রামপালে বিএনপি নেতা হত্যাকাণ্ডে মামলা হয়নি, বিকালে দাফন
বাগেরহাটের রামপালে বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খাজা মইনউদ্দিন আখতার নিহতের ঘটনায় শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তার মরদেহ বামনদহর গ্রামে নিজ বাড়িতে রাখা হয়েছে, বিকালে দাফন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় স্থানীয় ভরসাপুর বাজারে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ককটেল বোমা হামলায় নিহত হন তিনি। শুক্রবার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত হয়। বাদ আছর সোনাতুনিয়া মাদরাসা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
নিহতের স্ত্রী চম্পামালা বেগম জানান, তার স্বামী বিএনপি নেতা খাজা মঈনুদ্দিন আখতারের উপর বোমা হামলার কয়েক মিনিট আগেই তার সাথে ভরসাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কথা হয়। তাকে বাজার করার কথা বলে আমি ভ্যানযোগে ফয়লা এলাকায় চলে আসি। এর কিছুক্ষণ পরে ফয়লায় বসে শুনি আমার স্বামীর উপরে কারা হামলা চালিয়েছে।
তিনি আরও জানান, এখন তিনি রাজনীতিতে অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। সব ধরনের বিরোধ থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন। তিনি উজলকুড় ইউনিয়ন পরিষদের তিনবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বাবা খাজা সোবাহান আলীও এখানকার চেয়ারম্যান ছিলেন। সামনে হজে যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিয়েছিলেন বলেও জানালেন তার স্ত্রী। তাকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয়রা বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ভরসাপুর বাজার এলাকার কমল মার্কেটের সামনে হঠাৎ বিস্ফোরণের একটি বিকট শব্দ শুনতে পাই। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম কোন দোকানে এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে। আমরা ওই শব্দ পেয়ে ছুটে এসে দেখি কমলা মার্কেট এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর ধোঁয়া কমলে দেখি সাবেক চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার উপরে উপুড় হয়ে পড়ে আছেন। সবাই তাকে রাস্তা থেকে তুলে গাড়িতে করে খুলনায় পাঠিয়ে দেই।’
স্থানীয়রা আরও বলেন, ‘তিনি সাধারণ মানুষের বিপদে আপদে সবার পাশে ছুটে যেতেন। তার এই মৃত্যুতে আমরা বিস্মিত। তার এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায়না বলেও জানান তারা। তার হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাই।’
এদিকে, রামপাল উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজুলকুড় ইউনিয়নের তিন বারের সাবেক চেয়ারম্যান আখতার হত্যার ঘটনায় শোক ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ জানিয়েছে বাগেরহাট জেলা বিএনপিও।
হত্যাকারীদের চিহ্নিত ও আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিহত আখতার বাগেরহাটের অন্যতম একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তার এমন মৃত্যু আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। বিএনপির এই নেতাকে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আখতার হত্যাকাণ্ড নিয়ে মোংলা-রামপাল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আলম বলেন, এখনও মামলা দায়ের হয়নি। তবে কী কারণে, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা খুঁজে বের করতে চারিদিকে পুলিশ কঠোর তৎপরতা চালাচ্ছে।