তালেবানের মহড়ায় মার্কিন বাহিনীর ফেলে যাওয়া অস্ত্র-সাঁজোয়া
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে তালেবান যোদ্ধারা মার্কিন বাহিনীর ফেলে যাওয়া অস্ত্র নিয়ে সামরিক কুচকাওয়াজ করেছে। এ কুচকাওয়াজে রাশিয়ার তৈরি হেলিকপ্টারও প্রদর্শন করে তালেবান।
আফগান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারীরা বলছেন, কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তালেবান দেখিয়েছে, তারা গেরিলা যোদ্ধা থেকে নিয়মিত সামরিক শক্তিতে পরিণত হতে যাচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
চলতি বছরের আগস্টে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের সেনা প্রত্যাহার করা হয়। সেসময় তারা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র আফগানিস্তানে ফেলে যায়। ১৫ আগস্ট তালেবান রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ফলে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর ফেলে যাওয়া সব অস্ত্র তাদের হাতে চলে যায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির ২৫০ জন সেনার গ্রাজুয়েশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে এ কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। কুচকাওয়াজ চলাকালে কাবুলের মহাসড়কগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত এম ১১৭ সাঁজোয়া যান ধীর গতিতে আসা-যাওয়া করেছে।
এসময় তাদের মাথার উপরে উড়তে দেখা যায় কয়েকটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। অসংখ্য সেনার হাতে ছিল মার্কিন নির্মিত এম-ফোর অ্যাসাল্ট রাইফেল।
তালেবান কর্মকর্তারা বলছেন, আগের আফগান সরকার বাহিনীর পাইলট, কারিগর ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের তালেবানের নতুন বাহিনীর সঙ্গে একীভূত করে নেওয়া হবে। এছাড়া তালেবান বিদ্রোহীরা ঐতিহ্যবাহী আফগান পোশাক পরলেও এখন তারা প্রচলিত সামরিক পোশাক পরতে শুরু করেছে।
তালেবান বর্তমানে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করছে, তার অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এ অস্ত্রগুলো তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সাবেক আফগান জাতীয় বাহিনীকে দেওয়া হয়েছিল। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি পালিয়ে যাওয়ার পর ওই বাহিনীও ভেঙে যায়। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এ বিপুল অস্ত্রের ভান্ডার তালেবানের হাতে চলে যায়।
মার্কিন বাহিনীর তথ্যানুযায়ী গেছে, ২০০২-২০১৭ সাল পর্যন্ত দেড় দশকে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনীকে দুই হাজার ৮০০ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের সামরিক অস্ত্র দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বন্দুক, বিমান এবং গোয়েন্দা নজরদারি চালানোর জন্য ড্রোন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী আগস্টে আফগানিস্তান ত্যাগ করার আগে ৭০ টিরও বেশি বিমান ধ্বংস করে দেয়। এছাড়া এক ডজনেরও বেশি সাঁজোয়া যান বিকল করে দিয়ে যায়। তবে বাকি সমরাস্ত্রগুলো তালেবান বাহিনী দখল করে নেয়।