বাউল সাধক জালাল খাঁ’র মৃত্যুবার্ষিকী আজ

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, নেত্রকোনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জালাল উদ্দিন খাঁ। ছবি: সংগৃহীত

জালাল উদ্দিন খাঁ। ছবি: সংগৃহীত

অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি ও আত্মসন্ধানী বাউল সাধক জালাল উদ্দিন খাঁ’র ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার (৩১ জুলাই)।

১৯৭২ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন মরমি এই বাউল সাধক। তার পুরো নাম জালাল উদ্দিন খাঁ হলেও সর্বত্র জালাল খাঁ নামেই পরিচিত তিনি। বিভিন্ন তত্ত্বের অসংখ্য গান রচনা করে দেশ-বিদেশে খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

১৯৮৪ সালের ২৫ এপ্রিল নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার আসদহাটি গ্রামে মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন জালাল খাঁ। একই উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের সিংহেরগাঁও গ্রামের হাসমত তালুকদারের মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি। তারপর সেখানেই স্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন।

মূলত স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই সংসারত্যাগী জীবনযাপন শুরু করেন জালাল। নিজের মধ্যে স্রষ্টাকে খুঁজতে গিয়ে বিভিন্ন পীর-ফকিরের সান্নিধ্য লাভ করেন তিনি। এভাবেই শুরু হয় জালাল খাঁর বাউল সাধনা। আর ওই সময় থেকে গান রচনাও তার শুরু। লিখতে থাকেন একের পর এক তত্ত্বভিত্তিক গান।

জালাল খাঁ’র কয়েক শতাধিক গান নিয়ে দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ যতীন সরকার ‘জালাল গীতিকা সমগ্র’ নামে একটি সম্পাদনা গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া ‘বিশ্ব রহস্য’ নামেও জালাল খাঁ’র আরও একটি প্রবন্ধগ্রন্থ রয়েছে।

এদিকে এলাকাবাসী কেন্দুয়া উপজেলায় জালাল খাঁ’র নামে গবেষণা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের দাবি করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তারা বলছেন, জালাল খাঁ ও তার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশে গবেষণা হচ্ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী এলাকার নতুন প্রজন্ম কিছুই জানে না। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে জালাল খাঁ’কে তুলে ধরতে হলে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা খুবই জরুরি। তাই এ বিষয়ে অচিরে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জালাল খাঁ’র পরিবারসহ এলাকাবাসী সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

বাউল সাধক জালাল খাঁ’র নাতি মোশতাক আহমেদ খান বলেন, ‘পরিবারের উদ্যোগে প্রতিবছরই আমরা জালাল খাঁ’র মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে আসছি। জালাল খাঁ’র নামে একটা গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার স্বপ্ন থাকলেও পরিবারের পক্ষে তা সম্ভব নয়, সরকার চাইলেই এটা বাস্তবায়ন সম্ভব।’

স্থানীয় আশুজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বাউল স্রষ্টা জালাল খাঁকে নিয়ে আজ দেশের বাইরেও গবেষণা হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে এখনো কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। এটা খুবই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল-ইমরান রুহুল ইসলাম জানান, জালাল একাডেমি বা তার নামে গবেষণা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের বিষয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।