সন্তানের নামকরণ দ্বন্দ্বে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত!
সন্তানের নামকরণ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর তর্কের ঘটনা নতুন কিছু নয়। তর্ক হলেও সেটার সমাধান কিছু সময়ের ব্যাপার। কিন্তু এর সমাধানে দীর্ঘ তিন বছর নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের পরও যখন কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি তখন সাহায্যের জন্য আদালতে উপস্থিত হন। শুধু তাই নয় এক পর্যায়ে তারা বিবাহবিচ্ছেদেরও সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনাটি অদ্ভুদ এবং এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেছে কি না তা নিয়ে কথা উঠতেই পারে। তবে এবার সেই কথার ইতি টানতে হবে!
সন্তানের নামকরণ নিয়ে তর্ক, সেটার সমাধানে আদালতের দ্বারস্ত হওয়া এবং শেষ পর্যন্ত বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত- এর পুরো দৃশ্যই চিত্রায়িত হয়েছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের এক দম্পতি তাদের ছেলের নামকরণ নিয়ে তিন বছর লড়াইয়ের পর আদালতের শরণাপন্ন হন। তাদের মধ্যে লড়াইটি এতোটাই খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে এক পর্যায়ে তারা বিবাহবিচ্ছেদ চাইছিলো।
সন্তান জন্ম দেওয়া ওই নারীর নাম প্রকাশ না করে ঘটনাটির বিস্তারিত তুলে ধরে বিবিসি জানায়, ২০২১ সালে ওই নারী একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছিল। এরপর কয়েক সপ্তাহের জন্য সে সন্তানসহ বাবা-মায়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। সন্তান জন্মের পর বিশ্রাম এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য স্ত্রীরা সাধারণত তাদের বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়- ভারতে এটা সাধারণ ঘটনা।
এরপর সন্তান ও স্ত্রীকে ওই বাড়ি থেকে আনতে স্বামীর যাওয়ার কথা। কিন্তু যখন স্বামীর বাছাই করা নাম নিয়ে স্ত্রী প্রশ্ন তোলে তখন স্বামী তার প্রতি বিরক্ত হয়ে তাকে আনতে যেতে অস্বীকৃতি জানান।
হুনসুরের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সৌম্য এমএন জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে এ নিয়ে ঝামেলা মাস থেকে বছরে পরিণত হয়। শেষ পর্যন্ত এটা এমন এক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায় তারা বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন।
ওই নারীর আইনজীবী এম আর হরিশ বিবিসি হিন্দিকে বলেছেন, এ নিয়ে তিনি স্থানীয় একটি আদালতে মামলা করেছেন। তিনি বিচ্ছেদের পর সন্তানের দেখাশোনা ও নিজের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অর্থ চেয়েছেন।
আদালতে বিচারকরা তাদেরকে এটির সমাধান নিজের মধ্যে কথা বলে করে নেওয়ার কথা জানান। কিন্তু তারা এতে রাজি হয়নি বরং আদালতকেই একটি নাম বেছে দেওয়ার জন্য বলেছেন।
পরবর্তীতে আদালত ছেলে শিশুটির নাম আর্যাবর্ধন রেখে রায় ঘোষণা করেন। আর্যাবর্ধন অর্থ "আভিজাত্য" বলে জানায় আদালত।
তারপর দম্পতি মালা বিনিময় করেন এবং পুনরায় একসঙ্গে তাদের সংসার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।