সহজ আমল, অনেক সওয়াব
প্রতিদিন পাঁচবার আমরা মসজিদে নামাজ পড়তে যাই। প্রতিবারই মসজিদে প্রবেশের সময় আমাদের জুতা খুলে মসজিদে প্রবেশ করতে হয়, কোনো এক পা দিয়েই আমাদের মসজিদে প্রবেশ করতে হয়। আমরা যদি বাম পায়ের জুতাটা আগে খুলি আর ডান পা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করি, তবে এতে দু’টি সুন্নত আদায় হলো।
একইভাবে বের হওয়ার সময় যদি বাম পা দিয়ে মসজিদ থেকে বের হই আর ডান পায়ের জুতাটা আগে পরি, তবে আরও দু’টি সুন্নত আদায় হলো।
এ ছাড়া মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়া- দুই সময়েই বিসমিল্লাহ ও দরূদ শরিফ- ‘আসসালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসুলিল্লাহ’ পড়া সুন্নত। এতটুকু আদায় করলে দুয়ে দুয়ে আরও চারটি সুন্নত আদায় হয়। আর কেউ যদি মসজিদে প্রবেশের দোয়া- আল্লাহুম্মাফতাহলি আবওয়াবা রাহমাতিক। আর মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদ্বলিক। শিখে নিতে পারে এবং এর ওপর আমল করে, তবে আরও দু’টি সুন্নত আদায় হলো। এভাবে প্রতিবার মসজিদে প্রবেশের সময় পাঁচটি আর বের হওয়ার সময় আরও পাঁচটি, মোট দশটি সুন্নত আদায় হয়ে যায়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে হয় পঞ্চাশটি। এ তো এক দিনের হিসাব। ত্রিশ দিনে হয় তিনশটি। এক বছরে তিন হাজার ছয়শ পঞ্চাশটি।
পবিত্র কোরআনের ভাষ্য অনুসারে একটি আমলের জন্য যদি কমপক্ষে দশ গুণ সওয়াব দেওয়া হয়, তবে বছরব্যাপী এ ছোট আমলটুকু করতে পারলে আমলনামায় যোগ হবে ছত্রিশ হাজার পাঁচশ নেকি!
ছোট এ আমলটুকু যদি কেউ ধারাবাহিকভাবে দশ বছর করতে থাকে, বিশ বছর কিংবা ত্রিশ-চল্লিশ বছর, তবে আমলনামায় কী পরিমাণ নেকি যোগ হবে? এ তো গেল গাণিতিক হিসাব।
এর বাইরে আমরা এভাবেও চিন্তা করতে পারি, একটি সুন্নতের ওপর আমল করার অর্থ হচ্ছে, মহান আল্লাহ তার রাসুলকে আমাদের জন্যে আদর্শ হিসেবে ঘোষণা করেছেন, ওই রাসুলের নির্দেশিত পথ অনুসরণ ও অনুকরণ করে একটি আমল সম্পাদন করা। সুন্নত মোতাবেক আমলের কবুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি।
একবার দরূদ শরিফ পাঠ করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে দশটি রহমত নাজিল হয়- এটাও নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘোষণা। সে অনুসারে প্রতিবার মসজিদে প্রবেশ এবং সেখান থেকে বের হওয়ার সময় যে ব্যক্তি দরূদ শরিফ পড়ার আমল করে, তার ওপর দিনে কতবার রহমত নাজিল হয় শুধু এ আমলটি করার বদৌলতে? পুরো মাসে কতটি রহমত নাজিল হয়? বছরে, দশ বা বিশ বছরে তবে কতটি? আর এ সংখ্যা কমবেশি যাই হোক, আল্লাহর রহমত যার ওপর নেমে আসে, তার কি আর কোনোকিছুর ভাবনা থাকে?
এ হচ্ছে ছোট একটি আমলের আংশিক বিবরণ। এভাবে যে কোনো নিয়মিত আমলের ক্ষেত্রেই এমন হিসাব করা যাবে। কথা হলো, আমলটি নিয়মিত করতে পারলে অনেক ভালো। এতে কষ্টও কম হয়, প্রাপ্তিও বেশি হয়। দু’দিকেই লাভ।