স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণকে বৈধতা দিল ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পার্লামেন্টের বাইরে উৎসুক জনতা

পার্লামেন্টের বাইরে উৎসুক জনতা

চিকিৎসকের সহায়তায় স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণকে বৈধতা দিল ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি বিল অস্ট্রেলিয়ার এ অঙ্গরাজ্যের নিম্নকক্ষে পাস হয়েছে।

পার্থে অবস্থিত পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিলে দর্শকসারিতে বসে থাকা ব্যক্তিরা আনন্দ উল্লাস করে। তৈরি হয় এক আবেগঘন মুহূর্তের। সংসদ সদস্যদের অনেকে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান ও কোলাকুলি করেন। পার্লামেন্টের বাইরেও আনন্দ মিছিল করে বিলের সমথর্কেরা।

বিজ্ঞাপন

বিলটি পাস করতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সংসদে বিতর্ক করেন সংসদ সদস্যরা। গত সপ্তাহে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে ম্যারাথন বিতর্কের পর এ সংক্রান্ত বিলটি পাস হয়।

চূড়ান্ত পর্বে বিলটি পাস হওয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী রজার কুক বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ এক প্রক্রিয়ার শেষ প্রান্তে। এটি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলীয় পার্লামেন্ট ও জনগণের জন্য গর্বের এক মুহূর্ত।’

বিজ্ঞাপন

অঙ্গরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্ক ম্যাকগোয়ানও বিলটি পাস হওয়ায় স্বাগত জানিয়েছেন। এক টুইট বার্তায় জানান, অঙ্গরাজ্যের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তটি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের ইতিহাসে স্থান করে নেবে।

এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় অঙ্গরাজ্য হিসেবে এ পদক্ষেপ নিলো ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যে স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণের বিষয়টিকে বৈধতা দেওয়া হয়।

২০১৭ সালে ভিক্টোরিয়ায় চিকিৎসকের সহায়তায় মৃত্যুবরণকে স্বীকৃতি দিয়ে আইন করে। আইনটি হওয়ার পর গত আগস্টে ক্যান্সারে আক্রান্ত এক নারী চিকিৎসকের সহায়তায় মৃত্যুবরণ করা প্রথম ব্যক্তি। অস্ট্রেলিয়ার আরেক অঙ্গরাজ্য কুইন্সল্যান্ডও বিষয়টি স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে ভাবছে।

স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণকে বৈধতা দেওয়া না দেওয়া নিয়ে বিলটি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াসহ অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন রাজ্যে আলোচনার তৈরি করে। নতুন আইনের বিরোধীরা একে বিপজ্জনক ও খেয়ালিপনা হিসেবে উল্লেখ করেছে। তবে নতুন আইনে একশোটিরও বেশি রক্ষাকবচ রয়েছে।

অস্ট্রেলীয় সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি জানিয়েছে, একজন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণের অনুমতি পাবে যদি চিকিৎসকের মতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি এমন পর্যায়ে চলে যায় যে তিনি ছয় মাস বা এক বছরের মধ্যে মারা যাবেন।

রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে মৌখিক ও লিখিতভাবে আবেদনপত্র দিতে হবে। এসব আবেদনপত্র দুজন চিকিৎসকের কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিতে হবে। এ দুজন চিকিৎসককে একে অপর থেকে স্বাধীন হতে হবে। আবেদন মঞ্জুর হলে রোগীকে নির্ধারিত সময়ের পর স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করতে দেওয়া হবে।