ভারতের লোকসভার এথিক্স কমিটির শুনানি বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে। প্রথম দিনই ডাকা হয়েছে প্রধান দুই অভিযোগকারী বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাইকে।
নিশিকান্তের লিখিত অভিযোগ পেয়েই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এথিক্স কমিটিকে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে বলেন।
অতপর নিশিকান্ত এবং দেহাদ্রাইয়ের সাক্ষ্য শোনার দিনই তলব করা হয় অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে।
জানা গেছে, আগামী মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) এথিক্স কমিটির মুখোমুখি হতে হবে মহুয়াকে। বেলা ১১টায় তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মহুয়ার সাবেক ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ দেহাদ্রাই অভিযোগ করেন যে, দুবাইভিত্তিক শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে অর্থ ও উপহার নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলেন মহুয়া।
তিনি আদানি গোষ্ঠী এবং প্রধানমন্ত্রী মোদিকে টার্গেট করে সংসদে প্রশ্ন করেন। এই অভিযোগ বিজেপি সাংসদ নিশিকান্তকে জানানোর পাশাপাশি সিবিআইকেও চিঠি দেন দেহাদ্রাই।
এরপরেই নিশিকান্ত লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়ে মহুয়ার সাংসদ পদ বাতিলের দাবি জানান। ওই দাবির প্রেক্ষিতে এথিক্স কমিটিকে দায়িত্ব দেন স্পিকার।
এই বিতর্কের মধ্যেই হলফনামা দিয়ে হীরানন্দানি দাবি করেন, ‘মহুয়া নিজের সংসদীয় লগ-ইন তাকে পাঠিয়েছিলেন। তিনি তা ব্যবহারও করেন। বিনিময়ে মহুয়া অর্থ এবং উপহার নেন। নিয়মিত উপহার দিতে হতো তাকে।’
এদিকে, পূজার মধ্যেই নিশিকান্তকে নাম না-করে ‘ভুয়ো ডিগ্রিধারী’ বলে তোপ দেগেছিলেন মহুয়া। এক্স হ্যান্ডেলে মহুয়া লিখেছিলেন, ‘ডিগ্রিধারীরা দেশকে বিক্রি করেন। সামান্য অর্থের জন্য নিজেদের বিবেককে বিক্রি করেন! চোর মাচায়ে শোর।’
মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে প্রথম থেকেই তেমন কোনও মন্তব্য করেনি তৃণমূল।
‘মহুয়াকে ফাঁসানো হয়েছে’ বলে একমাত্র মন্তব্য করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তৃণমূল দূরত্ব রাখলেও সরব রাজ্য বিজেপি।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ওই অপরাধে শুধু সাংসদ পদ খারিজ নয়, মহুয়ার জেলে যাওয়া উচিত!
গত সোমবার মহুয়া সংক্রান্ত প্রশ্নে শুভেন্দু বলেন, ‘যিনি সংসদে দাঁড়িয়ে মোদিজিকে গালিগালাজ করেন, আদানির এজেন্ট ইত্যাদি বলেন, তিনি কার এজেন্ট, এটা প্রমাণ হয়ে গেছে! হীরানন্দানিজি প্রমাণ করে দিয়েছেন। আর নতুন করে কিছুই বলার নেই। আমরা পশ্চিমবঙ্গের জনগণ শুধুমাত্র তার সাংসদ পদ খারিজ চাই না, ওকে জেলে দেখতে চাই!’