ট্রান্সমিটার সংযোজিত ‘বিরল কচ্ছপ’ বিক্রিকালে উদ্ধার
স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার স্থাপনকৃত একটি বাটাগুর বাস্কা (বিরল প্রজাতির কচ্ছপ) জেলের জালে আটকে পড়ার তা বিক্রির সময় উদ্ধার করা হয়েছে। মোংলার মিঠাখালী এলাকার পুটিমারী খালে এক জেলের জালে আটকে পড়া কচ্ছপটি সোমবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের প্রধান মাছ বাজারে বিক্রির জন্য নেয়া হলে বাটাগুর বাস্কা প্রজেক্টর স্টেশন ম্যানেজার আ: রব ও বনবিভাগের সদস্যরা সেটিকে উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া ৪০ বছর বয়সের এ বাটাগুর বাস্কার ওজন সাড়ে ১২ কেজি।
বনবিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ইনচার্জ মো: আজাদ কবির ও বাটাগুর বাস্কা প্রজেক্ট’র ষ্টেশন ম্যানেজার আ: রব জানান, মিঠাখালীর পুটিমারী খালে সোমবার সকালে বোবা এক জেলে মাছ ধরছিল। এ সময় ওই জেলের জালে বেশ বড় আকৃতির এ কচ্ছপটি (বাটাগুর বাস্কা) ধরা পড়ে। ওই জেলে কচ্ছপটিকে মেরে ফেলার চেষ্টাকালে অপর জেলে বোরহান তার কাছ থেকে কচ্ছপটি নিয়ে নেয়। পরে বোরহান দুপুরে মিঠাখালী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের কাছে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। ওইদিন দুপুরে আবুল হোসেন কচ্ছপটি নিয়ে মোংলা পৌর শহরের প্রধান মাছ বাজারে বিক্রি করতে আসেন। কচ্ছপটির পিঠের উপর স্যাটেলাইট জিপিএস ট্রাকিং ট্রান্সমিটার বসানো দেখে সেটি কেউ না কিনে তারা বনবিভাগকে খবর দেয়।
পরে খবর পেয়ে বনবিভাগের সদস্য ও বাটাগুর বাস্কা’র প্রজেক্ট ম্যানেজর আ: রব বিক্রি করতে আসা আবুল হোসেনকে ১ হাজার টাকা দিয়ে কচ্ছপটি ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
আ: রব বলেন, ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর এ কচ্ছপটি বঙ্গোপসাগরের মোহনার কালিরচরের সুন্দরবনের ৪৩ নম্বর কম্পাটমেন্ট এলাকায় ছাড়া হয়েছিল। স্যাটেলাইট জিপিএস ট্রাকিং ট্রান্সমিটার সিস্টেম সংযোজিত এ বাটাগুর বাস্কা ছাড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল এর বিচরণক্ষেত্র, স্বভাব, পানির উপরে রোদ পোহানো ও পানির নিচের অবস্থান নির্ণয়সহ প্রজননক্ষেত্র সম্পর্কে গবেষণার তথ্য সংগ্রহ। এ পর্যন্ত দুই দফায় এমন ৫টি কচ্ছপ সাগর-সুন্দরবনে ছাড়া হয়েছে। আর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা জু, টিএসএ আমেরিকা ও বাংলাদেশ বনবিভাগ। পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে এ প্রজেক্টের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এছাড়া স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়ে তাকে দেশ-বিদেশের কন্ট্রোল রুম থেকেই।
তিনি আরো বলেন, এ প্রজেক্টের মুল উদ্দেশ্য হলো বিরল প্রজাতির বাটাগুর বাস্কা কচ্ছপের প্রজনন বৃদ্ধির মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা।