ইয়েমেনের সংকটের শুরু ২০১১ সালে আরব বসন্তের পর থেকে। আরব বসন্তের ধাক্কায় সৌদিপন্থী শাসক আলী আবদুল্লাহ সালেহর পলায়ন এবং ইরানপন্থী শিয়া হুতিদের রাজধানী সানা দখল ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধের সূচনা করে। এরপর দেশটিতে বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীও তাদের তৎপরতা বাড়িয়ে দেয়। এভাবেই ইয়েমেনের সংকট জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকে।
সময় যতই গড়িয়েছে, ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ আর অভ্যন্তরীণ লড়াইয়ে সীমাবদ্ধ থাকেনি। ক্রমেই আঞ্চলিক লড়াই থেকে আন্তর্জাতিক আবহ লাভ করেছে।
বিজ্ঞাপন
ইয়েমেন মূলত মার্কিন ও ইরানিদের যুদ্ধ চলছে। মার্কিনের পক্ষে প্রক্সি দিচ্ছে সৌদি আর হুতিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে ইরান। মাঝ থেকে দুর্দশায় পড়েছে সাধারণ নাগরিকরা।
ইয়েমেনের এই বহুজাতিক লড়াইয়ের সাধারণ মানুষ এক নিদারুণ সময় অতিবাহিত করছে। কিন্তু ইয়েমেনের সংকট মনে হয় সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেনি। সবাই ফিলিস্তিন বা সিরিয়ার সংকট নিয়ে যেভাবে কথা বলছে, ইয়েমেনের যুদ্ধ নিয়ে সেভাবে আলোচনা হচ্ছে না। বাস্তবতা হলো ইয়েমেনিদেরও মনে রাখতে হবে। ক্ষুধায়, বোমায়, গুলিতে ইয়েমেনিরা যেন পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে না যায়।
এ লক্ষে ইয়েমেনে শিয়া সমর্থিত হুথি ও আরব জোট নিয়ন্ত্রিত উভয় এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে আরব আমিরাত ও সৌদি আরব।
আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহায়তা বিষয়ক মন্ত্রী রীম আল হাশিমি জানান, ‘গত নভেম্বরে ইয়েমেনকে সহায়তা হিসেবে ৫০ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ অর্থ প্রদান করা হচ্ছে এবং সহায়তাগুলো বিতরণে ইতোমধ্যেই আমরা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ শুরু করেছি।’
ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদে রাব্বু মনসুর হাদিকে পুনর্বহাল করতে হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত আবর জোটের দ্বিতীয় প্রধান সদস্য আমিরাত। দেশটি ২০১৫ সালে ইয়েমেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬শ’ কোটি ডলারের সহায়তা কার্যক্রম চালিয়েছে। ৫৪১ কোটি ডলারের সহায়তা আমিরাত সরাসরি ইয়েমেনকে দিয়েছে এবং জাতিসংঘের সহায়তা তহবিলে দিয়েছে আরও ২৮ কোটি ৭ লাখ ডলার।
আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে শিক্ষার হার সবচেয়ে বেশি যে দেশগুলোতে তার মধ্যে ক্যামেরুন অন্যতম। সংগ্রামী জীবনের পাশাপাশি কোরআন শিক্ষায়ও এ দেশের মুসলমানদের যথেষ্ট আগ্রহ।
দেশটির এক সাধারণ কিশোরী আসমা। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি এলাকায় পরিবাবের সঙ্গে তার বসবাস। সে এখন পবিত্র কোরআন হেফজ করছে।
ক্যামেরুনে আসমা ও তার সমবয়সী কিশোর-কিশোরীরা খুবই আকর্ষণীয় ও অভিনব পদ্ধতিতে কোরআনে কারিম হেফজ (মুখস্থ) করে। তাদের প্রত্যেকের হাতে একটি করে মারুলা কাঠের স্লেট বা তক্তা থাকে। আকৃতি ও মান অনুযায়ী এসব স্লেটের দাম নির্ধারিত হয়। শিক্ষার্থী পবিত্র কোরআনের যে সুরা বা অংশটি মুখস্থ করতে চায় তাকে স্লেটে সে অংশ ও সুরাটি লিখে দেওয়া হয় এবং স্লেট দেখে দেখে তাকে মুখস্থ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। স্লেটে লিখতে যে কালি ব্যবহৃত হয় তা পানি, লোবান (আগরবাতি তৈরির বিশেষ দ্রব্য) ও কাঠকয়লা দিয়ে তৈরি। লেখা হয় সাদা পালকের কাঠি দিয়ে।
হাতে লেখা সুরাটি যখন শিক্ষার্থীর মুখস্থ হয়ে যায়, তখন এটি শিক্ষককে শোনাতে হয়। পড়া শুনে শিক্ষক খুশি হলে স্লেটটি পানি দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে আবার নতুন সুরা ও অংশ লেখার অনুমতি পায় শিক্ষার্থী।
আসমা ও তার সঙ্গীরা সাধারণত এভাবেই পবিত্র কোরআনে কারিম হেফজ সম্পন্ন করে। স্লেট ধোওয়ায় যে পানি ব্যবহার করা হয়, ক্যামেরুনে সেই পানি খুব মূল্যবান। বিশেষ পাত্রে সংরক্ষণ করে বিভিন্ন কাজে বরকতস্বরূপ তা ব্যবহার করে ক্যামেরুনবাসী। বর্তমানে এখানে কোরআনের সাধারণ প্রতিলিপির ব্যবহার শুরু হলেও প্রাচীন এই পদ্ধতিটি এখনো অনেকে আঁকড়ে রেখেছে।
ক্যামেরুন মধ্য আফ্রিকার এটি দেশ। এর পশ্চিমে নাইজেরিয়া, উত্তর-পূর্বে চাদ প্রজাতন্ত্র, পূর্বে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ও ইকুয়াটরিয়াল গিনি, গ্যাবন, দক্ষিণে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র। ক্যামেরুন দুই শতাধিক ভাষাভাষী গোষ্ঠীর বাসস্থান।
ব্রিটেন ও ফ্রান্সের দুটি ঔপনিবেশিক অঞ্চল একত্র হয়ে ১৯৬১ সালে ক্যামেরুন গঠিত হয়। এখনো শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে আধুনিক ক্যামেরুন।
দেশটির পুরো নাম ক্যামেরুন প্রজাতন্ত্র। রাজধানী ইয়াউন্দে। সরকারি ভাষা ফরাসি, ইংরেজি, বিভিন্ন ও জাতি-গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা। প্রধান ধর্মীয় গোষ্ঠী খ্রিস্টান, মুসলমান, আদিবাসীদের নিজস্ব ধর্ম।
ইউরোপিয়ানদের মধ্যে সর্বপ্রথম পর্তুগিজরা ১৪৭২ খ্রিস্টাব্দে ক্যামেরুন আসে। এর আগে ক্যামেরুন সম্পর্কে খুব কমই জানা ছিল ইউরোপের মানুষের। দেশটি ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের ১ অক্টোবর ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ওই দিনটি তারা স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে। কফি, কোকো, তুলা, কলা ও তৈলবীজ উৎপাদনে ক্যামেরুন বিখ্যাত।
ক্যামেরুন ১০টি প্রদেশে বিভক্ত। এটি একটি গরিব রাষ্ট্র। দেশের ৩০ শতাংশ অধিবাসীকে দৈনিক ১.২৫ ডলারের কম অর্থ দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।
ক্যামেরুনের আয়তন চার লাখ ৭৫ হাজার ৪৪২ বর্গকিলোমিটার বা এক লাখ ৮৩ হাজার ৫৬৯ বর্গমাইল। প্রায় ৩ কোটি জনসংখ্যার এই দেশ আয়তন বিবেচনায় ৫৬তম।
১৮০০ শতকে ক্যামেরুনে মুসলিম বণিক ও সুফি-ধর্ম প্রচারকদের মাধ্যমে ইসলামের প্রচার-প্রসার ঘটে। বর্তমানে ক্যামেরুনের প্রায় ৪৮ শতাংশ মানুষ সুফি মতবাদে বিশ্বাসী।
ক্যামেরুনে মুসলমানদের সঠিক সংখ্যা নিয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। আল মুসলিম ডটনেটের তথ্য মতে, দেশটিতে মুসলিম সংখ্যা মোট অধিবাসীর ২৪ শতাংশ। সিআইএর দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুকের তথ্য মতে, ক্যামেরুনে মুসলিম জনসংখ্যা মোট অধিবাসীর ২০.৯ শতাংশ।
তবে অন্যান্য সূত্র থেকে জানা যায় যে, ক্যামেরুনের জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম। সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পরাশক্তি হিসেবে বিশ্বরাজনীতিতে মুসলমানরা হাজার বছরের বেশি সময় অধিষ্ঠিত থাকলেও বিগত কয়েক শ বছর থেকে তারা পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্রের জালে আটকে রয়েছে। এখন তারা পৃথিবীর অন্যতম নির্যাতিত ও বিভক্ত জাতি।
ক্যামেরুনের মুসলিম শিশুদের মধ্যে কোরআনচর্চার বেশ আগ্রহ দেখা যায়। দেশটির ক্যামেরুনিয়ান সংবিধানে ধর্মের স্বাধীনতার বিধান রয়েছে এবং সরকার সাধারণত এই অধিকারকে সম্মান করে।
দেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর কার্যনির্বাহী পরিষদ পুনর্গঠন করেও নেতৃত্ব ধরে রাখতে পারলো না হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) নেতৃবৃন্দ। বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিক ও কয়েকটি এজেন্সির স্বত্বাধিকারীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক অফিস আদেশে হাবে প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২-এর ১৭ ধারা মোতাবেক সংগঠনটির বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ দাউদুল ইসলামকে হাবের প্রশাসক নিয়োগ করা হলো। তাকে ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
এদিকে হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) উদ্যোগে বুধবার (১৬ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রশাসক নিয়োগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
হাবে প্রশাসক নিয়োগের কারণ হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে বলা হয়েছে, হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি নিবন্ধিত বাণিজ্য সংগঠন। বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সিস মালিকবৃন্দ ও মেসার্স এস. আর ট্রেড ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস, ইস্ট বাংলা হজ সার্ভিস লিমিটেড এবং হাবের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য ও আল নাফি ট্রাভেলসেরর স্বত্বাধিকারীদের উপস্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে হাবের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির প্রতিনিধিরা সন্তোষজনক জবাব উপস্থাপন করতে পারেননি।
উল্লেখ্য, হজযাত্রীদের সেবায় নিয়োজিত সরকারের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এবং রাজকীয় সৌদি সরকারের অনুমোদিত হজ এজেন্সিগুলোর মালিকদের সংস্থা হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। বর্তমানে হাবের সদস্য সংখ্যা এক হাজার ১১৭২ জন।
সরকার পরিবর্তনের পর হাব কার্যনির্বাহী পরিষদের ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচনে নির্বাচিত সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম অসুস্থতার কারণে গত ২২ আগস্ট পদত্যাগ করায় হাব কার্যনির্বাহী পরিষদের দশম সভায় উপস্থিত সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে কার্যনির্বাহী পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়। কার্যনির্বাহী পরিষদ পুনর্গঠনে হাবের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক আহমদ সরদার। তিনি আগে মহাসচিব ছিলেন। ফরিদ আহমেদ মজুমদারকে মহাসচিব করা হয়, আর ইসি সদস্য হন মেজবাহ উদ্দিন সাঈদ।
সরকারি মাধ্যমে ২০২৫ সনের হজযাত্রীদের হজ গাইড নিয়োগের আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি পত্র জারি করা হয়েছে।
জারিকৃত পত্রে বলা হয়েছে, ২০২৫ সনের হজে সরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের হজ গাইড হিসেবে নিয়োগের লক্ষ্যে আবেদনের সময় আগামী ২০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো। এ সময়ের মধ্যে আগ্রহী ব্যক্তিরা শুধুমাত্র হজ পোর্টালে www.hajj.gov.bd /hajjguide লিংকে ক্লিক করে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। সরাসরি কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না। আবেদন দাখিল বিষয়ে ১৬১৩৬ নম্বরে ফোন করে প্রয়োজনীয় তথ্য জানা যাবে।
হজ গাইডকে ন্যূনতম একবার পবিত্র হজপালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। প্রার্থীর বয়স ন্যূনতম ৩২ বছর ও সর্বোচ্চ ৬২ বছর হতে হবে। সেই সঙ্গে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হওয়া জরুরি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রার্থীকে ন্যূনতম এসএসসি বা সমমান পাস হতে হবে। শুদ্ধভাবে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও হজের প্রয়োজনীয় মাসয়ালা-মাসায়েল জানতে হবে। অন্যান্য যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে ৪৪ জন হজযাত্রী সংগ্রহকারী প্রার্থী অগ্রাধিকার পাবেন।
প্রার্থীকে স্মার্টফোন, e-Hajj BD মোবাইল অ্যাপ ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে। কঠোর পরিশ্রমী ও আচরণে বিনয়ী হতে হবে। আরবি ভাষায় পারদর্শী প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
সাক্ষাৎকারে প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত প্রার্থীদের প্রশিক্ষণে আবশ্যিকভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। এর আগে হজ গাইড হিসেবে দায়িত্বে অবহেলা বা শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে অভিযুক্ত ব্যক্তির আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার একটু আগে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করলেন সৌদি আরবের এক বাবা।
ইসলামের বিধানে ‘দিয়ত’ (নিহত ব্যক্তির রক্তের বিনিময়স্বরূপ যে অর্থ তার (নিহতের) উত্তরাধিকারীদের দেওয়া হয়, তাকে ‘দিয়ত’ (রক্তপণ) বলা হয়।) নিয়ে হত্যাকারীকে ক্ষমার বিধান থাকলেও এই বাবা এ ধরনের কোনো অর্থ গ্রহণ করেননি। তিনি দয়াময় আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় ছেলের ঘাতককে এমনিই ক্ষমা করে দিয়েছেন।
গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছে, মহানুভবতার পরিচয় দেওয়া এই বাবার নাম মোহাম্মদ বিন সাগাহ। তিনি সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল আসিরের বেসার এলাকার বাসিন্দা।
সৌদি আরবে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। দণ্ড কার্যকরের সময় অনেক মানুষ উপস্থিত থাকেন। ছেলের হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের দিন তিনি উপস্থিত মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধুমাত্র আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, রক্তের অর্থ হিসেবে এক রিয়ালও গ্রহণ করবো না।
তবে তার ছেলে কবে এবং কীভাবে হত্যার শিকার হয়েছিল সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। যেহেতু হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে, তাই সংবাদমাধ্যমে তার পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়নি।
ক্ষমা ঘোষণার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কালো বিশত পরিহিত মোহাম্মদ বিন সাগাহ স্থানীয় গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমার কথা ঘোষণা করছেন। এ সময় উপস্থিত জনতা আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিয়ে এবং তার কল্যাণের জন্য সমস্বরে দোয়া করছে। গোত্রের নেতারা তার হাতে চুমো খাচ্ছে।
সৌদি আরবে সাম্প্রতিক সময়ে হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেওয়ার অনেক ঘটনা শোনা গেছে। এ বছরই এক বাবা তার ছেলের হত্যাকারীকে দণ্ড কার্যকর করার একটু আগে ক্ষমা করে দেন। যদি তিনি ক্ষমা না করতেন তাহলে ওই ঘাতকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়ে যেত।
ইসলামে ক্ষমাকে একটি মহৎ গুণ হিসেবে ধরা হয়। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সব মুসলিমকে ক্ষমা প্রদর্শনের কথা বলেছেন। এমনকি যারা অমুসলিম তাদেরও ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।