যুক্তরাজ্যে প্রতি তিনজন নারী সার্জনের একজন যৌন হয়রানির শিকার

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সংগৃহীত প্রতীকী ছবি।

সংগৃহীত প্রতীকী ছবি।

যুক্তরাজ্যের নারী সার্জনরা গত পাঁচ বছরে ব্যাপক যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন এবং কিছু ক্ষেত্রে তারা সহকর্মীদের দ্বারা ধর্ষণের শিকারও হয়েছেন।

ব্রিটিশ জার্নাল অফ সার্জারি (বিজেএস) কর্তৃক প্রকাশিত নতুন একটি সমীক্ষায় এমন চিত্রই উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

বিজেএসের এক জরিপে যুক্তরাজ্যের অস্ত্রোপচার কর্মীদের গত পাঁচ বছরের যৌন আচরণ নিরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

বিজেএসের ওই সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (এনএইচএস) কর্মরত প্রতি তিনজন নারী সার্জনের মধ্যে একজন সহকর্মীদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।

বিজেএসের তথ্য মতে, তাদের জরিপে নিবন্ধিত পুরুষ এবং নারী সার্জনদের সম্পূর্ণ বেনামে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং ওই আমন্ত্রণে ১,৪৩৪ জন সাড়া দিয়েছিলেন।

ওই জরিপে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে ৩০ শতাংশ নারী সার্জন যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, ২৯ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত শারীরিক স্পর্শের অভিজ্ঞতা পেয়েছেন, ৪০ শতাংশেরও বেশি তাদের শরীর সম্পর্কে বাজে মন্তব্য শুনেছেন এবং ৩৮ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে যৌন বিদ্রুপের শিকার হয়েছেন।

বিবিসি ওই জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ৯০ শতাংশ নারী এবং ৮১ শতাংশ পুরুষ কোনও না কোনও ধরণের যৌন অসদাচরণের সাক্ষী হয়েছেন।

জরিপ সমীক্ষার উপসংহারে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের পুরুষ এবং নারী সার্জনরা ভিন্ন বাস্তবতায় বাস করছেন। সেখানে ঘন ঘন যৌন দুর্ব্যবহার ঘটে। কিন্তু, শ্রেণীবদ্ধ কাঠামো এবং লিঙ্গ ও ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার সংমিশ্রণের কারণে ঘটনাগুলো চাপা পড়ে যায়।

দ্য গার্ডিয়ানের মতে, জরিপের ফলাফলটি একটি অনিরাপদ কাজের পরিবেশ এবং রোগীদের জন্য একটি অনিরাপদ স্থান নির্দেশ করেছে।

সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, সমস্যাটির মোকাবেলায় এনএইচএস ট্রাস্ট, জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিল এবং রয়্যাল কলেজগুলোর মতো সংস্থাগুলোর প্রতি অনেকেরই বিশ্বাসের অভাব রয়েছে।

কারণ, মাত্র ১৫.১ শতাংশ নারী সার্জন জিএমসিকে তাদের যৌন অসদাচরণ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত বলে মনে করেন।

সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শক সার্জন প্রফেসর ক্যারি নিউল্যান্ডস বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা খাতকে একটি নিরাপদ জায়গা করে তুলতে আমাদের তদন্ত প্রক্রিয়াগুলোতে একটি বড় পরিবর্তন আনা দরকার, যাতে ভুক্তভোগীরা এসব ঘটনা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে স্বাধীন হয়ে উঠতে পারে।’

সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, কর্মীদের জন্য কর্মক্ষেত্রে হয়রানি, তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এমন ঘটনাগুলোর ভুক্তভোগীরা আত্মহত্যার কথা পর্যন্ত চিন্তা করে।

এক্ষেত্রে গবেষকরা অস্ত্রোপচার কর্মীদের সংস্কৃতি উন্নত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার এবং অপরাধীদের মোকাবেলা করার জন্য পর্যাপ্ত প্রক্রিয়া তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন।