ধর্ষণের বদলা নিতে ২০ জনকে হত্যা, ৪৩ বছর পর রায়

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

১৯৮১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। সেদিনও ভালোবাসা দিবস ছিল। তবে ভালোবাসা নয়, এক অন্যরকম তেজের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে উচ্চবর্ণের ঠাকুর সমাজকে শিক্ষা দিয়েছিলেন ‘দস্যুরানী’ ফুলন দেবী। নিজের সাথে হওয়া ধর্ষণ ও অন্যান্য অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে কানপুরের রাজপুর থানা এলাকায় অবস্থিত বেহমাই গ্রামে ২০ জনকে হত্যা করেছিলেন তিনি। তার দলের সদস্যরা তাকে সহায়তা করেছিল। আশির দশকের সেই হত্যাকাণ্ডের পর পাড় হয়ে গেল ৪৩ বছর। সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুরের একটি আদালত সংশ্লিষ্ট দুজনের সাজা ঘোষণা করল।

ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে বর্তমানে দুজন বেঁচে আছেন। এদের একজনের নাম শ্যামবাবু কেওয়াত এবং অন্যজন বিশ্বনাথ। তার মধ্যে শ্যামবাবু কেওয়াতকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কানপুরের দেহাতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক অমিত মালব্য। এছাড়া, প্রমাণের অভাবে অন্যজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ফুলন দেবীর হাতে খুন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন উচ্চবর্ণের ঠাকুর সমাজের মানুষ ছিলেন। ঠাকুর সমাজ ও উচ্চবর্ণের প্রতিনিধিরা কোনো কারণ ছাড়াই ফুলন দেবীকে একটি ঘরে আটকে রেখে টানা কয়েক দিন ধর্ষণ করেন। এর প্রতিশোধ নিতেই ফুলন দেবী ডাকাত দলে যুক্ত হয়ে ২০ জনকে হত্যা করেন। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সেই ঘটনায় গোটা ভারতে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল। চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ভিপি সিং। ওই ঘটনায় ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। তবে বিচার চলাকালীন ৩২ জন মারা গেছেন। বর্তমানে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আর দুজন বেঁচে আছেন। 

এই মামলা চলাকালীন ২৮ জন সাক্ষী মারা যান। ২০১২ সালে কানপুরের ওই আদালতে চার্জ গঠন হয়েছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত, এই হত্যাকাণ্ডের পরেই ফুলন দেবীর নাম দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর একটি সাধারণ ক্ষমা প্রকল্পের অধীনে গণহত্যার দুই বছর পর মধ্যপ্রদেশে আত্মসমর্পণ করেছিলেন তিনি। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত জেলেও ছিলেন ফুলন দেবী। পরে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে ফুলন দেবীকে গুলি করে হত্যা করে এক আততায়ী।