মালদ্বীপের জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মালদ্বীপ

মালদ্বীপ

ভারত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র মালদীপের দীর্ঘ সমালোচিত জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আধিপত্যকে কেন্দ্র করে এশিয়ার দুই পরাশক্তি চীন ও ভারতের তীক্ষ্ণ নজরে থাকবে এই নির্বাচন।

মালদ্বীপের নির্বাচন কমিশন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের পক্ষে কাজ করছে বলে অভিযোগ আনছেন তাঁর বিরোধী জোট। বিরোধী বলছে, কমিশন পর্যবেক্ষকদেরকে ব্যালট পেপার যাচাই করার সুযোগ দেবে না, যা ভোট গণনায় ব্যাপক জালিয়াতির সুযোগ করে দেবে।

বিজ্ঞাপন

হিউম্যান রাইটস ওয়াচও মালদ্বীপ সরকারের কার্যক্রমের সমালোচনা করেছেন। সংস্থাটির এশিয়ার সহযোগী পরিচালক প্যাট্রেশিয়া গসম্যান বিবিসিকে বলেন, ‘নির্বাচনের প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের জয় নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে বিরোধী প্রার্থীদের ঠেকাতে মালদ্বীপের কর্তৃপক্ষ সমালোচকদের আটক করেছেন, গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করেছেন এবং নির্বাচন কমিশনের অপব্যবহার করেছেন।’

ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপ রাষ্ট্রটি বাইরের বিশ্বে তার নয়নাভিরাম জলরাশি ও উন্নতমানের হোটেলের জন্য বিখ্যাত কিন্তু বিরোধী মত দমনের জন্য দেশটির সরকারকে অভিযুক্ত করে আসছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল।

বরাবরই প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন তাঁর বিরুদ্ধে আনা একক কর্তৃত্বের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি বলেন, ‘এদেশে যদি একনায়কতন্ত্র থাকে তবে কেউ আমার সাথে কেউ হাত মেলাতে আসবে না।’

মালদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনকে সর্মথন জানিয়ে আসছেন চীন এদিকে তাঁর বিরোধী ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ ভারত ও পশ্চিমাদের সমর্থনপুষ্ট।

মালদ্বীপের এই নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে দ্বীপরাষ্ট্রটির উপর অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র।

স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোটগ্রহণের প্রাক্কালে বিরোধীদলের সদর দপ্তরে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।

রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।

২৬টি প্রবাল প্রাচীর ও ১ হাজার ১৯২টি দ্বীপ নিয়ে মালদ্বীপ রাষ্ট্রটি গঠিত। দেশটির অর্থনীতির প্রধান শক্তি পর্যটন। সেখানে ৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস করে।

বিগত কয়েক বছর ধরে মালদ্বীপে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত বিরোধীদলের ৯জন রানৈতিক ব্যক্তিকে দণ্ডাদেশ থেকে মুক্তি দেয়, যার মধ্যে নির্বাসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদও আছেন, যাকে ২০১২ সালে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয়।

এই ঘটনার পরে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন এবং দুজন বিচারককে গ্রেফতারের আদেশ দেন। পরবর্তীতে আদালত তাঁর এই সিদ্ধান্তকে বাতিল ঘোষণা করে।

পরিস্থিতি দেখে ধারণা করা যাচ্ছিল যে আব্দুল্লাহ ইয়ামিন আবারও পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় বসতে চাচ্ছেন। ইয়ামিন তাঁর শাসন নিয়ে কোন সমালোচনা সহ্য করতে পারত না। এসব কারণে ওয়াশিংটন, লন্ডন ও নয়াদিল্লীর সমালোচনার মুখে পড়েন ইয়ামিন।

এদিকে এক সময় ভারতের প্রভাব-বলয়ের মধ্যে থাকা প্রতিবেশী রাষ্ট্রে নয়াদিল্লীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন অনেকে ভারতীয়। মোহাম্মদ নাশিদও ভারতীয় সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের আবেদন জানায়।