চলন্ত ট্রেনে জন্ম, নাম তার ‘লালমনি’

  • নিয়াজ আহমেদ সিপন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,লালমনিরহাট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মা বাবার সঙ্গে শিশু লালমনি

মা বাবার সঙ্গে শিশু লালমনি

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তনগর ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে এক শিশুর জন্ম হয়েছে। শিশুটির নাম রাখা হয়েছে ‘লালমনি’।

শনিবার ( ৩০ নভেম্বর) সকালে প্রসূতি মা ও ফুটফুটে শিশুটি বাড়িতে এলে গ্রামের মানুষ তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়।

বিজ্ঞাপন

অভাবের তাড়নায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের ছকমাল মিয়া-স্ত্রী নবিয়া বেগমকে নিয়ে প্রায় ২ বছর আগে ঢাকায় যান। স্ত্রী নবিয়া নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। স্বামী দিনমজুরের কাজ পেয়ে একইসঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। ঢাকার ক্লিনিকে সন্তানসম্ভবা স্ত্রী’র অপারেশন করার মতো স্বামীর সামর্থ্য নেই। তাই সিদ্ধান্ত হয় গ্রামে গিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করবেন ‍স্ত্রীকে।

রোববার স্বামী-স্ত্রী দুজনই টিকিট কেটে লালমনিরহাটগামী আন্তনগর ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনেই নবিয়ার প্রসব ব্যাথা ওঠে। কান্নাকাটি করতে থাকেন, তখন ট্রেন পাবনার ঈশ্বরদী এলাকায়। গভীর রাতে আশপাশে ট্রেন থামার মতো কোনো রেলস্টেশন ছিল না। এক পর্যায়ে ভোর ৪টার দিকে একটি ফুটফুটে শিশুর জন্ম হয়।

সোমবার সকালে বগুড়া স্টেশনে আন্তনগর ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি পৌঁছায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সন্তানসহ প্রসূতিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। টানা ৫ দিন চিকিৎসার পর শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে গ্রামের বাড়িতে এলে বাড়ি লোকজন প্রসূতি মা ও সন্তানকে বরণ করে নেওয়া হয়। সেখানে শিশুটির নাম রাখা হয় ইব্রাহীম হোসেন লালমনি।

শিশুটির বাবা নির্মাণ শ্রমিক ছকমল মিয়া বলেন, আমি আমার সন্তানকে শিক্ষিত হয়ে রেলওয়েতে চাকুরি করতে বলবো। স্টেশনের মানুষ না এগিয়ে এলে আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারতাম না।

চলবলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু বলেন, বিষয়টি জানার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রসূতি ও তার সন্তানকে দেখেছি। তারা এখন অনেক ভালো আছেন।  ৯৯৯ নম্বরে ফোন এবং রেল কর্মকর্তাদের জন্য মা ও শিশুর জীবন বেঁচে গেল।