করোনার দুঃসময়ে হাতে কোরআন লিখলেন জারিন
প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা না নিয়ে, শুধুমাত্র দেখে দেখে মনের আগ্রহে হাতে পবিত্র কোরআন লিখলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী জারিন তাসনিম দিয়া। টানা দেড় বছরের প্রচেষ্টায় তিনি কোরআন শরিফের ৩০ পারা হাতে লিখেছেন।
জারিন তাসনিম দিয়া দেশের অন্যতম প্রাচীন জেলা জামালাপুরের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য।
হাতে পবিত্র কোরআন লেখার বিষয়ে জারিন তাসনিম দিয়া বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি করোনায় ঘরবন্দি হয়ে কিছু একটা করার কথা ভাবছিলাম। চারদিকে মৃত্যু, শুধু দুঃসংবাদ আর দুঃসংবাদ, মনের ভেতরে একটা ভয় কাজ করছিল। তখনই ভাবনায় আসে এমন কিছু করব যা পরকালের পাথেয় হয়ে থাকে। সেই ভাবনা থেকে সাহস করে আরবি হরফ লেখা চর্চা করি। আমি মাদরাসায় পড়িনি কখনও। তবে আরবি হরফ লিখতে ও পড়তে জানতাম। সেই শিক্ষাকে আরও বেশি এগিয়ে নিয়ে কোরআনের একটি একটি করে শব্দ লিখেছি। সম্পূর্ণ কোরআন লিখতে আমার দেড় বছর সময় লেগেছে। আমি এই কোরআনের কপিটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে দেব। কোনো ভুল হলো কি না তারা সেটা সার্টিফাই করে আমাকে দিলেই এর কয়েকটি কপি বের করব। বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসায় দেব তেলাওয়াতের জন্য।’
এছাড়া নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিষয়টি নিয়ে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন এই আওয়ামী লীগ নেত্রী।
ফেসবুকে জারিন তাসনিম লেখেন, ‘ক্ষুদ্র জীবনে মানুষের অনেক শখ থাকে। অসম্ভবকে সম্ভব করে। ছোটবেলা থেকে আমারও একটি শখ ছিল পবিত্র কোরআন (৩০ পারা) হাতে লিখব। আর আজকে সেটি সম্ভবপর হয়েছে। বিগত দেড় বছরের প্রচেষ্টায় আজ আমি সার্থক। বিগত ২০২০ সালের এই করোনাকালীন সময়ে আমরা যখন সবাই ঘরবন্দি তখন থেকেই আমার এই উদ্যোগ শুরু হয়। লেখা শেখাটাই তখনই। আর আমি কোনো মাদরাসার শিক্ষার্থীও ছিলাম না। ওই যে বললাম, ইচ্ছে থাকলে আর ধৈর্য থাকলে সবই সম্ভব হয়। আমার জীবনের সেরা অর্জন এই হাতে লেখা কোরআন শরীফ (৩০ পারা)। কিছু অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। লাখ লাখ শুকরিয়া আল্লাহতায়ালার দরবারে। তিনি চেয়েছেন বলেই আমার পক্ষে সম্পূর্ণ কোরআন শরীফ হাতে লেখা সম্ভব হয়েছে। আমি চাই আমার হাতে লেখা এই পবিত্র কোরআন শরীফের কিছু কপি করে সেটা বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসায় দিতে। সেটা যেন আল্লাহতায়ালা কবুল করেন। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন।’