যে আমলে জীবনে প্রাচুর্য আসে
মহান আল্লাহ ক্ষমা প্রার্থনাকারীর ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে প্রাচুর্য দান করেন। ক্ষমা প্রার্থনার ফলে মানুষের জীবন-জীবিকা, সন্তান ও সম্পত্তি বৃদ্ধি পায়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর আমি বললাম, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাকারী; তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন; তিনি তোমাদের সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন জান্নাত ও তোমাদের জন্য প্রবাহিত করবেন নহরসমূহ।’ -সুরা নুহ : ১০-১২
এ কথাটি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বলা হয়েছে যে, আল্লাহদ্রোহিতার আচরণ মানুষের জীবনকে শুধু আখেরাতে নয় দুনিয়াতেও সংকীর্ণ করে দেয়। অপর পক্ষে কোনো জাতি যদি অবাধ্যতার বদলে ঈমান, তাকওয়া এবং আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলার পথ অনুসরণ করে তাহলে তা শুধু আখেরাতের জন্যই কল্যাণকর হয় না, দুনিয়াতেও তার ওপর আল্লাহর অশেষ নেয়ামত বর্ষিত হতে থাকে।
কোরআনে কারিমে আরও বলা হয়েছে, ‘জনপদসমূহের অধিবাসীরা যদি ঈমান আনতো এবং তাকওয়ার নীতি অনুসরণ করতো তাহলে আমি তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতের দরজাসমূহ খুলে দিতাম।’ -সুরা আল আরাফ : ৯৬
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দিয়ে মক্কার লোকদের সম্বোধন করে আরও বলা হয়েছে, ‘আর তোমরা যদি তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং তার দিকে ফিরে আস তাহলে তিনি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের উত্তম জীবনোপকরণ দান করবেন।’ -সুরা হূদ : ৩
এসব আয়াতের আলোকে আলেমরা বলেন, গোনাহ থেকে তওবা ও ইস্তেগফার করলে আল্লাহতায়ালা যথাস্থানে বৃষ্টি বর্ষণ করেন, দুর্ভিক্ষ হতে দেন না এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে বরকত হয়। বিভিন্ন হাদিস থেকে এর সপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়া ক্ষমা প্রার্থনাকারীকে আল্লাহতায়ালা মানসিক গ্লানি থেকে মুক্ত করেন। ফলে তার দেহ ও মন সতেজ হয়। সে জীবনের সজীবতা খুঁজে পায়। আল্লাহর নবী হজরত হুদ (আ.) তার সম্প্রদায়কে বলেন, ‘এবং হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তার দিকেই প্রত্যাবর্তন করো। তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন এবং তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবেন। তোমরা অপরাধী হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিও না।’ -সুরা হুদ : ৫২
গোনাহের কারণে মানুষের অন্তর অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়। তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে সেই অন্ধকার দূর হয়। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুমিন যখন একটি গোনাহ করে তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে। অতঃপর যদি সে তওবা করে, গোনাহ পরিহার করে ও ক্ষমা চায়, তবে তার অন্তর আলোকমণ্ডিত হয়।’ -মুসনাদে আহমাদ : ৭৯৫২