গাজীপুর (কাপাসিয়া) থেকে ফিরে: দূর থেকে দেখে হবে, ধানের জমির মাঝে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে, এক উড়োজাহাজ। কাছে গেলেই দেখা যাবে, কাগজ দিয়ে তৈরি উড়োজাহাজের আদলে তৈরি একটি ডিজাইন।
ভুল ভাঙবে তখন, যখন ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখা যাবে, আসলে এটি একটি রেস্টুরেন্ট, উড়োজাহাজ নয়! গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের পূর্ব খামের গ্রামের রফিক নামে এক তরুণ তৈরি করেছিলেন এই ‘বিমান বিলাশ রেস্টুরেন্ট’টি।
বিজ্ঞাপন
কয়েক বছর আগে এই রেস্টুরেন্ট-মালিক প্রবাসে চলে গেলে এটিও বন্ধ হয়ে যায়। তারপরেও এটিকে একনজর দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখানে ছুটে আসেন। উড়োজাহাজ আকৃতির এই দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হন তারা।
সরেজমিন দেখা যায়, পলিথিন দিয়ে কারুকার্য করে তৈরি করা এটিতে রয়েছে জানালা ও একটি দরজা। কাঠের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হয়। এখানে শিশুদের আনাগোনাই বেশি। বড়দের হাত ধরে এসে এই দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে বাড়ি ফিরে যায় তারা।
বিজ্ঞাপন
এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে এটি দেখার জন্য অনেক মানুষ এখানে ছুটে আসেন। এছাড়াও আশপাশের জায়গাগুলোও বেশ মনোরম। প্রকৃতির ছোঁয়া পাওয়া যায়। সে কারণে সবসময়ই লোকজন এখানে বেড়িয়ে যান।
প্রথম যখন উড়োজাহাজ আকৃতির এই রেস্টুরেন্টটি তৈরি করা হয়, তখন এটি দেখতে আরো বেশি সুন্দর ছিল। রাতেও মানুষজন আসতেন। গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা এটি দেখে আসল উড়োজাহাজে চড়ার স্বাদ নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়।
উড়োজাহাজ চলমান থাকাকালীন প্রতিটি মুহূর্ত কাটাতে হয় সচেতনভাবে। তবুও কখনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যদি দুর্ঘটনা ঘটে, তবে কীভাবে বাঁচা সম্ভব। এক বাক্যে বলতে গেলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি আপনার হাতে থাকে না। তারপরেও কথায় বলে, ‘সাবধানতার মার নেই।’
২০১৫ সালে প্রভাবশালী সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনের একটি পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে কয়েক বছরের তথ্য ঘেঁটে দেখানো হয়েছিল, উড়োজাহাজের কোন দিকের আসনে বসলে দুর্ঘটনার পরেও মৃত্যুর হার কম থাকে।
১৯৮৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত উড়োজাহাজ তথ্য ঘেঁটে পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, প্লেনের একদম পিছনের দিকের আসনে মৃত্যুর সম্ভাবনা ৩২ শতাংশ, মাঝের আসনগুলোতে মৃত্যুর সম্ভাবনা ৩৯ শতাংশ এবং সামনের দিকের আসনে মৃত্যুর সম্ভাবনা ৩৮ শতাংশ। অর্থাৎ, পিছনের দিকের আসনগুলোতে মৃত্যুর সম্ভাবনা তুলনামূলক কম।
তবে পরিসংখ্যান বলছে, পিছনের দিকের মাঝের আসনগুলোতে মৃত্যুর সম্ভাবনা সবচেয়ে কম— ২৮ শতাংশ।
সম্প্রতি কাজাখস্তানে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পর যে সব ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা গেছে, উড়োজাহাজের বেশিরভাগ অংশই ক্ষতিগ্রস্ত। তবে পিছনের দিকের অংশটি অক্ষত রয়েছে। সেখান থেকে কিছু যাত্রীকে বার করে আনতেও দেখা গিয়েছে উদ্ধারকারীদের।
আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের দাবি, তাদের কর্মীদের তৎপরতাতেই ২৯ জনের প্রাণ বেঁচেছে। দুর্ঘটনা আঁচ করে যাত্রীদের বিমানের পিছনে তুলনামূলক নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাই অনেককে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যদিও অনেকেই মেনে নিচ্ছেন, দুর্ঘটনার অভিঘাত আরও মারাত্মক হলে উড়োজাহাজ পিছনের আসনে বসলেও কাউকে বাঁচানো যেত না।
নরসিংদীতে শত বছরের ঐতিহ্য রাবানের জামাই বাবুর মেলা। এই মেলাকে কেন্দ্র করে জামাইরা শ্বশুরবাড়িতে বড় বড় মাছ নিয়ে যাওয়ায় এটি জামাই মেলা নামে প্রচলিত হয়েছে।
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার সনাতন ধর্মালম্বীদের জিনারদী ইউনিয়নের বরাবো, রাবান, কুরাইতলী সহ প্রায় ৯টি গ্রাম। এই এলাকার সনাতন ধর্মালম্বীদের রাবান এলাকার কানাইলাল জিউর মন্দিরে প্রতি পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহে মাসব্যাপী রাধা কৃষ্ণের লীলা কীর্তন শুরু হয়। মাসব্যাপী কীর্তন শেষে রাধা কৃষ্ণের যুগলবন্দীর দিনে অনুষ্ঠিত হয় এ মেলা।
মেলা থেকে আশপাশের গ্রামের জামাইরা বড় মাছ কিনে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যান। এ কারণে মেলার সময় আশপাশের গ্রামগুলোতে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। এটা মাছের মেলা হলেও সম্প্রতি এটি জামাই মেলা নামে পরিচিত। কাক ডাকা ভোর থেকে দশটা পর্যন্ত চলে মাছ কেনা-বেচার ধুম। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ বিক্রেতা বড় বড় মাছ নিয়ে আসেন মেলায়। এ নিয়ে মাছ ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতাও হয় বড় মাছ কেনা বেচার।
অপরদিকে স্থানীয় জামাই-শ্বশুরদের মধ্যেও বড় মাছ কেনার প্রতিযোগিতা চলে। মেলায় নিজ এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তবৃন্দরা ছুটে আসেন মাছ কিনতে, আবার কেউ আসেন মাছ দেখতে। মেলায় সামুদ্রিক চিতল, বাঘা, আইড়, বোয়াল, রুই, কাতল, কালী বাউশ, সাহস, গলদা চিংড়ি ও রূপচাঁদাসহ হরেক রকম মাছ পাওয়া যায়। মেলায় বিক্রি হয় কোটি টাকার মাছ।
মাছ বিক্রেতারা নানা সুর ধরে ডেকে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেউ কেউ বড় আকৃতির মাছ উপরে তুলে ধরে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এটি এক সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মেলা হলেও সময়ের সাথে সাথে এখন সার্বজনীন উৎসবে রূপ নেয়।
স্থানীয়দের মধ্যে মিল্টন রায়, শুরুতে মেলাটি ক্ষুদ্র পরিসরে অনুষ্ঠিত হতো । এখন এটি উৎসবে পরিণত হয়ে তিন দিন হয়। এটি এক সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মেলা হলেও বর্তমানে এ মেলাটি সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। এখানে শুধু মাছ নয়, বস্ত্র, হস্ত, চারু-কারু, প্রসাধনী, ফার্নিচার, খেলনা, তৈজসপত্র, মিষ্টি ও কুটির শিল্পের নানা পণ্যও পাওয়া যায়।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রদিপ রায় জানান, মেলাকে ঘিরে আশপাশের মানুষ ছাড়াও দূর দূরান্ত থেকে বহু লোকের সমাগম ঘটে। যার ফলে এখানে সকল ধর্মের লোকজন নিজেদের ধর্মের ব্যবধান ভুলে গিয়ে এক মহা মিলন মেলায় পরিণত হয়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়।
এলাকাজুড়ে এ মেলা স্থানীয়দের জন্য একটি উৎসবের আমেজ। একে অপরের বাড়িতে বেড়ানো আর খোঁজ-খবরের মধ্যে দিয়ে চলে কুশল বিনিময়। আর দেখা মেলে সম্প্রীতির এক মেলবন্ধন।
কুকুর খুবই সামাজিক প্রাণী। তাদের মধ্যে পরিবার এবং গোষ্ঠীর প্রতি এক ধরনের দায়িত্ববোধ থাকে। অনেক মানুষ কুকুরের কৃতজ্ঞতাবোধ এবং পাহারা দেওয়ার দক্ষতার কারণে নিজেদের পরিবারের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করে। কুকুরও প্রভুকে তার গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে দেখে এবং সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে।
তবে সব প্রাণীদের ভাগ্য একরকম হয় না। একদিকে যেমন কিছু কুকুরের সৌভাগ্য হয় মনিবের পরিবারের সদস্য হয়ে ভালোবাসা লাভের। তেমন অনেক দেশী প্রাণীর ঠাঁই হয় রাস্তায়। নির্দিষ্ট মালিকবিহীন এই কুকুরগুলো বেওয়ারিশভাবে ঘুরে বেড়ায় রাস্তায়। সামান্য সহানুভূতিতে তাদের চোখে স্বভাববশত ফুটে ওঠে প্রভুভক্তি। তবে মানুষের মানবিক দিকই তো তাকে সৃষ্টির সেরা জীব বানায়। উদারতা থেকেই আশ্রয়হীন এই কুকুরদের জন্যই বিচ্ছিন্ন থাকার জায়গা দেখা গিয়েছে।
কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় অনেকগুলো বেওয়ারিশ কুকুর বাচ্চা প্রসব করেছে। শীতের রাতে আশ্রয়হীন এসব কুকুরের অনেক কষ্ট। এটি উপলব্ধি করে তাদের জন্য বানানো হয়েছে ঘর। ঘরের ভেতরে বিছালী বিছিয়ে রাখা হয়েছে। রয়েছে পাত্রে কুকুরের জন্য পানি ও খাবার। ঘরের সামনে লিখে রাখা, ‘অরণ্যচারী মানুষের প্রথম বন্ধু কুকুর। বন্ধুর যত্ন নিন। তাকে ভালোভাবে থাকতে দিন।’
কুকুরকে মানুষের সবচেয়ে সাহায্যকারী বন্ধু প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বব্যাপী কুকুরদের আমরণ প্রভুভক্তির বিভিন্ন নজিরও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে। মানুষের থেকে সামান্য সাহায্য পেলেও তাদের মধ্যে কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকটভাবে লক্ষ্য করা যায়। প্রভুর আদর, খাবার এবং আশ্রয় কুকুরের মনে কৃতজ্ঞতার অনুভূতি জাগায়। এই ব্যাপারগুলো এই শ্রেণির প্রাণীদের আরও বেশি প্রভুভক্ত করে তোলে।
এই অনুভূতি উপলব্ধি করে কুষ্টিয়া শহরের আমলাপাড়া, এনএস রোড, নারিকেলতলা এলাকা ও চর থানাপাড়া এলাকায় কুকুরের জন্য চারটি ঘর স্থাপন করা হয়েছে। ‘স্বপ্ন প্রয়াস যুব সংস্থা’ নামে একটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব ঘর বানানো হয়েছে। গত বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে আমলাপাড়া বড় ড্রেনের সামনে কুকুরের জন্য বানানো ঘরের উদ্বোধন করা হয়।
উদ্যোক্তারা বলেন, রাত-বিরাতে শহরে ঘুরতে ফিরতে দেখা যায় যে কুকুরেরা এদিক–সেদিক ঘেউ ঘেউ করে। শহরের স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মন্দির, বাসাবাড়ি—সবকিছুই এখন তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। ফলে কারও আঙিনায় কুকুর ঢুকতে পারে না। শীতের রাতে বাচ্চাগুলোর খুব কষ্ট হয়। এ চিন্তা করেই রাত পাহারা দেওয়া বন্ধু কুকুরের জন্য আশ্রয় স্থাপন করা হয়েছে কয়েকটি জায়গায়।
আক্তার হোসেন বলেন, আমি নিজেও প্রাণীপ্রেমী। কুকুরের ঘর বসানোর সময় পাশের দোকান থেকে পাউরুটি কিনে এনে টুকরো টুকরো করে তা কুকুরকে খেতে দেন।
তিনি বলেন, হাউজিং এলাকায় আমার বাসা এবং ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। ‘গত তিন-চার বছর ধরে একদল কুকুর আমাকে দেখলেই ছুটে আসে। তাদের সাধ্যমতো খাবার দিই। এবারই দেখলাম কেউ কুকুরের জন্য আবাসনের চিন্তা করল। বিশেষ করে স্বপ্ন প্রয়াস যুব সংস্থা এই তীব্র শীতে কুকুর এবং বাচ্চাদের জন্য কাঠের ঘর নির্মাণ করলো এটি খুব ভালো উদ্যোগ। কুকুরকে নিয়ে এভাবে আসলে কেউ এভাবে চিন্তা করি না।’ এভাবেই অনেকেই এগিয়ে এলে সমাজ পরিবেশ এবং প্রকৃতি বদলে যাবে।
এ সময় কথা হয় জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কুষ্টিয়ার সভাপতি পশুপ্রেমী শাহাবুদ্দিন মিলনের সঙ্গে।
তিনি বলেন, এখানে থাকা একটি কুকুরের পাঁচটি বাচ্চা হয়েছে। শীতের রাতে বাচ্চাগুলো খুব কষ্ট করে। একটি দোকানের পিছনে রাখা বালুর স্তূপে রাতে ঘুমায়। কুকুরের জন্য ঘর এ শহরে নতুন সংযোজন।
সাংবাদিক এসএম জামাল বলেন, প্রাচীনকাল থেকে কুকুর এবং মানুষের সম্পর্ক নিবিড়ভাবে গড়ে উঠেছে। মানুষ যখন কুকুরকে গৃহপালিত করতে শুরু করে, তখন থেকেই কুকুর মানুষকে সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করতে থাকে। এই দীর্ঘ সম্পর্ক কুকুরের মধ্যে প্রভুভক্তির একটি স্বভাব তৈরি করেছে।
কুকুরের প্রসব সময়কে মনে করে ঘর স্থাপন করা হয়েছে। এখন কুকুরের বাচ্চা হচ্ছে। বাচ্চাগুলো যাতে বেঁচে থাকে, সে জন্য শহরের পথে পথে স্থাপন করা হয়েছে এসব আশ্রয় ঘর।
সংগঠনের সভাপতি সাদিক হাসান রহিদ বলেন, ‘আমরা শীতে কুঁকড়ে যাই, নানাভাবে শীত নিবারণ করি। কিন্তু কুকুরগুলোর তো ঘর নেই। কুকুর আমাদের পরম বন্ধু, বন্ধুর জন্য কিছু করা উচিত। সেই চিন্তা থেকে ঘরগুলো করা। সুযোগ থাকলে কেউ কিছু খাবার ও পানি রেখে আসতে পারেন ঘরে অথবা নজর রাখতে পারেন আশ্রয়গুলোর।’ আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো চারটি ঘর বিভিন্ন এলাকায় স্থাপন করেছি। সহযোগিতা পেলে শহরের সর্বত্র মোড়ে মোড়ে কুকুরের জন্য আশ্রয় এ ঘর স্থাপন করা হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পাখি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে বাল্ড বা টাক ঈগলকে নির্বাচন করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বড়দিন উপলক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিবিসির প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। এর আগে ১৭৮২ সালে মার্কিন নথিতে জাতীয় পাখি হিসেবে ঈগল নথিভুক্ত ছিল। তখন দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রের সীলে জাতীয় পাখি হিসেবে এই পাখির প্রতীক ব্যবহার করা হতো। তবে একে এর আগে কখনো ঈগলকে মনোনীত করা হয়নি। গত সপ্তাহে কংগ্রেস বিলটি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তার স্বাক্ষর করার পর বিলটি পাশ হয়।
ন্যাশনাল বার্ড ইনিশিয়েটিভ ফর দ্য ন্যাশনাল ঈগল সেন্টারের কো-চেয়ার জ্যাক ডেভিস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রায় ২৫০ বছর ধরে আমরা সাদা-কালো-হলুদ পালকের ঈগলকে জাতীয় পাখি বলে ডাকতাম। কিন্তু বাল্ড বা টাক ঈগল পাখি কখনোই জাতীয় পাখি হিসেবে নথিভুক্ত ছিল না, যা এখন সরকারিভাবে শিরোনামপ্রাপ্ত হলো।’
বেশিরভাগ আমেরিকান ঈগলের সিল ব্যবহার করেন। সেখানে একটি পতাকাযুক্ত ঢাল রয়েছে। এর একটি ট্যালনে একটি জলপাই গাছের শাখা রয়েছে এবং অন্যটিতে তীর। তবে বাইডেনের এই সিদ্ধান্ত সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
ঈগলের জাতীয় মর্যাদা সম্পর্কে সবাই একমত নয়। প্রতিষ্ঠাতা ফাদার বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন এই প্রাণীকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বাছাইয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি ‘নেতিবাচক নীতিবান পাখি’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
অন্যদিকে কংগ্রেসের সবাই ফ্রাঙ্কলিনের বিরোধী মতামত জানিয়েছেন।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ ভেটেরান অ্যাফেয়ার্স অনুসারে, বিশ্বব্যাপী অন্যান্য ঈগলের থেকে বাল্ড ঈগলকে অন্যভাবে দেখা হয়। প্রজন্মের জন্য শক্তি, সাহস, স্বাধীনতা এবং অমরত্বের প্রতীক হিসাবে দেখা হয় এই ঈগল। এই ঈগল শুধুমাত্র উত্তর আমেরিকার আদিবাসী ছিল।
বাল্ড বা টাক ঈগলকে জাতীয় পাখি হিসাবে মনোনীত করা আইনটি মিনেসোটার আইন প্রণেতাদের নেতৃত্বে ছিল। সিনেটর অ্যামি ক্লোবুচার দেশে বৃহত্তম টাক ঈগল জনসংখ্যার একটি হিসাবে বর্ণনা করা হয় সেখানে। ১৯৪০ সালের জাতীয় প্রতীক আইনের অধীনে নেওয়ার পর এই প্রাণীটিকে বিক্রি বা শিকার করা অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
বাল্ড বা টাক পাখি একসময় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে ছিল। ২০০৯ সাল থেকে জনসংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।