চাল তুলে ইফতার ও সেহেরি করে ওরা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মোহেব্বীয়া দারুচ্ছুন্নাত এতিমখানার শিক্ষক ও ছাত্ররা। ছবি: বার্তা২৪.কম

মোহেব্বীয়া দারুচ্ছুন্নাত এতিমখানার শিক্ষক ও ছাত্ররা। ছবি: বার্তা২৪.কম

‘দিনের বেলায় এলাকার কমবেশি প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে চাল (মুষ্টি চাল) তুলি। সেই চাল দিয়েই আমরা ইফতার, সন্ধ্যারাত ও সেহেরিতে খাই। আমাদের এখানে থাকতে খুব কষ্ট হয়। যদি সরকার আমাদের এই এতিমখানার জন্য কিছু সাহায্য করে তাহলে অনেক ভালো হয়।’

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সন্ধ্যায় বার্তা২৪.কমকে এ কথাগুলো বলছিল ঠাকুরগাঁও রুহিয়া থানার মোহেব্বীয়া দারুচ্ছুন্নাত এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং হাফেজিয়া মাদরাসার ছাত্ররা।

বিজ্ঞাপন

২০১৫ সালে রুহিয়া থানার মধুপুর গ্রামের ২০ জন এতিম বাচ্চা ও ২ জন শিক্ষক নিয়ে শুরু হয় মোহেব্বীয়া দারুচ্ছুন্নাত এতিমখানার পথ চলা। এরপর থেকে এলাকাবাসীর সাহায্য নিয়ে ধীরে ধীরে চলতে থাকে। তবে সরকারি কোনো বরাদ্দ না থাকায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এটি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/09/1557409966227.gif

এ এতিমখানার ছাত্ররা মুষ্টি চাল তুলে তিনবেলা খেতে পায়। এমনকি থাকার জায়গারও সংকট রয়েছে। চলছে রমজান মাস। বর্তমানে ছাত্ররা প্রতিদিন রুহিয়া থানাধীন প্রতিটা গ্রামে গিয়ে মুষ্টি চাল সংগ্রহ করছে। এ চাল বিক্রির টাকা দিয়েই তাদের ইফতার, সন্ধ্যারাত ও সেহেরিতে খাওয়ানো হয়।

মোহেব্বীয়া দারুচ্ছুন্নাত এতিমখানার ছাত্র গোলাম রাব্বি বলেন, ‘আমরা এখানে এক রুমে ২০ জন ছাত্র থাকি। এভাবে থাকতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। এছাড়া খাওয়ার কষ্টও আছে। আমাদের সরকার কিংবা বিত্তশালী কেউ সাহায্য করলে অনেক উপকার হতো।’

ওই এতিখানার শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এলাকাবাসীর অর্থায়নে আমাদের এই এতিমখানাটি চলছে। এখানে ছাত্ররা খুব কষ্টে থাকে। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় একটি রুম তৈরি করার চেষ্টা করছি। কিন্তু অর্থের অভাবে সেটির কাজও বন্ধ হয়ে গেছে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/09/1557409991342.gif

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই এই এতিমখানাটি আমাদের এলাকায় আছে। এখানে তারা নামাজ ও কোরআন পড়ে। এ দৃশ্যটি দেখতে অনেক ভালো লাগে। কিন্তু কষ্টের বিষয় এই ছাত্ররা এখানে খুব কষ্টে থাকে।’

মোহেব্বীয়া দারুচ্ছুন্নাত এতিমখানার সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাইনি। সরকারিভাবে বা সমাজসেবার মাধ্যমে কোনো অনুদান দেওয়া হলে এতিম বাচ্চাদের জন্য অনেক ভালো হতো।’

ঠাকুরগাঁও সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু বক্কর সিদ্দীক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা এতিমখানাতে অনুদান দেই। তবে সেই অনুদানের জন্য এতিমখানাকে সমাজসেবা থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।’