেও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকেন কর্মস্থলে। আর এসব কারণেই মানসিক ভারসাম্যহীন বাবাকে বাড়ির সামনে ফাঁকা জায়গায় বাঁশের তৈরি খাঁচায় বন্দি করে রাখেন। ছেলেরা জানান, বাবাকে ছেড়ে দিয়ে রাখলে বাড়ির জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন অথবা বাড়ি থেকে বের হয়ে হারিয়ে যান।
মোহাম্মদ আলির বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কৃষ্ণপুর গ্রামে।
গ্রামবাসী জানান,একসময় কৃষি কাজের পাশাপাশি সার ও খৈল এর দোকান করতেন মহাস্থান বন্দরে। চার ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। বড় ছেলে মাসুম বিল্লাহ মেডিকেল সহকারী পাশ করে শিবগঞ্জ পৌর শহরে নিজস্ব ক্লিনিক পরিচালনা করেন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস করেন তিনি। দ্বিতীয় ছেলে মাসুদ রানা একটি বেসরকারি চাকরির সুবাদে বসবাস করেন শিবগঞ্জ পৌর শহরে। তৃতীয় ছেলে মামুন বাড়িতে থাকলেও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাকরি করেন বড় ভাই এর ক্লিনিকে।ছোট ছেলে চাকরির সুবাদে ঢাকায় বসবাস করে। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ'র বৃদ্ধা স্ত্রী নুরজাহান বেগম এক ছেলের বউকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করেন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে দক্ষিণ কৃষ্ণপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ' দ্বিতীয় ছেলে মাসুদ রানা তার বাবাকে বাঁশের খাঁচায় থেকে বাহিরে বের করছেন। তিনি বলেন, বাবাকে খাঁচায় বন্দী করে রাখা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নাই। কর্মব্যস্ততার কারণে বাড়িতে নিয়মিত আসতে পারি না। মাঝে মধ্যে বিকেলে এসে বাবাকে খাঁচা থেকে বের করে বাহিরে হাঁটতে নিয়ে যাই। তিনি আরও বলেন, আমাদের সাধ্যমতো বগুড়া এবং ঢাকায় চিকিৎসা করানোর পরেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেনি বাবা। চিকিৎসক বলেছেন মস্তিষ্কে সমস্যা। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা কম। বাড়িতে ছেড়ে দিয়ে রাখা যায় না। চার ভাই কেউ না থাকায় গত ৮ মাস আগে এভাবে বাঁশের তৈরি খাঁচায় আটকে রাখা হয়।
দক্ষিণ কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ইনছার আলী বলেন, সকালে এই বৃদ্ধ মানুষটিকে বাড়ি থেকে বের করে এনে বাঁশের তৈরি খাঁচায় বন্দী করে রাখেন পরিবারের লোকজন। এখানেই থাকেন সন্ধ্যার পর পর্যন্ত। বাড়ি থেকে খাবার দিয়ে যায় খাঁচার মধ্যেই। রাতে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এভাবেই গত ৮-৯ মাস যাবৎ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে দেখছেন গ্রামের লোকজন। লোকজন দেখলে বিড়বিড় করে অস্পষ্ট ভাষায় কথা বলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। হাত দিয়ে ইশারা করে কাছে ডাকেন। কাছে গেলে তাকে বন্দী দশা থেকে বের করতে বলেন ইশারা ইঙ্গিতে। কিন্তু গ্রামের লোকজন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ'র ইশারা ইঙ্গিতে গুরুত্ব দেন না। তাদের মতে পাগল মানুষকে খাঁচা থেকে মুক্ত করে কে দায়িত্ব নিবে।
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ'র বড় ছেলে মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমি ক্লিনিক পরিচালনা করি। সেকারণে বাড়িতে থাকতে পারি না। বাবাকে সুস্থ করতে চিকিৎসা করিয়েছি সাধ্যমতো। তিনি বলেন আমি নিজেই চিকিৎসা সহকারী। আমি বাবার ভাল মন্দ বুঝি।
শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। তিনি গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের একজন। তার ছেলেরাও শিক্ষিত। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে বাঁশের খাঁচায় আটকে রাখার বিষয়টি আমার জানা নাই। ঘটনাটি দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি খোঁজখবর নিয়ে তাকে মুক্ত করার উদ্যোগ নিব।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন,ঘটনা আমার জানা নাই। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
৪৩তম বিসিএস থেকে বাদ পড়া ২৬৭ জনের মধ্যে বেশিরভাগই পুনরায় চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেসুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে ৪৩তম বিসিএস থেকে বাদ পড়াদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই কথা জানান তিনি।
সিনিয়র সচিব বলেন, বাদ পড়াদের পুনর্বিবেচনার আবেদন যাচাই-বাছাই চলছে। তদন্ত শেষ। দ্রুত সময়ে এটা করা হবে।
সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে সরকার মহার্ঘ ভাতা দেয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা শিগগিরই বাস্তবায়ন হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেসুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘মহার্ঘ ভাতা ইস্যুটা অর্থ মন্ত্রণালয়ের। তবে আমিও একজন মেম্বার। এরইমধ্যে দুটি মিটিং হয়েছে। মহার্ঘ ভাতা খুব শিগগিরিই হবে। তবে এবার ব্যতিক্রম হবে। আগে পেনশনভোগীরা মহার্ঘ ভাতা পেতেন না, এবার পাবেন। একটা রিজেনেবল পাবে। পরের বছর ইনক্রিমেন্টের সময় এই মহার্ঘ ভাতাটা তার বেসিকের সঙ্গে যোগ হবে।
আসন্ন বাজেটেই মহার্ঘ ভাতা কার্যকর হবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ বাজেটে মানে ৩০ জুনের মধ্যে, আমি বলব অবশ্যই এর মধ্যে হবে। তার আগে হবে ইনশাআল্লাহ।’
পার্সেন্টের বিষয়ে মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বা অর্থসচিবকে জিজ্ঞেস করেন। তারা বলতে পারবে।’
কোন মাস থেকে মহার্ঘ ভাতা ধরা হবে সে বিষয়ে সচিব বলেন, ‘অনুমান করে বলা ঠিক হবে না। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থসচিব পরিষ্কার করে বলতে পারবেন।’
রাজধানীর পল্টন থানাধীন গুলিস্তান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬০০ গ্রাম আইসসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (দক্ষিণ)।
গ্রেফতারকৃতের নাম- মো. মনিরুল ইসলাম (৩৬)। তিনি রাজধানীর ডেমরা এলাকার বাওয়ানীবাদ জুট মিলস স্টাফ কোয়ার্টার মসজিদের ইমাম।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গুলিস্তান এলাকায় অভিযান চালিয়ে আইসসহ তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর জানতে পারে আইসের একটি চালান কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ঢাকায় প্রবেশ করবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে লালবাগ সার্কেলের পরিদর্শকের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করে গুলিস্থান এলাকায় অভিযান আইসসহ মনিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার মনিরুল ইতোপূর্বে একাধিক ইয়াবা ও আইসের চালান সংগ্রহ করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করতো। গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের পল্টন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন্স ও গোয়েন্দা) তানভীর মমতাজ, অতিরিক্ত পরিচালক (গোয়েন্দা) মুহাম্মদ বদরুদ্দীন, অতিরিক্ত পরিচালক ( ঢাকা) এ কে এম শওকাত ইসলাম সহ অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের চৌকা সীমান্তে রাস্তা এবং কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে সম্মত হয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। বুধবার দুপুরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবির সঙ্গে তৃতীয় দফা পতাকা বৈঠকে এ সম্মতি জানায় বিএসএফ। বর্তমানে ঐ এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বৈঠক শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এতে স্বস্তি ফিরেছে সীমান্ত এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, ‘দুই বাহিনীর কর্মকর্তাদের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে সম্মত হয়েছে বিএসএফ। তবে আগামীতে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বা রাস্তা হবে কিনা তা বিজিবি-বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
তিনি আরো জানান, দুই দেশের নাগরিকরা যেন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখা হবে। এদিকে আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ায় সীমান্ত এলাকা থেকে উভয় বাহিনী তাদের অতিরিক্ত সদস্য সরিয়ে নিয়েছেন। এই মুহূর্তে সীমান্তে স্বাভাবিক টহল কার্যক্রম চালু রয়েছে।
এর আগে গত সোমবার সীমান্তের ভারতীয় অংশে নোম্যানস ল্যান্ডের ১০০ গজ অভ্যন্তরে অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন অমান্য করে আলোচনা ছাড়াই মাটি খনন ও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করে বিএসএফ। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানায় এবং বাধা দেয় বিজিবি। পরে ওই সীমান্তে দেখা দেয় উত্তেজনা। একপর্যায়ে সীমান্তে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করে উভয় বাহিনী এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএসএফের অবৈধ কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করতে বিজিবির সঙ্গে অবস্থান নেয় স্থানীয়রা। একইভাবে ভারতীয় নাগরিকদেরও বিএসএফের সঙ্গে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন অনুযায়ী শূন্যরেখা থেকে দেড় শ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না।