পরিবর্তিত বাংলাদেশকে সমর্থন দেবে জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতর: ফলকার টুর্ক
জাতীয়
বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতর সম্পূর্ণ সমর্থন দেবে বলে জানিয়েছেন সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এর আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার।
বিজ্ঞাপন
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে তিনি জানান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়ক নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আজ সেনাপ্রধান, বাণিজ্য উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে, সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাতে টুর্ক হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এ সময় টুর্ককে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র তৌফিক হাসান। ঢাকায় আসার পর ৭ জন উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন টুর্ক এবং ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতর খোলার বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সাবেক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট ২০২২ সালে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
লক্ষ্মীপুরে জরায়ু ক্যান্সারের ভ্যাকসিন (এইচপিভি) প্রতিরোধ টিকা নেওয়ার পর একটি মাদরাসার অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে ১৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকালে দত্তপাড়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজাউল ইসলাম।
অসুস্থ ১৭ জন শিক্ষার্থীকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয় বলে জানান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম।
মাদরাসা ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ১০ থেকে ১৪ বছরের মেয়েদের জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা দেওয়া হয়। টিকা দেওয়ার আধা ঘণ্টা পর কয়েকজন ছাত্রী মাথাঘুরে পড়ে যায। এরপর একে একে ১৭ ছাত্রীর বমিভাব ও মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, টিকা নেওয়ার কিছুক্ষণ পর প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ শিক্ষার্থীদের সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের শ্বাসকষ্টসহ নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা. মোরশেদ আলম হিরু বলেন, শিক্ষার্থীরা ভয় পেয়েছে, এতে তারা কিছুটা অসুস্থ হয়েছে। তবে তারা এখন সুস্থ আছে।
উল্লেখ্য, বিনামূল্যে ২৪ অক্টোবর থেকে জেলার ৫টি উপজেলার ১ হাজার ৬৭২টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ১ লাখ ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে দেওয়া হচ্ছে এইচপিভি টিকা।
খরচ পোষাতে না পেরে বান্দরবানে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন হোটেল-রিসোর্ট-রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। আগামী ১ নভেম্বর রাঙামাটি ও ৫ নভেম্বর থেকে খাগড়াছড়ি ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হলেও বান্দরবানে এখনও বহাল আছে। বান্দরবানের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) হোটেল-রিসোর্ট-রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, গত ৭ অক্টোবর বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এ তিনটি জেলায় ‘পর্যটক ভ্রমণ নিরুৎসাহিত’ করার কথা বলা হয়। যদিও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন নিরুৎসাহিত নয় বরং নিষেধাজ্ঞা ছিল। কি বিষয়ে এ নিষেধাজ্ঞা ছিল এ বিষয়ে প্রশাসন থেকে স্পষ্ট কিছু জানানো না হলেও ধারণা করা হয় পাহাড়ে ধর্মীয় উৎসব চলাকালীন সময়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রশাসন থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
বান্দরবানে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সোমবার (২৮ অক্টোবর) পর্যটন ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসককে একটি লিখিত আবেদনও করেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, সেবার মাধ্যমে সামান্য লাভের আশায় জেলাজুড়ে কয়েক শত লোক পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করেছে। এসব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অধিকাংশই ঋণগ্রস্ত। এদের সাথে গণপরিবহন, চাঁদের গাড়ি, বার্মিজ স্টোর, ইঞ্জিন চালিত বোট, থ্রি হুইলার, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন খাতে যুক্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে অন্তত ২০ হাজারেরও অধিক জনগণ। যা সম্পূর্ণ পর্যটক নির্ভর। তবে ২০১৯ সাল থেকে করোনা ভাইরাস, বান্দরবানে ভয়াবহ বন্যা, সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে লাগাতারভাবে বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
বিগত কয়েকমাস পূর্বে সীমিত পরিসরে কিছু পর্যটন স্পট পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দিলেও দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে কাঙ্খিত পর্যটক, ভ্রমণে আসতে পারেনি। ফলে এখনকার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলোতে ব্যাপক ধস নামে। সর্বশেষ গত ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের বান্দরবান ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে জেলা প্রশাসন। যার কারণে ব্যয়ভার মেটাতে না পেরে কর্মী ছাঁটাইসহ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে অনেক বিনিয়োগকারী।
রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পারিপার্শ্বিক কারণে পর্যটকের উপস্থিতি আশানুরূপ নেই। এ কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। খরচ পোষাতে না পারায় ইতোমধ্যে বেয়াই বাড়ি, গার্ডেন সিটি, কলাপাতাসহ জেলা সদরের প্রায় ২৫ রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী ৩১ তারিখের পর চলতি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা না হলে আরও অনেক রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
হোটেল ডি’মোরের ম্যানেজার হ্যাপী মারমা জানান, তিন তারকামানের তাদের হোটেলটিতে দৈনিক অন্তত ৫০ হাজার টাকা খরচ আছে। পর্যটকের উপস্থিতি না থাকায় তাদের হোটেলটি চলতি মাসের গত ৫ তারিখ থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বান্দরবান আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, ২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে ক্রমান্বয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বান্দরবান জেলার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে চলমান খরচ বহন করতে না পারায় অনেক হোটেলের মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে হোটেল ডিমোর, লাভা তং, হোটেল হিলবার্ডসহ আরও কয়েকটি আবাসিক হোটেল।
তিনি আরও বলেন, আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা না হলে অন্যান্য হোটেলগুলো বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলে কোনো রকম বাঁচবে হোটেল-রিসোর্ট-রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, পর্যটন শিল্প নিয়ে আমরা আশাবাদী। পার্বত্য উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে। আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) এ বিষয়ে সভা আছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ 'ফ্যাসিবাদের সব বৈশিষ্ট্য' প্রদর্শন করেছে অভিযোগ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ দেশের রাজনীতিতে আপাতত আওয়ামী লীগের কোনো স্থান নেই।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। বুধবার (৩০ অক্টোবর) পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়েছে।সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
শেখা হসিনাকে দেশে প্রত্যপর্ণ করার বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাক্ষাৎকারে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখনই ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইবে না।
এর কারণ হিসেবে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, সম্ভবত দুই দেশের মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে তা এড়াতেই এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি জানায়, “স্বল্প সময়ের জন্য হলেও, নিশ্চিতভাবেই এই দলের কোনো স্থান বাংলাদেশে নেই। আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা বাংলাদেশে নেই।”
তিনি বলেন, "আওয়ামী সরকার বিগত ১৫ বছরে জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্যবহার করেছে এমনকি নিজেদের স্বার্থ বাড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও নিয়ন্ত্রণ করেছে তারা।"
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো ফ্যাসিবাদী দলের অস্তিত্ব থাকা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য ৮ নভেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার সঙ্গে যাবেন মেডিকেল বোর্ডের ৭ চিকিৎসক।
জাহিদ হোসেন জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রথমে লন্ডনে যাবেন ছেলে তারেক রহমানের কাছে। বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে লন্ডন থেকে তৃতীয় একটি দেশে নিয়ে তাকে কোনো একটি ‘মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে’ ভর্তি করা হবে।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন। তিনি রাজধানীর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত বছরের ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। পরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় ২৭ অক্টোবর। তার স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় সাজা পেয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দি ছিলেন। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এক নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ স্থগিত করে তাকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ছয় মাস পরপর মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার। তবে ক্ষমতার পালাবদলের পর অন্তর্বতী সরকার দুর্নীতির মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।