রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত, ভোগান্তি খেটে খাওয়া মানুষের

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত/ছবি: বার্তা২৪.কম

রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত/ছবি: বার্তা২৪.কম

উত্তরের জেলা রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত। টানা কয়েকদিন ধরে বিরাজ করছে ঘন কুয়াশা ও বইছে হিম বাতাস। দুপুর গড়িয়ে গেলেও দেখা মিলছেনা সূর্য মামার। কনকনে এই শীতে খেটে খাওয়া মানুষদের বেড়েছে ভোগান্তি। পেটের তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই ছুটে চলছেন শ্রমজীবী মানুষজন। সন্ধ্যার পর থেকেই চোখে পরে আগুন পোহানোর ধুম।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রংপুরের তাপমাত্রা ১৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অবস্থা আরও দুই থেকে তিন থাকতে পারে বলে রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। এছাড়াও আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রার উন্নতি হলেও মৃদু শৈতপ্রবাহের পূর্বাভাস জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

শীত উপেক্ষা করে নগরীর শাপলা চত্তরে ডালা কোদাল নিয়ে বসে থাকা রহিজ উদ্দিন বলেন, 'প্যাটতো বাহে জার বোজে না। হামার জার নাগে বাহে এই কতা শোনে কায়? হামার খোঁজ কাইয়ো না রাখে। জারোত বাড়িত থাইকলেতো প্যাটোত ভাত যাবার নায়। কি আর করার,জারোতে আসি বসি থাকায় নাগে।'

একই স্থানে বসে থাকা কয়েকজন খেটে খাওয়া মানুষ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, 'কয়দিন হাতে খুবই শীত পরছে। হামার এতি এলাও কম্বল না দেয় কাইয়ো। শুধু গ্রামে গ্রামে দেয় বরলোকের ঘর। হামরা গরীব মানুষ শহরোত থাকি জইনতে কোন না পাই। কারো চোখে হারা না পরি। শীত শেষে কম্বল পায়া কি করমো। হামার জার কাটে এইতন করিয়াই৷'

বিজ্ঞাপন

রংপুর নগরীর রবার্টসনগঞ্জ এলাকায় ভোরে পিঠার পসরা সাজিয়ে বসা নারী তাছলিমা বলেন, 'স্বামী নাই দুই ছাওয়া নিয়া করি মিলি খাই। শীতের দিন পিঠা ভালো চলে এইজন্যে দুইবেলা পিঠা বিক্রি করি। টোনাটুনির মধ্যে কোনমতে দিন পার। ভোরে খোলা জায়গায় চুলা নিয়া বসি খুব শীত লাগে। এখনো কোন শীতের কাপর বা কম্বল কেউ দেয় নাই নিজের যা আছে কোনরকমে পরি থাকি।'

সন্ধ্যার পরে শহরে বিভিন্ন স্থানে এবং বিভিন্ন এলাকাগুলোতো দেখা যায়, খড়কুটো, পলিথিন জ্বালিয়ে আগুন পোহানের দৃশ্য। শীত মোকাবেলায় আগুন পোহানোর ধুম পরে যায় সব বয়সীদের মাঝে। তবে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হওয়ার ঘটনাও বাড়ছে।।

চলমান শীতে রংপুর মেডিকেলে এখন পর্যন্ত আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন ৬ জন। শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

এ বিষয়ে রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, চলমান শীতে কয়দিন ধরে বেশির সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা ও তীব্র বাতাস অনূভুত হচ্ছে এই অবস্থা আরও দুই- তিন থাকতে পারে।