‘পাকিস্তানে প্রায়ই সংখ্যালঘুদের হত্যা করা হচ্ছে’
-
-
|
ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে সে দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের সংখ্যালঘুরা ধর্মের নামে পরিকল্পিত প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন।
খাজা আসিফকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, পরিষদের অধিবেশনে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে প্রায়ই সংখ্যালঘুদের হত্যা করা হচ্ছে। ইসলামিক দেশে তারা নিরাপদ নয়। আমি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাই, কিন্তু বিরোধীরা আমার প্রচেষ্টায় বাধা দিচ্ছে।’
এদিকে, এই অভিযোগ নিয়ে পাকিস্তান বিশ্বব্যাপী বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে।
সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে আসিফ বলেন, সহিংসতার শিকার অসংখ্য ব্যক্তিকে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগের কারণে নয়, বরং ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, 'পাকিস্তানে ছোট ছোট মুসলিম সম্প্রদায়ও নিরাপদ নয়, যা একটি লজ্জাজনক পরিস্থিতি। আমরা সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করতে চাই। আমাদের সংবিধানে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করা হলেও বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এ পর্যন্ত যারা নিহত হয়েছেন তাদের কাছে ধর্মীয় অবমাননার সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি; বরং ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা থেকে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মনে হয়।’
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, পাকিস্তানের হিন্দু, শিখ এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলি তাদের ধর্মীয় স্থানে জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ, অপহরণ, হত্যা এবং হামলাসহ চলমান সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, বিভিন্ন অঞ্চলে এই ঘটনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আহমদীয়া সম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস দ্বারা চালিত তাদের ধর্মীয় অনুশীলন, ঘৃণাত্মক বক্তব্য এবং সহিংস আক্রমণের উপর আইনি সীমাবদ্ধতাসহ উল্লেখযোগ্য নিপীড়নের মুখোমুখি হয়।
খ্রিস্টানরা কর্মসংস্থান এবং শিক্ষার মতো বিভিন্ন দিক থেকে বৈষম্যের মুখোমুখি হয় এবং ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগের মুখোমুখি হয়, যা প্রায়শই তা জনতার আক্রোশ এবং গির্জার আক্রমণের দিকে পরিচালিত করে।
পাকিস্তানের সোয়াত অঞ্চলে মাদিয়ান পুলিশ স্টেশনের ভেতরে পবিত্র গ্রন্থ অবমাননার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে জনতা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শিয়ালকোটের এক পর্যটক হিসেবে শনাক্ত ওই ব্যক্তিকে গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) উত্তেজিত জনতা জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলে।
ডন জানিয়েছে, স্থানীয় একটি বাজারে লোকজন দাবি করেছে যে, লোকটি ধর্ম অবমাননা করেছে, যার ফলে জনতা তাকে ধরে ফেলে এবং তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গণপিটুনির এটি দ্বিতীয় ঘটনা। গত মাসে সারগোধায় আরও একজনের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
