মানুয়া মানুয়া নাই রে..

  • রুদ্র হক, বার্তা ২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: শরীফ খিয়াম আহমেদ ঈয়ন

ছবি: শরীফ খিয়াম আহমেদ ঈয়ন

১১ বছর পর বড়পর্দায় ফিরলেন নন্দিত নির্মাতা নুরুল আলম আতিক। আজ (১০ ডিসেম্বর) মুক্তি পেল তার নির্মিত দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র লাল মোরগের ঝুঁটি। এর আগে ২০১০ সালে মুক্তি পায় তার নির্মিত চলচ্চিত্র ‘ডুবসাঁতার’। যদিও ছোটপর্দায় এ নির্মাতার বেশকিছু নির্মাণ নন্দনে দেশিয় চলচ্চিত্রের নির্মাণশৈলীকেও করেছে হার মানিয়েছে।

প্রশংসিত এ নির্মাতার চলচ্চিত্রের জন্য তাই সিনেসংশ্লিষ্টরা এমনকি দর্শকরাও মুখিয়ে ছিলেন। কিন্তু নানা সংকটের ফেরে পড়ে চলচ্চিত্রে ফেরা হয়নি তার। অবশেষে বড়পর্দায় ফিরলেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ নিয়ে।

বিজ্ঞাপন

১৯৭১ সালে সৈয়দপুর বিমানবন্দর যেসকল শ্রমিকের রক্ত ঘামে তৈরি হয়েছিল তারা ছিলেন পাক-হানাদার বাহিনীর নির্যাতনে জর্জরিত। বিহারি অধ্যুষিত ওই অঞ্চলে বিহারিদের নিপীড়ণ ও পাক বাহিনীর নির্যাতনের চিত্র ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালীন বাস্তবতায়।

একটি শান্ত জনপদে হঠাৎ পাক বাহিনীর আগমন, তাদের প্রশ্রয়ে, নির্দেশে বিহারীরা মানুষ মারছে। অন্যদিকে মাতাল এক সাঁওতাল ডোমের হৃদয় ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। মদ্যপ সেই চরিত্রের মুখ থেকে আতিক বারবার শুনিয়েছেন একটি সংলাপ-“মানুয়া মানুয়া নাইরে..।”

মাতাল চরিত্রটিতে অভিনয় করেছেন আশীষ খন্দকার

মানুষের মনুষত্ব হারিয়ে ফেলার সত্য-যা এখনও প্রাসঙ্গিক হয়ে ধরা দিবে দর্শকের মনের অন্দরে। কালো মেঘে ঢেকে যাওয়া আকাশের পূর্ণিমায় উদ্ভাসিত হওয়াসহ বেশকিছু প্রতীকী দৃশ্য ও সংলাপ মুগ্ধ করবে সাদা কালো রঙের এ চলচ্চিত্রে। অভিনয়শিল্পীরাও দিয়েছেন তাদের সেরাটুকু।

মুক্তির আগে ৯ ডিসেম্বর চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সুধীজন ও গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ। চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনের পাশাপাশি এটি নির্মাণে নানা ভূমিকা রাখা ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদান করেন নির্মাতা নুরুল আলম আতিক। 


বড়পর্দায় দীর্ঘদিন পর প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে আতিক বলেন, “দীর্ঘদিন পর চলচ্চিত্র মুক্তির মধ্য দিয়ে শ্বাস নেয়ার মতো একটা সুযোগ ঘটলো। এতদিন একটা দমবন্ধকর অনুভূতির ভিতর দিয়ে যাচ্ছিলাম। আজ মনে হয় একটু দম নিতে পারছি। সবাইকে চলচ্চিত্রটি সিনেপ্লেক্সে গিয়ে দেখার আমন্ত্রণ জানাই। আমি নিশ্চিত একটি নতুন অভিজ্ঞতা হবে। সকলকে আমন্ত্রণ।”

চলচ্চিত্রটি দেশের যে ৭টি হলে দেখা যাবে, এরমধ্যে রয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা সিটি, সীমান্ত সম্ভার, মিরপুর সনি ও মহাখালী এসকেএস টাওয়ার, যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার, নারায়ণগঞ্জের সিনেস্কোপ ও খুলনার লিবার্টি সিনেপ্লেক্স।

প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, “নারীরা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে অবলা ছিল, তা নয়। তারা যে প্রতিশোধ নিতে পারেন, ছবির শেষ দৃশ্যে তা আমরা দেখেছি। এমন অনেক ঘটনাতেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিজয়ে রূপ নিয়েছে। ছবিটির প্রথমদিক আমি দেখতে পারিনি। তাই ভাবছি, হলে গিয়ে টিকিট কেটে পুরোটা দেখবো।”


মাতিয়া বানু শুকুর প্রযোজনায় পাণ্ডুলিপি কারখানার ব্যানারে নির্মিত ছবিটি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকারি অনুদান পায়। ২০১৬ সালে শুটিং শুরু হয়েছিল চলচ্চিত্রটির।

বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন লায়লা হাসান, আহমেদ রুবেল, শিল্পী সরকার অপু, আশীষ খন্দকার, ইলোরা গওহর, জয় রাজ, অশোক ব্যাপারী, আশনা হাবিব ভাবনা, দিলরুবা দোয়েল, জ্যোতিকা জ্যোতি, দীপক সুমন, জিনাত সানু স্বাগতা প্রমুখ।