তাপপ্রবাহে ফেনীতে বেড়েছে চার্জার ফ্যানের দাম

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

চলমান তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। একদিকে, দাবদাহ, অন্যদিকে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ফেনীর জনজীবনে নেমেছে চরম ভোগান্তি।

কিছুটা প্রশান্তি পেতে চার্জার ফ্যান কিনতে সাধারণ মানুষ ভিড় করছেন ইলেকট্রনিকস পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সব কোম্পানির চার্জার ফ্যানের দামও।

বিজ্ঞাপন

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

ফেনী শহরের বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, প্রচণ্ড গরম থেকে বাঁচতে সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রেতারা চার্জার ফ্যান ও সেইসঙ্গে সিলিং ফ্যান কিনতে দোকানগুলিতে ভিড় করছেন।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, চার্জার ফ্যানের দাম গত বছরের তুলনায় আকারভেদে বেড়েছে ৩শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। সেই সঙ্গে নষ্ট হওয়া ফ্যান মেরামতেও অনেকে আবার ছুটে আসছেন পাড়া-মহল্লার ইলেকট্রিকের দোকানে।

অন্যদিকে, ক্রেতাদের অভিযোগ, ইচ্ছেমতো অতিরিক্ত দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা।

শহরের স্টেশন রোডে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের দোকানে চার্জার ফ্যান কিনতে আসা আব্দুল গফুর বলেন, গত কয়েকদিন অতিরিক্ত গরমের সঙ্গে ৭-৮ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। ফ্যানের দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। তারপরও পরিবারে শিশু ও বয়োবৃদ্ধের কষ্টের কথা চিন্তা করে ফ্যান কিনতে বাধ্য হচ্ছি।

তীব্র দাবদাহে বেড়েছে ফ্যানের দাম, ছবি-বার্তা২৪.কম

শহীদুল ইসলাম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, আমার দুই সন্তানের সামনে পরীক্ষা। এ অবস্থায় গরম আর লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো পড়ালেখা হচ্ছে না। সেজন্যই চার্জার লাইট ও ফ্যান কিনতে এসেছি। অনেকদিন পর কিনতে এলেও এবার দাম কিছুটা বাড়তি মনে হচ্ছে।

লতা মণ্ডল নামে আরেক ক্রেতা বলেন, সবদিক থেকে আমরা সাধারণ মানুষ একটি অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছি। এত গরমে বাসায় থাকার উপায় নেই। ১০ মাস আগে যে ফ্যান কিনেছি, সেটা এখন আরো ৪শ টাকা বেশি হাঁকাচ্ছেন দোকানদাররা। মনে হচ্ছে, দোকানিরা সুযোগ বুঝেই ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছেন। তারপরও নিরূপায় হয়ে কিনতে হচ্ছে।

শহরের নাজির রোড এলাকার বাসিন্দা মতিন মিয়া নামে এক রিকশাচালক বলেন, আমাদের মতো খেটেখাওয়া মানুষজন তো বাড়তি টাকা দিয়ে ফ্যান-লাইট ব্যবহার করতে পারবে না। কিছুদিন ধরে মোমবাতি আর হাতপাখাই ভরসা আমাদের।

ফেনী গ্র্যান্ড হক টাওয়ারের রিফাত ইলেকট্রিকের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ রিফাত বলেন, রমজান মাস থেকে বৈদ্যুতিক পাখা, চার্জার ফ্যান, আইপিএসের বিক্রি বেড়েছে। দাম কিছুটা বাড়লেও অন্যান্য পণ্যের বাজার দরের চেয়ে তুলনামূলক কম বেড়েছে। এছাড়া কোম্পানি দাম বাড়ালে আমাদের পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের করার তেমন কিছু থাকে না।

হীরা ইলেকট্রিকের স্বত্বাধিকারী নুরুল করিম হীরা বলেন, চার্জার ফ্যানের দাম কিছুটা বাড়লেও সিলিং ফ্যান আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। নন-ব্র্যান্ড সিলিং ফ্যান ১ হাজার ৫শ টাকা থেকে শুরু করে এবং ব্র্যান্ডের সিলিং ফ্যান ২ হাজার ৮শ টাকা থেকে বেশ দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্যাডেস্টাল ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা থেকে ৮ টাকা বেশি দামে।

রংধনু ইলেকট্রিকের স্বত্বাধিকারী আমজাদ হোসেন বলেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে গত কিছুদিন ধরে চার্জার ফ্যান বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে এটি মৌসুমী ব্যবসা। শুধুমাত্র গরম এলেই এ ধরনের বেচাকেনা হয়। ১২ ইঞ্চি চার্জার ফ্যান ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫শ টাকা, ১৪ ও ১৮ ইঞ্চির ফ্যান ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, চলমান দাবদাহ আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

ফেনী আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চমান পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান বলেছেন, চট্টগ্রাম বিভাগে নিম্ন থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে। ফেনীতে গড়ে ৩৪ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রতিদিন ওঠানামা করছে। চলমান তাপপ্রবাহ মে মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।